সন্তান মানুষের জীবনের শ্রেষ্ঠ নিয়ামত। সন্তানহীন দম্পতির হৃদয়ে যে শূন্যতা, তা ভাষায় বর্ণনা করা যায় না। চিকিৎসাবিজ্ঞানের অগ্রগতিতে টেস্ট টিউব বেবি কিংবা সারোগেসির মতো পদ্ধতি যখন তাদের কাছে নতুন আশার আলো হয়ে আসে, তখন প্রশ্ন ওঠে—ইসলামে এর স্থান কোথায়?
উত্তর খুঁজতে গেলে শরিয়তের দলিল ও ফিকহবিদদের অভিমত এক অটল সত্য প্রকাশ করে—কিছু পদ্ধতি রয়েছে স্পষ্টভাবে হারাম, আর কিছু সীমিত আকারে জায়েজ।
সারোগেসির মূল ধারণা হলো অন্য নারীর জরায়ু ভাড়া করে সন্তান জন্ম দেওয়া। স্বামী-স্ত্রীর শুক্রাণু ও ডিম্বাণু ব্যবহার করলেও যদি ভ্রূণ অন্য নারীর গর্ভে প্রতিস্থাপন করা হয়, ইসলামে এর কোনো অনুমতি নেই। এ প্রক্রিয়া হারাম।
কুরআনের ভাষায়, তাদেরকে তাদের আসল পিতার নামে ডাকো। এটাই আল্লাহর কাছে অধিক ন্যায়সংগত। (সূরা আহযাব, ৫)
যখন মাতৃত্ব দুই নারীর মাঝে বিভক্ত হয়—একজন জৈবিক, আরেকজন শারীরিক—তখন শিশুর প্রকৃত পরিচয় মিশে যায়। শরিয়ত যাকে রক্ষা করতে এসেছে, সেই বংশ ও পরিচয়ের পবিত্রতা এখানে বিনষ্ট হয়।
রাসুলুল্লাহ (সা.) কঠোর সতর্কবাণী দিয়েছেন, যে ব্যক্তি তার বংশ অন্য কারও সঙ্গে যুক্ত করে, সে জান্নাত থেকে বঞ্চিত হবে। (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)
সারোগেসি সেই অপরাধের আধুনিক রূপ। ফলে আন্তর্জাতিক ইসলামি ফিকহ একাডেমি (OIC), আল-আজহার বিশ্ববিদ্যালয়, দারুল উলুম দেওবন্দ, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের শীর্ষ আলেমরা সর্বসম্মতভাবে ফতোয়া দিয়েছেন—অন্য নারীর গর্ভাশয় ব্যবহার করে সন্তান জন্ম দেওয়া হারাম।
অন্যদিকে যদি কোনো দম্পতি টেস্ট টিউব পদ্ধতিতে শুধুমাত্র নিজেদের শুক্রাণু ও ডিম্বাণু ব্যবহার করেন এবং স্ত্রী নিজেই গর্ভে ভ্রূণ ধারণ করেন, তবে এটি শরিয়তে অনুমোদিত। অর্থাৎ এ পদ্ধতি জায়েজ।
এখানে কোনো তৃতীয় পক্ষ যুক্ত হয় না, বংশ বা পরিচয় বিভ্রান্ত হয় না। তবে এ প্রক্রিয়া কেবল বৈধ চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে, সর্বোচ্চ সতর্কতার সাথে সম্পন্ন হতে হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।