আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পৃথিবীর প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষেরা আজ ইন্টারনেটের জাদুঘরে প্রবেশের অধিকার পেতে চলেছে। প্রযুক্তির এই নতুন অগ্রযাত্রায় স্টারলিংক, ইলন মাস্কের স্পেসএক্স দ্বারা পরিচালিত প্রকল্প, উচ্চগতির ও কম লেটেন্সির ইন্টারনেট সুবিধা প্রদান করছে। তবুও আগ্রাসী প্রতিযোগিতার ফলস্বরূপ, নতুন স্যাটেলাইট ইন্টারনেট কোম্পানিগুলি উঠে আসছে, যারা স্টারলিংকের সাথে প্রতিযোগিতায় নামছে। তারা এখন শুধু একটি কোম্পানি নয়, বরং একটি নতুন ইন্টারন্যাশনাল ইকোসিস্টেম তৈরি করছে, যা প্রযুক্তির ভবিষ্যৎকে আংশিকভাবে পরিবর্তন করবে।
স্টারলিংকের প্রতিযোগিতা: উচ্চ গতির ইন্টারনেটের নতুন মঞ্চ
স্টারলিংক, একটি অভিনব স্যাটেলাইট ইন্টারনেট প্রোজেক্ট, বর্তমানে বিশ্বের বিস্তৃত এলাকায় ইন্টারনেটের বিপ্লব ঘটাচ্ছে। এর মূল উদ্দেশ্য রয়েছে, ডিজিটাল অ্যালাইনমেন্টের মাধ্যমে প্রত্যন্ত এলাকা এবং কঠিন পরিবেশে ইন্টারনেট সংযোগ স্থাপন করা। গত এক বছরে, এটি অধিকাংশ প্রান্তরশির এলাকায় ১৯৫ Mbps পর্যন্ত গতি প্রদান করছে।
Table of Contents
স্টারলিংক লেটেন্সি কমানোর জন্য নতুন প্রযুক্তির দিকে ঝুঁকেছে, যা নেটওয়ার্ক ব্যবহারকারীদের জন্য স্থিতিশীল এবং দ্রুততর এক্সেস প্রদান করছে। তারা একাধিক স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করছে ברחিয়ায়, যা ইন্টারনেটের গতির উন্নতিতে সাহায্য করছে। তাদের সাথে প্রতিযোগিতায় নামছে ওয়ানওয়েব, একটি যুক্তরাজ্যভিত্তিক কোম্পানি, যা ইতোমধ্যে ৬০০টি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে और একটি নির্ভরযোগ্য নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে।
প্রযুক্তির নতুন দিগন্ত: অ্যামাজনের কুইপার প্রকল্প
অ্যামাজন তাদের Project Kuiper প্রকল্পের আওতায় অত্যাধুনিক স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ শুরু করেছে, যা ৩,০০০ স্যাটেলাইটের মধ্যে দিয়ে বাজারে প্রবেশ করতে চায়। তাদের লক্ষ্য গ্রামীণ অঞ্চলে ইন্টারনেট পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া, যাতে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষদের জীবনমান বাড়ানোর জন্য নেটওয়ার্কের সুযোগ তৈরি হয়। এই প্রযুক্তি তাদের ইন্টারনেট সংযোগের স্থায়িত্ব এবং সুরক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
সাথে সাথে, অ্যামাজনের ইনফ্রাস্ট্রাকচার এবং ডিস্ট্রিবিউশন চেইন স্টারলিংকের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে কাজ করতে পারে। বিশেষ করে, সংগ্রহ করে রাখা এবং সঠিকভাবে বিতরণ করার ক্ষমতা তাদের সুবিধাগুলির মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে দাঁড়াতে পারে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভায়াস্যাট এবং হিউজেসনেট
মার্কিন কোম্পানি ভায়াস্যাট এবং হিউজেসনেট এখনও দীর্ঘদিন ধরে জিওস্টেশনারি স্যাটেলাইট প্রযুক্তিতে নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে আসছে, যা মূলত ৩৬,০০০ কিমি উচ্চতায় কাজ করে। যদিও তাদের লেটেন্সি বেশি, তারা এখনও তাদের বিস্তৃত কাভারেজের জন্য বিখ্যাত। সম্প্রতি, ভায়াস্যাট ইনমারস্যাট অধিগ্রহণ করেছে, ফলে তাদের বৈশ্বিক কাভারেজ আরও শক্তিশালী হচ্ছে।
এছাড়াও ইউরোপীয় ইউনিয়নের আইরিস² প্রকল্প, যা ২০২৭ সালের মধ্যে চালু হওয়ার পরিকল্পনা করছে, একটি মাল্টি-অরবিট সিস্টেম তৈরি করতে যাচ্ছে। এটি স্টারলিংকের উপর নির্ভরতা কমিয়ে নতুন শক্তি কমায়।
ভবিষ্যতের দিগন্ত
বিভিন্ন কোম্পানি জনসাধারণের জন্য অতিন্দ্র দীর্ঘস্থায়ী ইন্টারনেট সমাধানের উপর চাপ সৃষ্টি করছে। স্টারলিংক, ওয়ানওয়েব, অ্যামাজন কুইপার এবং অন্যান্যদের মধ্যে প্রতিযোগিতা, উচ্চগতির ইন্টারনেট সরবরাহের একটি নতুন যুগের সূচনা করবে। যারা বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশগুলিতে ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রসারে আগ্রহী, তারা এই প্রতিযোগিতার ফলস্বরূপ আরো উন্নত সেবা পেতে পারেন।
চলতি বছর ইন্টারনেট যুক্ত করার সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে, যার ফলে নতুন নতুন সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে। প্রযুক্তির এ নতুন অধ্যায় আগামী দিনে মানুষকে আরও যুক্ত করার জন্য একটি কাঠামবদ্ধ পরিবর্তন আনতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টসমূহ
- স্টারলিংকের উচ্চগতির পরিষেবা: ১৯৫ Mbps পর্যন্ত গতি প্রদান করছে।
- ওয়ানওয়েবের সাফল্য: ৬০০ স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে, একটি নির্ভরযোগ্য নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে।
- অ্যামাজনের Project Kuiper: ৩,০০০ পরিষেবা স্যাটেলাইট পরিকল্পনা।
- ভায়াস্যাট ও হিউজেসনেটের দীর্ঘকালীন উপস্থিতি: বিস্তৃত কাভারেজের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় ইন্টারনেট দিচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।