জুমবাংলা ডেস্ক : ঢাকায় আজ আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সমাবেশকে কেন্দ্র করে সাভার উপজেলা ও ধামরাইয়ে তল্লাশি জোরদার করেছে পুলিশ। তল্লাশি চলাকালে আশুলিয়া ও আমিনবাজার থেকে প্রায় শতাধিক ব্যক্তিকে আটক করা হয়েছে।
তবে পুলিশের দাবি, যাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এছাড়া, সন্দেহভাজন হিসেবে জামায়াত ও বিএনপির বেশ কয়েকজন নেতা-কর্মীকে পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়েছে।
এদিকে, দুটি রাজনৈতিক দলের সমাবেশ কর্মসূচি ও পুলিশি তল্লাশির কারণে মহাসড়কে বাস কম থাকায় ভোগান্তিতে পড়েছেন যাত্রীরা। লেগুনা, ইঞ্জিনচালিত রিকশায় করে গন্তব্যের দিকে যাচ্ছেন তারা। তবে ঢাকাগামীদের আমিনবাজারের আগেই এ সকল পরিবহন থেকে নামিয়ে দেওয়ায় ওই স্থান থেকে পায়ে হেঁটেই গন্তব্যে যেতে হচ্ছে। এছাড়া, তল্লাশির সময় অনেকেই বাস থেকে নেমে পায়ে হেঁটে রওনা দিচ্ছেন।
শনিবার (২৮ অক্টোবর) সকাল ৭টার দিকে সাভারের আমিনবাজার ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসাপাতালের সামনে গিয়ে দেখা গেছে, ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ঢাকাগামী লেনে তল্লাশি চৌকি বসিয়েছে সাভার মডেল থানা পুলিশ। ঢাকার উদ্দেশ্য দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী বাস, মাইক্রোবাস ও মোটরসাইকেল থামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। পুলিশ সদস্যদের এসময় তাদের জাতীয় পরিচয়পত্র, অফিসের পরিচয়পত্র, ড্রাইভিং লাইসেন্স পরীক্ষা করতে দেখা যায়।
তল্লাশি চৌকিতে দায়িত্ব পালনকারী পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানান, সাভারে আমিনবাজার, বিরুলিয়া ও আশুলিয়া বাজার এলাকায় তল্লাশি চালাচ্ছে পুলিশ। গতকাল রাতে আশুলিয়া বাজার এলাকার তল্লাশি চৌকিতে একটি বাস থেকে ৪৩ জন জামায়াতের নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়।
ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস ও ট্রাফিক, উত্তর বিভাগ) মো. আব্দুল্লাহিল কাফী বলেন, সাভারের তিনটি স্থানে তল্লাশি কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। রাজধানীতে দুটি রাজনৈতিক দলের সমাবেশকে কেন্দ্র করে কেউ যেন ঢাকায় প্রবেশ করে নাশকতা কিংবা বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে না পারে, সেটি নিশ্চিত করতেই এই তল্লাশি কার্যক্রম চলছে।
আমিনবাজারে তল্লাশি চলাকালে ২০-৩০ জন আটকের বিষয়ে তিনি বলেন, আসলে যাদের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে আমরা তাদেরকে গ্রেপ্তার করছি। আশুলিয়ায় আটকের সংখ্যাটি পরে জানানো হবে। আমিনবাজারে যাদের সন্দেহ হয়েছে তাদের জিজ্ঞেসাবাদের জন্য কিছু সময় আমাদের হেফাজতে রাখা হচ্ছে। বিষয়টিকে এই মুহূর্তে আমরা আটক বলবো না।
এদিকে, বাস থামিয়ে যাত্রীদের জিজ্ঞাসাবাদের মধ্য দিয়ে অযথাই হয়রানি করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন অনেক যাত্রী।
সাভার থেকে ধানমন্ডিতে যাচ্ছিলেন শামিম আহমেদ। তিনি বলেন, এভাবে সবাইকে বাস থেকে নামিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে হয়রানি করা হচ্ছে। অযথাই সময় নষ্ট করছে।
সাভার থেকে ঢাকার গুলশানে যাচ্ছিলেন মো. নাদিম হোসেন। তিনি বলেন, বাস কম তাই সাভার থেকে লেগুনায় আমিনবাজার পর্যন্ত আসছি। এখন হেঁটে গাবতলী যাবো ওখানে বাস পেলে এরপর গুলশান যাবো।
এদিকে, সকাল থেকে ঢাকার ধামরাইয়ের ইসলামপুর এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ঢাকাগামী লেনে তল্লাশি করছেন ধামরাই থানার পুলিশ। মানিকগঞ্জ ও টাঙ্গাইলের দিক থেকে ছেড়ে আসা প্রতিটি বাসে তল্লাশি চালাচ্ছেন তারা। এ সময় বাস থেকে ৮ জনকে নামিয়ে দাঁড় করিয়ে রাখতে দেখা যায়।
এরআগে সকাল সাড়ে ৬টার দিকে ধামরাই পৌরসভার বাজার রোড এলাকায় মমতাজ হাসপাতালের উত্তর পাশে পাকা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে সড়কের ওপর ককটেল বিস্ফোরণে ঘটিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জড়িত দুইজনকে আটক করেছে ধামরাই থানা পুলিশ।
প্রত্যক্ষদর্শী পরিবহন শ্রমিক মো. খায়ের বলেন, সকালের দিকে কয়েকজন সড়কে পাশে জড়ো হয়। পরে একটি টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করেন। ২-৩ মিনিট অবস্থানের পর তারা চলে যান। যাওয়ার সময় তারা একটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান। এ সময় তারা খালেদা জিয়ার মুক্তি চায় ও শেখ হাসিনার পতন চায়সহ বিভিন্ন সরকারবিরোধী স্লোগান দেয়।
ধামরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ বলেন, সন্দেহ হলে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য কিছু সময় লাগছে। বিষয়টিকে এখনই আটক বলা যাচ্ছে না।
সড়কে টায়ার জালিয়ে অবরোধ ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঘটনাস্থল থেকে দুইটি অবিস্ফোরিত ককটেল ও ৪টি চকলেট বোমা উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত দুইজন বিএনপি’র পদধারী নেতা। আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।