সাইফুল ইসলাম, মানিকগঞ্জ : বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর দেশের বিভিন্ন খাতে সংস্কারের উদ্যোগ নেয়া হলেও এখনও বহাল তবিয়তে রয়েছে অনলাইন প্রতারক চক্র।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের পরিচয় ব্যবহার করে আন্দোলনে আহত ব্যক্তিদের সহায়তা দেয়ার নাম করে প্রতারণা চালিয়ে যাচ্ছে চক্রটি।
গত রোববার দুপুরে মানিকগঞ্জ শহরের বাসিন্দা এক যুবকের হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে অর্থ মন্ত্রণালয়ের লোগো সম্বলিত একটি নাম্বার থেকে কল দিয়ে প্রতারক চক্রটি বলে, আমরা অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বলছি। ছাত্র আন্দোলনে আহত ব্যক্তিদের দুই লক্ষ পঞ্চাশ হাজার টাকা সহায়তা প্রদান করছি। আপনার ভিসা কার্ড ও ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার আমাদের হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে দেন। অর্থ মন্ত্রণালয় হতে আপনাকে প্রথমে পঞ্চাশ হাজার টাকা প্রদান করা হবে। পরবর্তীতে সরকার গঠন হওয়ার পর আপনাকে সম্পূর্ণ টাকা প্রদান করা হবে। প্রতারক চক্রের হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বারে অর্থ মন্ত্রণালয়ের লোগো সংযুক্ত থাকায় প্রতারক চক্রের প্রতারণা বুঝতে না পেরে ওই যুবক তার বড় ভাইয়ের ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার এবং ভিসা কার্ডের দুই পাশের ছবি তুলে পাঠিয়ে দেয়। এরপর বিকেল চারটার দিকে প্রতারক চক্রটি আবারও ওই যুবককে কল দিয়ে ভিসা কার্ডের জন্য ব্যবহৃত ফোন নাম্বারে ভেরিফিকেশন কোড প্রদান করা হয়েছে জানিয়ে সেই কোড নাম্বার দিতে বলে। এরপরই ঘটে বিপত্তি। প্রতারক চক্রটি কোড নাম্বার পেয়েই ভিসা কার্ড হতে ত্রিশ হাজার টাকা উত্তোলন করে নিয়ে যায়। এরপরই তাদের মোবাইল নাম্বার বন্ধ করে দেয় প্রতারক চক্রটি।
এরপর প্রতারণার বিষয়টি বুঝতে পেরে ওইদিনই সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জ সদর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই যুবক।
ওই যুবক জানান, আন্দোলনের সময় আমি গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলাম। এরপর জানতে পারি আহতদের তালিকা করে সরকারিভাবে সহায়তা দেয়া হবে। পরে আমি আমার চিকিৎসাপত্র, আইডি কার্ডের কপি ও ছবিসহ বিভিন্ন প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কয়েকটি জায়গায় জমা দিয়েছি। রবিবার হঠাৎ অর্থ মন্ত্রণালয়ের লোগোসহ একটি হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার থেকে আমার নাম্বারে কল দিয়ে আমাকে বলে আপনার কাগজপত্র আমাদের কাছে জমা পড়েছে। আপনার মত সকল আহতদের আড়াই লাখ করে টাকা সহায়তা দেয়া হবে। কাগজপত্রের কথা বলায় এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের লোগো থাকায় আমি সহজেই এটি বিশ্বাস করেছি। প্রতারণার বিষয়টি আমি বুঝতে পারিনি। পরে ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার ও ভিসা কার্ডের ছবি দেয়ার পরই একাউন্ট থেকে টাকা কেটে নেয় চক্রটি। তখন বুঝতে পারি আমি প্রতারণা শিকার হয়েছি। বর্তমান সরকারের কাছে আমি দাবি জানাই, এই প্রতারক চক্রটিকে আটক করে শাস্তির আওতায় আনা হোক। এই চক্রটি আমার মত আর কারো সাথে যেন প্রতারণা করতে না পারে।
মানিকগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম আমানউল্লাহ অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি নিয়ে প্রাথমিক তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া, অনলাইনে নিরাপদ থাকতে ব্যবহারকারীদের আরো সচেতন হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।