বিজ্ঞান ও প্রযক্তি ডেস্ক : আচ্ছা, আমাদের এই পৃথিবীতে পানি কোথা থেকে এসেছে বলুন তো? বছরের পর বছর ধরে এই নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন বিজ্ঞানীরা। তার থেকেও বড় কথা হল পৃথিবীপৃষ্ঠের ৭১ শতাংশ পানি দ্বারা আচ্ছাদিত হওয়ার পরেও তারই উৎস আজও বিজ্ঞানীদের কাছে বড় রহস্যেপ ব্যাপার।
গত কয়েক বছরের গবেষণায় পানির উৎস সম্পর্কে দুটো দিক উঠে এসেছে। বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব অনুযায়ীস হয় গ্রহাণু থেকে পৃথিবীতে পানি এসেছে, আর নয়তো পৃথিবীই তার প্রয়োজনীয় পানির সৃষ্টি করেছে। এবার পৃথিবীতে পানির উৎস সম্পর্কিত একটি নতুন দিক আলোকপাত করেছেন ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির গবেষকরা।
ওই গবেষণায় ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির গবেষকরা দাবি করেছেন, পৃথিবী প্রাথমিক ভাবে শুষ্ক এবং পাথুরে পদার্থ থেকে তৈরি হয়েছিল। তাই যদি হয়, অর্থাৎ শুষ্কই যদি হয়, তাহলে তাতে পানি নিশ্চয়ই ছিল না প্রাথমিক পর্যায়ে। ঠিক তাই। বিজ্ঞানীরা বলছেন, আমাদের গ্রহে পানি এসেছে পরে।
গবেষকদের মতে, পৃথিবীর গঠনের শেষের দিকের ১৫ শতাংশে এটি যথেষ্ট পানি এবং জীবনের অস্তিত্বের জন্য প্রয়োজনীয় পদার্থগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করেছিল। অনুমান করা হয় যে, পৃথিবী ৪৫০ কোটি বছরের পুরনো এবং কীভাবে পৃথিবী গঠিত হয়েছিল বিজ্ঞানীরা এখনও তা বের করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এখন এই প্রক্রিয়াটি অধ্যয়ন করার সবথেকে ভাল উপায় হল পৃথিবীর অভ্যন্তরে গরম ম্যাগমার অনুসন্ধান করা। কিন্তু তা কি আদৌ সম্ভব? আমরা তো সরাসরি পৃথিবীর গভীরতায় পৌঁছতেই পারি না, ম্যাগমাই লাভা আকারে পৃথিবীপৃষ্ঠে বেরিয়ে আসে।
বিজ্ঞানীরা ব্যাখ্যা করে বলছেন, ম্যাগমা পৃথিবীর বিভিন্ন গভীরতায় উৎপন্ন হয়। যে আবরণ থেকে ম্যাগমা লাভা রূপে নির্গত হয়, সেই উপরের আবরণটিই শুরু হয় ১৫ কিলোমিটার গভীরতায় এবং তার প্রায় ৬৮০ কিলোমিটার পর্যন্ত প্রসারিত হয়। এদিকে নিচের ম্যান্টেলটি ৬৮০ কিমি থেকে ২৯০০ কিমি পর্যন্ত মূল ম্যান্টেল পর্যন্ত বিস্তৃত।
বিভিন্ন গভীরতায় গিয়ে ম্যাগমা অধ্যয়ন করে বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর স্তর এবং গঠন ও প্রত্যেকটি স্তরে উপস্থিত রাসায়নিকগুলি সম্পর্কে জানতে পারেন। এই গবেষণার পরই তারা জানিয়েছেন, পৃথিবী একবারে গঠিত হয়নি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তা বিভিন্ন পদার্থের মিশ্রণে বিকশিত হয়েছে। এর অর্থ হল, পৃথিবীর গঠন সম্পর্কে তথ্য দিতে পারে নিচের ম্যান্টেল এবং উপরের ম্যান্টেল।
সাম্প্রতিকতম এই গবেষণায় বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর গভীরতায় পানি সহ অন্যান্য উদ্বায়ী রাসায়নিকের যথেষ্ট অভাব শনাক্ত করেছেন। সেই কারণেই গবেষকরা বিশ্বাস করেন, আমাদের গ্রহটি যখন শক্ত পাথরে পরিণত হয়েছিল, তখন তা সম্পূর্ণ শুষ্ক ছিল। এখন তাদের আশা যে, এ প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই তারা পৃথিবীসহ সৌরজগতের অন্যান্য পাথুরে গ্রহের গঠন শনাক্ত করতে পারবেন। এই গবেষণার যিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন, সেই ডঃ ফ্রাঁসোয়া টিসোট বলছেন, ‘মহাকাশ অনুসন্ধান খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, সম্ভবত এর মাধ্যমেই পৃথিবীর পানি সহ সমস্ত জীবনের সন্ধান পাওয়া যেতে পারে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।