বিজ্ঞান ও প্রযক্তি ডেস্ক : আধুনিক সময়ে থ্রিডি প্রিন্টারের নানাবিধ ব্যবহার মানুষের জীবনকে অনেক সহজ করে দিয়েছে। তাই বলে থ্রিডি প্রিন্টার দিয়ে মানুষের মস্তিষ্কের টিস্যু বা ব্রেইন টিস্যু তৈরি করা সম্ভব? শুনতে অনেকটা অবাস্তব শোনা গেলেও এমনটাই করে দেখিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিন-মেডিসনের একদল বিজ্ঞানী। তাঁদের আবিষ্কৃত এই টিস্যু আর দশটা ব্রেইন টিস্যুর মতোই কাজ করে।
ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিন-মেডিসনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত এ বিষয়ক একটি নিবন্ধে বলা হয়েছে, এই আবিষ্কার বিভিন্ন ধরনের স্নায়বিক রোগ যেমন—আলঝেইমার ও পারকিনসনসের মতো রোগের চিকিৎসায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে।
থ্রিডি প্রিন্টার দিয়ে ব্রেইন টিস্যু তৈরির বিষয়ে ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিন-মেডিসনের নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড নিউরোলজির অধ্যাপক সু-চান জং বলেছেন, ‘মস্তিষ্কের কোষ ও এর বিভিন্ন অংশ কীভাবে পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ করে, তা বোঝার ক্ষেত্রে এটি একটি ব্যাপক শক্তিশালী মডেল হতে পারে।’
এর আগে, থ্রিডি প্রিন্টার যে পদ্ধতিতে প্রিন্ট করত, তার কারণে এ ধরনের টিস্যু তৈরির প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে বলে জানিয়েছেন এই গবেষণার অন্যতম গবেষক ইউয়েনয়েই ইয়ান ও সু-চান জং। তাঁরা তাঁদের এই গবেষণার বিষয়টি ‘সেল স্টেম সেল’ নামে একটি জার্নালে প্রকাশ করেছেন।
মস্তিষ্কের টিস্যু প্রিন্ট করার ক্ষেত্রে গবেষক দলটি প্রথাগত পদ্ধতি—যেখানে উপকরণগুলোকে উলম্বভাবে স্তরীভূত করা হয়—অনুসরণ না করে আনুভূমিকভাবে উপাদানগুলোকে স্তরীভূত করার চেষ্টা করেন। বিজ্ঞানীরা সাধারণ ব্রেইন সেল বা কোষের সঙ্গে ইনডিউসড প্লুরিপোটেন্ট স্টেম সেলকে একধরনের নরম ‘বায়ো ইঙ্ক’ জেল দিয়ে আটকে দেন।
প্লুরিপোটেন্ট স্টেম সেল এমন একধরনের বিশেষ শক্তিশালী স্টেম সেল, যা সাধারণত ভ্রূণের প্রাথমিক বিকাশের সময় উৎপন্ন হয়। প্লুরিপোটেন্ট স্টেম সেলের একটি শক্তিশালী বৈশিষ্ট্য হলো, এটি মানুষের শরীরের তিন মৌলিক স্তর (এক্টোডার্ম/এন্ডোডার্ম/মেসোডার্ম) এমনকি জীবাণু কোষ গঠন করারও ক্ষমতা রাখে।
থ্রিডি প্রিন্টারে উৎপাদিত ব্রেইন সেলের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে সু-চান জং বলেন, এই টিস্যুর কাঠামোতে এখনো পর্যাপ্ত স্থান আছে, যার সাহায্যে একাধিক টিস্যুর সঙ্গে এটি যুক্ত হতে পারবে এবং এটি একাধিক নিউরনের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের মাধ্যমে সংকেত আদান-প্রদানেরও সুযোগ দেয়।
ইউয়েনয়েই ইয়ান বলেছেন, ‘আমাদের টিস্যু তুলনামূলকভাবে বেশ পাতলা এবং এটি নিউরনের বৃদ্ধির জন্য পর্যাপ্ত অক্সিজেন ও পর্যাপ্ত পুষ্টি উপাদান পাওয়ার বিষয়টি সহজ করে তুলেছে।’ বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্রিন্টেড এই টিস্যুগুলো পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে সক্ষম।
চন্দ্রাভিযানের জন্য নাসা থেকে স্নাতক শেষ করলেন প্রথম যে আরব নারী
ইউনিভার্সিটি অব উইসকনসিন-মেডিসনের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত নিবন্ধে বলা হয়েছে, নতুন এই প্রিন্টিং কৌশল আরও অনেক গবেষণাগারে থাকা উচিত। এই প্রিন্টারে টিস্যুকে সুস্থ রাখতে বিশেষ কোনো জৈব মুদ্রণ উপকরণের প্রয়োজন হয় না। এই পদ্ধতিতে মাইক্রোস্কোপ, স্ট্যান্ডার্ড ইমেজিং কৌশল ও প্রচলিত ইলেক্ট্রোডের সাহায্যে গভীরভাবে নিরীক্ষণ করা সম্ভব।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।