বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : বিজ্ঞানীরা এমন এক সৌর প্যানেল উদ্ভাবন করেছেন, যা মহাকাশে ক্ষতিগ্রস্ত হলে নিজেই নিজেকে সারিয়ে নিতে পারবে।
ব্রিটিশ সংবাদপত্র ইনডিপেন্ডেন্ট জানিয়েছে, এই যুগান্তকারী প্রযুক্তিতে ব্যবহৃত হয়েছে ‘মিরাকল ম্যাটেরিয়াল’ নামে পরিচিত ‘পেরোভস্কাইট’। এর আগে সিলিকনভিত্তিক সৌর কোষের কার্যকারিতা বৃদ্ধির বেলাতেও এর ব্যবহার দেখা গেছে।
অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব সিডনির একদল বিজ্ঞানী দেখতে পেয়েছেন, পৃথিবীর নিচু কক্ষপথে থাকা সেসব সৌর প্যানেল বিকিরণের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়, সৌর শক্তি ব্যবহার করে সেগুলোকে শতভাগ কার্যকারিতা ফিরে পেতে সহায়তা করতে পারে এই উপাদান।
১৯৫০ এর দশক থেকেই স্যাটেলাইটে বৈদ্যুতিক চাহিদা পূরণের জন্য সৌর প্যানেল ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে প্রতি বছর বিভিন্ন ধরনের বিকিরণের ফলে ১০ শতাংশ পর্যন্ত কার্যকারিতা হারায় সেগুলো।
এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে বিজ্ঞানীরা ‘মাইক্রোপ্রোব’ ব্যবহার করে একটি নতুন নকশা পরীক্ষা করে দেখেন। কয়েকশ বছর ধরে পৃথিবী প্রদক্ষিণের সময় বিভিন্ন সৌর কোষ যে প্রোটন বিকিরণের মধ্য দিয়ে যায়, সেরকম একটি পরিবেশ তৈরি করা হয় ওই ‘মাইক্রোপ্রোব’ ব্যবহার করে।
তাদের ওই গবেষণায় দেখা যায়, ওই ধরনের বিকিরণের কারণে সৌর কোষে যে ক্ষয় হয়, ‘পেরোভস্কাইট’ ব্যবহার করে তৈরি সেলে বায়ুশূন্য অবস্থায় হিট ট্রিটমেন্ট দিয়ে সেই ক্ষয় পূরণ করে শতভাগ সক্রিয়তা ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
‘ফটোভোলটাইক’ কোষের সঙ্গে ‘পেরোভস্কাইট’ ব্যবহার করলে সূর্যরশ্মিকে বিদ্যুতে রূপান্তরের যে সক্ষমতা ওই কোষ পায়, সেজন্য একে ‘অবিশ্বাস্য এক অলৌকিক উপাদান’ হিসেবে বর্ণনা করেছিলেন ইউনিভার্সিটি অফ ইউটার একজন অধ্যাপক।
গবেষক দলটি বলছে, সৌর সেলের গবেষণায় এই অগ্রগতি বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজে যেতে পারে। যেমন স্পেসএক্সের স্টারলিংকের মত বৈশ্বিক ইন্টারনেট স্যাটেলাইট বহরের ক্ষেত্রে।
“আমরা আশা করছি, এই কাজ থেকে পাওয়া খুঁটিনাটি তথ্য ভবিষ্যতের মহাকাশ সংশ্লিষ্ট কাজে কম খরচে হালকা ওজনের সৌর সেল তৈরিতে সহায়তা দেবে,” বলেন গবেষণা সংস্থা ‘আর্ক সেন্টার অব এক্সিলেন্স ইন এক্সিটন সায়েন্স’-এর গবেষক এবং এই প্রকল্পের নেতৃত্ব দেওয়া অধ্যাপক আনিতা হো-বাইলি।
‘ইফেক্ট অফ হোল ট্রান্সপোর্ট ম্যাটেরিয়ালস অ্যান্ড দেয়ার ডোপ্যান্টস অন দ্য স্টেবিলিটি অ্যান্ড রিকোভারেবিলিটি অব পেরোভস্কাইট সোলার সেলস অন ভেরি দিস সাবসস্ট্রেটস আফটার ৭ এমইভি প্রোটন ইরেডিয়েশন’ শীর্ষক গবেষণাপত্রে এই যুগান্তকারী উদ্ভাবন সম্পর্কে বিস্তারিত বলা হয়েছে। আর ‘অ্যাডভান্সড এনার্জি ম্যাটেরিয়ালস’ নামের বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে ওই প্রতিবেদন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।