বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : পৃথিবীর বাইরে বিশ্বের আর কোথাও জীবনের অস্তিত্ব আছে কি না, এ নিয়ে গবেষণা, অনুসন্ধান কিংবা বিতর্ক চলেই আসছে। তবে এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পাওয়ার সময় খুব নিকটবর্তী বলেই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। এমনকি হয়তো কয়েক বছরের মধ্যেই অবসান ঘটবে অপেক্ষার অবসান!
ভিনগ্রহের প্রাণী বা এলিয়েনের অস্তিত্ব আছে কি না – বিজ্ঞানীরা এখন আর এ প্রশ্নের সন্ধান করছেন না; বরং তারা অপেক্ষা করছেন কবে খুঁজে পাওয়া যাবে তাদের। এ বিজ্ঞানীদের অনেকে আমাদের সৌরজগৎ তো বটেই, এর বাইরের বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সুদূর কোন স্থান থেকেও এদের অস্তিত্বের আভাস পাওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী। এর মধ্যে অনেকে এত বেশি আত্মবিশ্বাসী যে, নিজেদের জীবদ্দশার মধ্যেই এলিয়েনের অস্তিত্ব খুঁজে পাবেন ভাবছেন! এসব বিজ্ঞানীর মধ্যে রয়েছেন মহাকাশ নিয়ে গবেষণা করা বিশ্বের খ্যাতনামা জ্যোতির্বিজ্ঞানী কিংবা জ্যোতির্জীববিজ্ঞানী!
ক্রমেই দৃঢ় হচ্ছে পৃথিবীর বাইরে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা
মহাবিশ্বের যেসব স্থানে প্রাণের অস্তিত্বের ব্যাপারে আশাবাদী, তাদের মধ্যে বৃহস্পতি গ্রহের উপগ্রহগুলো অন্যতম। এসব উপগ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়ার মিশনে নেতৃত্ব দেয়া এক বিজ্ঞানী এ ব্যাপারে এতটাই আশাবাদী যে, তার মতে বৃহস্পতির কক্ষপথে থাকা এসব শীতল উপগ্রহের কোনটিতে যদি জীবনের সন্ধান না পাওয়া যায়, তবে সেটাই হবে আশ্চর্যজনক।
বিবিসি জানায়, সৌর জগতের বাইরের একটি গ্রহ থেকেও প্রাণের অস্তিত্বের ক্ষীণ আভাস পেয়েছে নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (জেডব্লিউএসটি)। শুধু সেই নির্দিষ্ট গ্রহই নয়, মহাবিশ্বে এ রকম আরও অনেক জগৎ ধরা পড়ছে এ টেলিস্কোপের শক্তিশালী দৃষ্টিসীমায়।
এলিয়েনদের অস্তিত্ব খুঁজতে অনুসন্ধান চলছে জোরেশোরে
যদি পৃথিবীর বাইরের কোনও প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায়, বিজ্ঞানীদের মতে, তা হবে বিশ্বের সবচেয়ে যুগান্তকারী বৈজ্ঞানিক সাফল্য। এরই মধ্যে এলিয়েনদের অস্তিত্ব খুঁজে বের করার ক্ষেত্রে এক ধরনের প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে বিশ্বের বিজ্ঞানীমহলে। এ সংক্রান্ত গবেষণায় উদারহস্তে টাকাও ঢালা হচ্ছে অকাতরে। এলিয়েনদের খোঁজে এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি বৈজ্ঞানিক মিশন কাজ শুরু করেছে; কিংবা খুব শিগগিরই শুরু করবে।
এ ব্যাপারে বিবিসিকে স্কটল্যান্ডের রয়্যাল অবসার্ভেটরি এডিনবার্গের পরিচালক প্রফেসর ক্যাথেরিন হেইম্যান্স বলেন, ‘আমরা একটি অসীম ব্রহ্মাণ্ডে বসবাস করছি, যেখানে রয়েছে অসংখ্য তারকা ও গ্রহরাজি। আমাদের মতো অনেকেই নিশ্চিত যে, এত সুবিশাল ক্ষেত্রে একমাত্র আমরাই বুদ্ধিমান প্রাণী হতে পারি না। আমাদের এখন সেই প্রযুক্তি ও সামর্থ্য রয়েছে, যার মাধ্যমে আমরাই এ বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে একা কিনা সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজে বের করতে পারি।’
মহাবিশ্বে সম্ভাব্য প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে ‘দি গোল্ডিলকস জোন’-এ
মহাকাশ পর্যবেক্ষণে ব্যবহৃত টেলিস্কোপগুলো সৌরজগৎ তো বটেই, এখন বাইরের গ্রহগুলোরও আবহাওয়া ও পরিবেশ সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করতে পারছে। তারা এসব গ্রহের প্রতিবেশে এমন রাসায়নিক উপাদানের খোঁজে অনুসন্ধান চালাচ্ছে, যা উৎপন্ন হতে পারে একমাত্র জীবন্ত সত্তার মাধ্যমেই।
বিবিসি আরও জানায়, এ ধরনের একটি অনুসন্ধানে বড় ধরনের অগ্রগতির খবর আসে গত সেপ্টেম্বরে। পৃথিবীতে সামুদ্রিক প্রাণীদের উৎপন্ন একটি গ্যাসীয় পদার্থের মতই একটি গ্যাসের সম্ভাব্য অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যায় পৃথিবী থেকে ১২০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত একটি গ্রহের প্রতিবেশ থেকে, যার নাম ‘কে২-১৮বি’।
জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এ ‘কে২-১৮বি’-এর মতো গ্রহগুলোকে অভিহিত করছেন ‘গোল্ডিলকস জোন’ হিসেবে। ‘গোল্ডিলকস জোন’ হলো নক্ষত্র থেকে এমন একটি দূরত্বে তাকে কেন্দ্র করে ঘূর্ণায়মান কোন গ্রহের অবস্থান, যেখানে তাপমাত্রা খুব বেশি ঠান্ডাও নয়, আবার খুব বেশি গরমও নয়। অর্থাৎ পানি তরল অবস্থায় থাকার মতো উপযুক্ত তাপমাত্রা। কোন জীবনের বেঁচে থাকার জন্য এ ধরনের তাপমাত্রা থাকা অত্যাবশ্যক।
এ ব্যাপারে গবেষণা পরিচালনাকারী দলের প্রধান কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব অ্যাস্ট্রোনমির প্রফেসর নিক্কু মধুসূদন বিবিসিকে বলেন, যদি সত্যিই সেখান থেকে পাওয়া প্রাণের অস্তিত্বের ইঙ্গিতের সত্যতা প্রমাণিত হয়, তবে এলিয়েনদের অস্তিত্বের ব্যাপারে অনসুন্ধানে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির মৌলিক পরিবর্তন ঘটবে। যদি আমাদের গবেষণার প্রথম গ্রহ থেকেই জীবনের অস্তিত্বের ইঙ্গিত পাই, তবে তা বিশ্বের অন্যত্র প্রাণের অস্তিত্ব থাকার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেবে।
আগামী ৫ বছরের মধ্যেই বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে জীবনের অস্তিত্ব থাকার ব্যাপারে বিজ্ঞানীদের চিন্তাভাবনার মধ্যে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে বলেও বিবিসিকে জানান এ বিজ্ঞানী।
মহাবিশ্বের অনেক স্থানেই রয়েছে প্রাণের অস্তিত্বের সম্ভাবনা
নিক্কু মধুসূদনের দল যদি ‘কে২-১৮বি’ গ্রহে জীবনের লক্ষ্মণ খুঁজে নাও পান, তারপরও তাদের হাতে রয়েছে এ রকম আরও অন্তত দশটি ‘গোল্ডিলকস প্লানেট’, যেখানে তারা ধারাবাহিকভাবে অনুসন্ধান চালাবেন। সামনের দিনগুলোতে এ ধরনের গ্রহের তালিকা আরও বড় হতে থাকবে।
যদি এসব অনুসন্ধানে তেমন কোন ইতিবাচক ফলাফল নাও পাওয়া যায় তারপরও তা মহাবিশ্বে প্রাণের অস্তিত্বের ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য বিজ্ঞানীদের যোগাবে বলে বিবিসিকে জানান বিজ্ঞানী প্রফেসর নিক্কু মধুসদন।
বিবিসি জানিয়েছে, বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজে পেতে প্রফেসর মধুসদনের দলের মত এ রকম আরও অনেক গবেষক দল ইতোমধ্যেই কাজ শুরু করেছে কিংবা খুব শিগগিরই কাজ শুরু করবে। তাদের মধ্যে কেউ কেউ সৌরজগতের মধ্যেই প্রাণের অস্তিত্বের অনুসন্ধান করবে এবং অন্যান্যরা সৌরজগতের বাইরের গভীর মহাশূন্যে অনুসন্ধান চালাবে।
এলিয়েনদের খুঁজে পেতে বাধা বৈজ্ঞানিক সক্ষমতার অভাব
পৃথিবীর বাইরে প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়ার ক্ষেত্রে যে ধরনের বৈজ্ঞানিক সক্ষমতার প্রয়োজন বিশ্বের বর্তমান বৈজ্ঞানিক অগ্রগতি এখনও সে পর্যায়ে পৌঁছায়নি বলেই মনে করা হয়। যেমন নাসার “জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ” বা জেডব্লিউএসটি’র মতো টেলিস্কোপগুলো যতই শক্তিশালী হোক এখনও এগুলোর কিছু সীমাবদ্ধতা রয়েছে।
বিজ্ঞানীদের মতে সূর্য থেকে প্রাণ ধারণের মতো উপযুক্ত দূরত্বে অবস্থান করার কারণেই পৃথিবী গ্রহতে প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে। কিন্তু এই টেলিস্কোপ এখনও অন্য কোন সৌরমণ্ডলে সূর্য থেকে পৃথিবীর দূরত্বে অবস্থানকারী কিংবা একই আকৃতির গ্রহের সন্ধান পায়নি। এখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত এ ধরনের গ্রহ ”কে২-১৮বি”র আকৃতিও পৃথিবী থেকে আটগুণ বড়। এর অন্যতম কারণ হলো ঐসব সৌরজগতের নক্ষত্র থেকে বিচ্ছুরিত আলোকরশ্নির কারণে এসব নক্ষত্রের আশপাশে থাকা ছোট ছোট গ্রহগুলোকে পরিষ্কারভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পারে না এসব টেলিস্কোপ।
সৌরজগতের বাইরের গ্রহে এলিয়েনের সন্ধানে স্থাপন হচ্ছে শক্তিশালী টেলিস্কোপ
এ পরিস্থিতিতে সৌরজগতের বাইরে থাকা গ্রহগুলোতে অনুসন্ধানের জন্য “হ্যাবিটেবল ওয়ার্ল্ডস অবসার্ভেটরি” বা এইচডব্লিউও নামে অভিহিত একটি শক্তিশালী টেলিস্কোপ ২০৩০ সালের মধ্যে স্থাপনের পরিকল্পনা করছে নাসা। যেখানে থাকবে সৌররশ্নি প্রতিরোধী ব্যবস্থা সম্বলিত ”সানশিল্ড”। যা ঐসব গ্রহ যেসব নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয় সেইসব নক্ষত্র থেকে আসা রশ্নিকে প্রতিহত করবে। ফলে এসব নক্ষত্রের চারপাশে ”গোল্ডিলকস জোন” এ থাকা পৃথিবীর অনুরূপ ছোট ছোটগ্রহগুলোকে আরও সহজে পর্যবেক্ষণ করতে পারবে এই এইচডব্লিউও টেলিস্কোপ।
এর পাশাপাশি চলতি দশকের শেষ হওয়ার আগেই এসে যাবে ”ইউরোপিয়ান সাউদার্ন অবসার্ভেটরি” বা ইএসও এর ”এক্সট্রিমলি লার্জ টেলিস্কোপ” বা ইএলটি। যা চিলির মরুভূমি থেকে পরিষ্কার ও স্বচ্ছ আকাশকে আরও ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করবে। এতে থাকবে বিশ্বের এ পর্যন্ত নির্মিত সবচেয়ে বড় আয়না , যার বিস্তৃতি ৩৯ মিটার। বিজ্ঞানীদের প্রত্যাশা মহাবিশ্বের দূরবর্তী স্থানে অবস্থিত গ্রহ উপগ্রহগুলোর পরিস্থিতি বিশদভাবে ধরা পড়বে এই শক্তিশালী টেলিস্কোপের লেন্সে।
এই তিনটি টেলিস্কোপের মাধ্যমে ব্রহ্মাণ্ডের ঐ দূরবর্তী স্থানে নির্গত হওয়া রশ্নি বিশ্লেষণ করে যে পদার্থ থেকে এই রশ্নি নির্গত হচ্ছে, তার ভেতরে থাকা রাসায়নিক বস্তু সম্পর্কে আন্দাজ লাভ করতে পারবেন বিজ্ঞানীরা।
এই টেলিস্কোপগুলো এতটাই শক্তিশালী যে এবং তারা এত বেশি অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে নির্মিত হবে যে পৃথিবী থেকে শত শত আলোক বর্ষ দূরে অবস্থিত নক্ষত্র মণ্ডলীতে থাকা গ্রহের থেকে বিচ্ছুরিত আলোর একটি সামান্য কনাকেও এসব টেলিস্কোপের মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ করা যাবে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
পৃথিবীর কাছাকাছি থাকা ব্রহ্মাণ্ডে প্রাণের অনুসন্ধান
যদিও বর্তমানে মহাবিশ্বের দূর সুদূর প্রান্তে প্রাণের অস্তিত্বের খোঁজে অনুসন্ধান চালানো হচ্ছে, তবে একই সঙ্গে আমাদের সৌরজগতেই প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজে বের করার চেষ্টা চালাচ্ছেন গবেষকরা। এর মধ্যে প্রাণের অস্তিত্ব থাকার ক্ষেত্রে সবচেয়ে সম্ভাবনাময় হিসেবে মনে করা হচ্ছে বৃহস্পতির শীতল উপগ্রহ ইউরোপাকে। ইউরোপার যে ছবি পাওয়া গেছে, তাতে দেখা গেছে, এর গায়ে রয়েছে বাঘের গায়ে থাকা ডোরাকাটা দাগের মতন রেখা। ইউরোপার বরফে মোড়া ভূপৃষ্ঠের নিচেই রয়েছে সমুদ্র। যেখান থেকে পানির বাষ্প অবিরাম উড়ে মিশে যাচ্ছে মহাবিশ্বে।
আগামী দশকের শুরুর দিকে ইউরোপায় নাসার ক্লিপার ও জুপিটার আইসি মুনস এক্সপ্লোরার বা জুস নামে অভিহিত ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির মহাকাশ যান অবতরণ করবে বলে জানিয়েছে বিবিসি।
এ ব্যাপারে ইউরোপিয়ান স্পেস এজেন্সির জুস মিশনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট শীর্ষ বিজ্ঞানী প্রফেসর মিশেল দোঘারটি বিবিসিকে বলেন, ‘বৃহস্পতির এসব শীতল উপগ্রহের কোন একটিতে প্রাণের অস্তিত্ব না থাকার বিষয়টিই হবে আশ্চর্যজনক।’
এসবের বাইরে শনি গ্রহের অন্যতম উপগ্রহ টাইটানে অবতরণের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যাবে নাসার মহাকাশযান ড্রাগনফ্লাই। জলাভূমিতে পূর্ণ উপগ্রহটিতে রয়েছে কার্বনসমৃদ্ধ রাসায়নিকে গঠিত মেঘমালা। এর ফলে উপগ্রহটি ঘিরে রেখেছে অদ্ভূত কমলা ধোঁয়া। পানির সঙ্গে এসব রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতিকে ধারণা করা হয় জীবনের অস্তিত্বের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান হিসেবে।
মঙ্গলগ্রহ যদিও বর্তমানে জীবন ধারণের জন্য অসম্ভব পরিস্থিতি বিরাজ করছে; কিন্তু জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এক সময় এ গ্রহটি ছিলো উপযুক্ত আবহাওয়াসমৃদ্ধ। যা উপযুক্ত ছিলো জীবন ধারণের জন্য।
এলিয়েনরা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছে কি?
এ প্রশ্নকে কল্পবিজ্ঞানের বিষয় বলে বিবেচনা করা হলেও গত কয়েক দশক ধরেই মহাবিশ্বে পৃথিবীকে লক্ষ্য করে এলিয়েনদের পাঠানো সম্ভাব্য রেডিও সিগন্যালের খোঁজ চলছে। যে সব সংস্থা এ কাজে নিযুক্ত, তাদের মধ্যে অন্যতম যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ‘সার্চ ফর এক্সট্রা টেরেসট্রিয়াল ইনটেলিজেন্স’ বা সেটি ইনস্টিটিউট।
মহাবিশ্ব একটি কল্পনাতীত সুবিশাল ক্ষেত্র, তাই সেখানে কিছু খুঁজে পেতে গবেষণার বিষয়টি এতদিন ধরে হয়ে আসছিলো অনুমান নির্ভর। তবে টেলিস্কোপের ক্ষমতা বহুগুণ বাড়ায় এখন সেটি ইনস্টিটিউটের মতো প্রতিষ্ঠানগুলো এলিয়েনদের খোঁজে আরও সুনির্দিষ্টভাবে অনুসন্ধান কার্যক্রম চালাতে পারবে।
এ ব্যাপারে সেটি ইনস্টিটিউটের ‘কার্ল সেগান সেন্টার ফর দি স্টাডি অফ লাইফ ইন দি ইউনিভার্স’-এর পরিচালক ড. নাথালি ক্যাবরোল বলেন, ‘এই ধরনের সক্ষমতা এলিয়েন খোঁজার প্রচেষ্টায় নতুন উদ্যম যোগাবে।’
এরই মধ্যে নিজেদের টেলিস্কোপগুলোতে এমন ধরনের প্রযুক্তি ও যন্ত্রপাতি সংযুক্ত করা হয়েছে, সেটি ইনস্টিটিউট, যার মাধ্যমে মহাবিশ্বের দূরবর্তী স্থান থেকে আসা শক্তিশালী আলোক রশ্নিগুলোকে পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে।
ড. ক্যাবরোলের মতে পৃথিবীর বাইরের প্রাণের অস্তিত্ব খুঁজতে এভাবে এলিয়েনদের থেকে পাঠানো বার্তা অনুসন্ধানের বিষয়টি একটি অনিশ্চিত পন্থা হলেও এটিই সবচেয়ে কার্যকরী উপায়। যে কোন সময়ই এ সংক্রান্ত সিগন্যাল পাওয়া যেতে পারে।
এ ব্যাপারে ড. ক্যাবরোল বলেন, ‘চিন্তা করুন (এলিয়েনদের থেকে) এমন কোন সংকেত পাওয়ার বিষয়টি, যেটি আমরা বুঝতে পারছি। ত্রিশ বছর আগে আমাদের সৌরজগতের বাইরের অন্যান্য নক্ষত্রের চারপাশে থাকা গ্রহগুলোর ব্যাপারে আমরা কিছুই জানতাম না। বর্তমানে এ ধরনের ৫ হাজার গ্রহ আবিষ্কৃত হয়েছে, যা বিজ্ঞানীরা অত্যন্ত বিশদভাবে বিশ্লেষণ ও গবেষণা করতে পারছেন।
এ ব্যাপারে সৌরজগতের বাইরের গ্রহ ‘কে২-১৮বি’-এর অনুসন্ধানী গবেষক দলের সদস্য ও কার্ডিফ ইউনিভার্সিটির ড. শুভজিৎ সরকার বিবিসিকে জানান, ‘যদি আমরা প্রাণের অস্তিত্বের কোন সন্ধান পাই, তাহলে তা হবে বিজ্ঞানের জন্য একটি বৈপ্লবিক ঘটনা এবং এর মাধ্যমে মানব প্রজাতি যেভাবে তাদের নিজেদের দেখে এবং মহাবিশ্বে তার যে অবস্থান, সে ব্যাপারে বর্তমান দৃষ্টিভঙ্গির বিশাল পরিবর্তন আসবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।