জুমবাংলা ডেস্ক : ঈদগাহ মাঠকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামের বিরোধের জেরে আইন-শৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কায় একটি ঈদগাহ মাঠে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার দেওপাড়া ইউনিয়নের ভোজদত্ত গ্রামে ওই ঈদগাহ মাঠটি অবস্থিত। ঈদুল আজহার দিনের জন্য এ আদেশ জারি করেন জেলা প্রশাসক জসীম উদ্দীন হায়দার।
আদেশে বলা হয়েছে, ঈদুল আজহার দিন বৃহস্পতিবার (২৯ জুন) ভোর ৫টা থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারার আদেশ বলবৎ থাকবে।
টানা ১১ বছর ধরে ওই ঈদগাহ মাঠে ১৪৪ ধারা জারি করে আসছে প্রশাসন। যার কারনে ঈদের দিন ওই মাঠে নামাজ আদায় করতে পারন না মুসল্লীরা।
এ ছাড়াও ঈদগাহ মাঠের ৪০০ গজ পরিসীমার মধ্যে সকল প্রকার সমাবেশ, শ্লোগান, মিছিল, শোভাযাত্রা, পিকেটিং, মাইক্রোফোন ব্যবহার, ঢাকলোল পেটানো, গোলযোগ সৃষ্টি, লাঠিসোটা, অস্ত্র ও বিস্ফোরক দ্রব্যাদি পরিবহন এবং সর্বসাধারণের বেআইনি অনুপ্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
স্থানীয়দের থেকে জানা যায়, ঈদগাহ মাঠটির বয়স প্রায় ২০০ বছর।
মাঠের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মূলত বিরোধ দুই গ্রামের মধ্যে। গ্রাম দুটি হলো- ঘাটাইল উপজেলার ভোজদত্ত ও পাশ্ববর্তী কালিহাতী উপজেলার বীরবাসিন্দা। মাঠের আধিপত্য নিয়ে ভোজদত্তসহ আশপাশের পাঁচটি গ্রাম ও পার্শ্ববর্তী কালিহাতি উপজেলার বীরবাসিন্দা গ্রামের লোকদের মধ্যে বিরোধের সৃষ্টি হয় ২০১২ সালে। বিরোধ নিরসনে ওই বছরের ২১ নভেম্বর দুই উপজেলার তৎকালীন নির্বাহী কর্মকর্তাদের (ইউএনও) উপস্থিতিতে বৈঠক হয়।
বৈঠক শেষে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সংঘর্ষে বীরবাসিন্দা গ্রামের আব্দুল গফুর নামের এক ব্যক্তি গুরুতর আহত হন। পরে সংঘর্ষ ও অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটার আশঙ্কায় ওই বছরের ২৬ নভেম্বর ঈদুল আজহার দিন জেলা প্রশাসকের নির্দেশক্রমে স্থানীয় প্রশাসন ভোজদত্ত ঈদগাহ মাঠের আশপাশের এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে।
ওই বছর ঈদের সপ্তাহখানেক পর ১ ডিসেম্বর আহত গফুর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। পরে এ নিয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন গফুরের ছেলে মোস্তফা কামাল।
মামলায় আসামি করা হয় ১৭ জনকে। পরবর্তীতে পুলিশ আদালতে ১৩ জনের নামে প্রতিবেদন পাঠায়। মামলাটি বর্তমানে বিচারাধীন রয়েছে বলে জানা গেছে।
আব্দুল গফুরের মৃত্যুর পর দুই গ্রামের মানুষের মধ্যে বিরোধ আরো বেড়ে যায় এবং উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ওই ঘটনার পর থেকে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় প্রত্যেক ঈদেই ভোজদত্ত ঈদগাহ মাঠে জেলা প্রশাসকের নির্দেশক্রমে ১৪৪ ধারা জারি করে আসছে প্রশাসন।
এ ব্যাপারে ঘাটাইল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনিয়া চৌধুরী বলেন, ‘ঈদগাহ মাঠ নিয়ে ঘাটাইল ও কালিহাতী উপজেলার সীমান্তবর্তী দুই গ্রামের মধ্যে বিরোধের কারণে এই ধারা জারি করে আসছে জেলা প্রশাসন। ওই আদেশ প্রতি বছরের ন্যায় এবারও আমরা বাস্তবায়ন করছি।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।