জুমবাংলা ডেস্ক : অবশেষে রাজধানীর বাজারে কমতে শুরু করেছে পেঁয়াজের দাম। দাম আরও কমবে বলে জানাচ্ছেন বিক্রেতারা। দেশি নতুন পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ায় পেঁয়াজের এ দরপতন বলে জানা গেছে।
সোমবার (১১ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর কারওয়ান বাজার সরেজমিনে ঘুরে এ তথ্য জানা গেছে।
দাম কমার বিষয়ে বিক্রেতারা জানান, দেশি নতুন পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ায় একদিনে কেজিতে ২০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ১২০ টাকা দরে। যেটি গতকালও (১০ ডিসেম্বর) ১৪০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়েছে। একদিকে নতুনের সরবরাহ বৃদ্ধি, অন্যদিকে ক্রেতা কম- দুইয়ে মিলে দেশি পুরান পেঁয়াজের দামও কেজিতে কমেছে ১০ টাকা। বর্তমানে প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকায়।
বাজারে দাম কমছে ভারতীয় পেঁয়াজেরও। এবিষয়ে এক বিক্রেতা বলেন, গতকাল যে মানের ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে সর্বনিম্ন ১৬০ টাকা কেজি দরে, আজ সেই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায়। তাছাড়া পুরান দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৯০ টাকা থেকে ২০০ টাকা।
এদিকে পাতা পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০ টাকা করে কমেছে। এবিষয়ে আরেকজন বিক্রেতা বলেন, ‘গতকাল প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭০ টাকা দরে কিনে ৮০ টাকায় বিক্রি করেছি। আজ ৬০ টাকায় কিনে ৭০ টাকায় বিক্রি করছি।
দাম কমার বিষয়ে পেঁয়াজ বিক্রেতারা জানান, গতকাল পেঁয়াজের সরবরাহ কম ছিল। আজকে আবার সরবরাহ বেড়েছে। কিন্তু ক্রেতা কম। এর জন্য দামও কম। আবার আড়তেও দাম কম। তাছাড়া দেশি পেঁয়াজ বাজারে ঢুকছে। কাজেই আরও দাম কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, গত দুই অর্থবছরের পুরো ১২ মাস ধরে যে পরিমাণ পেঁয়াজ আমদানি হয়েছে, এবার গত সাড়ে ৫ মাসেই আমদানি হয়েছে প্রায় সেই পরিমাণ। এ অবস্থায় আমদানি বন্ধ করলেও দেশের বাজারে কোন সমস্যা হবে না বলে জানাচ্ছেন আমদানিকারকরা।
বিক্রেতাদের দাবি, ক্রেতারা আতঙ্কিত হয়ে প্রয়োজনের তুলনায় বেশি না কিনলে দেশের বাজারে দাম বৃদ্ধির কোনো আশঙ্কা নেই।
এর আগে ৭ ডিসেম্বর অভ্যন্তরীণ বাজারে পেঁয়াজের সরবরাহ ও দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিত্যপণ্যটির রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে ভারত। এই নির্দেশনা ৮ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হয়েছে। যা কার্যকর থাকবে আগামী বছরের ৩১ মার্চ পর্যন্ত। এর পরেই রাতারাতি লাফিয়ে প্রতি কেজি ২০০ টাকার ওপরে উঠে যায় পেঁয়াজের দাম।
এদিকে পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে ভারত থেকে ৫২ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ দ্রুত দেশে আনার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এরইমধ্যে ভারতে বাংলাদেশ দূতাবাসকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চিঠি পাঠিয়েছে। রোববার (১০ ডিসেম্বর) এ তথ্য সময় সংবাদকে নিশ্চিত করেছেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য ও জনসংযোগ কর্মকর্তা হায়দার আলী।
তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশ ভারত থেকে আমদানি করতে ঋণপত্র (এলসি) খোলা ৫২ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ যত দ্রুত সম্ভব দেশে আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এছাড়া দেশে যৌক্তিক মূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি নিশ্চিত করতে কঠোর মনিটরিং করার জন্য সব জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
মূলত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভারতীয় দূতাবাসে চিঠি পাঠানো হয়েছে জানিয়ে হায়দার আলী বলেন, প্রাইভেট সেক্টরের ৫২ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমাদানির এলসি খোলা আছে। সেগুলো যাতে ছাড়া হয় সে বিষয়ে তাদের অনুরোধ করা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে দ্রুতই এসব পেঁয়াজ দেশে আসবে।
এছাড়া, ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) জন্য ভারত থেকে আমদানির লক্ষ্যে ঋণপত্র (এলসি) খোলা ৫ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজের মধ্যে ১ হাজার ৬০০ টন এরইমধ্যে দেশে এসেছে। বাকি ৩ হাজার ৪০০ মেট্রিক টন পেঁয়াজ দ্রুত ছাড় করিয়ে আনার লক্ষ্যে কাজ চলছে বলে জানান হায়দার আলী।
ভারতের নিষেধাজ্ঞা আরোপের আগেই সেখান থেকে ৫২ হাজার মেট্রিক টন পেঁয়াজ আমদানির জন্য এলসি খোলা হয়। এখন এই পেঁয়াজ দ্রুত দেশে আনার প্রক্রিয়া শুরু করেছে সরকার।
৪০ হাজার টাকার মধ্যে দেশের বাইরের ৫টি স্থান ঘুরতে যেতে পারেন
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) ১০ ডিসেম্বরের হালনাগাদ তথ্য বলছে, বাজারে এখন দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা দরে। আর আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৭০ টাকায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।