জুমবাংলা ডেস্ক : আর কয়েকদিন পরই পবিত্র রমজান মাস। রমজানকে সামনে রেখে পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশেই খাদ্যপণ্যের দাম কমলেও বাংলাদেশে এর উল্টো চিত্র দেখা যায়। অসাধু কিছু ব্যবসায়ী খাদ্যের মজুদ করে দাম বাড়িয়ে দেয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন নিম্ন আয়ের মানুষেরা। তবে এসব অসাধু ব্যবসায়ীর মাঝেও আছে ব্যতিক্রম। তেমনই একজন ব্যবসায়ী শাহ আলম। যিনি গতবছরও রমজানে মাত্র ১ টাকা লাভে পণ্য বিক্রি করেছিলেন। এবারও নিম্নবিত্ত ও দরিদ্র মানুষের কথা বিবেচনায় রেখে ১ টাকা লাভে পণ্য বিক্রি শুরু করেছেন তিনি।
ব্যবসায়ী শাহ আলম চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের চরকুমিরা গ্রামের কাজল হক মালের ছেলে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শাহ আলম পণ্য কেনা ও পরিবহন খরচ বাদ দিয়ে মাত্র এক টাকা লাভে বিক্রি করেন। তার পণ্য বিক্রির শুরুর দিন থেকে ব্যাপক সাড়া পেয়েছেন। স্থানীয়রা রমজান মাসের জন্য আগাম পণ্য ক্রয় করছেন। পণ্যের মূল্য তালিকাও দোকানে টানিয়ে দিয়েছেন তিনি।
গত বছরের ন্যায় এবারও পুরো রমজান মাসে শাহ আলম যে-সব পণ্য বিক্রি করবেন তার মধ্যে আছে মুড়ি, ছোলা (বুট), খেজুর, খেসারির ডাল, বেসন, সয়াবিন তেল, চিড়া ইত্যাদি। এসব পণ্য কেজিতে মাত্র ১ টাকা লাভে বিক্রি করবেন তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শাহ আলম বলেন, আমি এখানে ব্যবসা করি প্রায় পনেরো বছর ধরে। গত বছর গরিব ও অসহায় মানুষের কথা চিন্তা করে ১ টাকা লাভে ইফতার বিক্রি শুরু করি। এতে ক্রেতাদের ব্যাপক সাড়া পাই। তাই এবছরও রমজানকে সামনে রেখে ১ টাকায় পণ্য বিক্রি শুরু করেছি।
তিনি আরও বলেন, বর্তমান বাজারে অনেক সিন্ডিকেট রয়েছে। তাদের কারণে পণ্যের দাম বেড়ে যায়। এতে মধ্যবিত্ত, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও দরিদ্র পরিবারগুলো বিপাকে পড়েন। তাই গরিব, দুস্থ ও অসহায় পরিবারের কথা মাথায় রেখে গত বছরের ন্যায় এবারও রমজানের ইফতারের পণ্য বিক্রি শুরু করেছি। তাছাড়া এখান থেকে এলাকার স্থানীয় বাজারে যাতায়াতে প্রায় ৪০ টাকা ভাড়া লাগে। বাজারে ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজি পণ্যে ৫ টাকার মতো লাভ করে থাকে। তাই আমি উদ্যোগ নিয়েছি সর্বনিম্ন লাভে পণ্য বিক্রি করার।
স্থানীয় বাসিন্দা রুবেল হোসেন বলেন, আমাদের গ্রামের শাহ আলম কাকা রমজান উপলক্ষ্যে ইফতার সামগ্রীর পণ্য মাত্র ১ টাকা লাভে বিক্রি করেন। তিনি এর আগে গত বছরও এভাবে পণ্য বিক্রি করেছিলেন। বাজারে দাম বেশি থাকায় শাহ আলমের দোকান থেকে পণ্য কিনি। তাছাড়া বাজারে যেতে সময় ও ভাড়ার খরচ লাগে।
আব্দুল মালেক নামে আরেকজন ক্রেতা বলেন, শাহ আলমের উদ্যোগকে স্বাগত জানাই। তিনি সুন্দর একটি উদ্যোগ নিয়েছেন। আমরা তার কাছে কেনাকাটা করি।
স্থানীয় আব্দুল ওহাব আলী নামে এক বৃদ্ধ বলেন, এখানে স্থানীয় বাজার থেকে ১-২ টাকা কমে পণ্য কেনা যায়। এখান থেকে বাজারে যাতায়াতে গাড়ি ভাড়া লাগে ৪০ টাকা। এখানে খেজুর, ডাল, তেল, চিনিসহ সব কিছু পাওয়া যায়। তাই আমরা বাজার থেকে পণ্য না কিনে ওনার কাছ থেকেই কিনি।
ফরিদগঞ্জ পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাজ্জাদ হোসেন টিটু বলেন, আমার ওয়ার্ডের চরকুমিরা গ্রামের শাহ আলম মাল রমজান উপলক্ষ্যে ইফতার সামগ্রী প্রতি কেজিতে ১ টাকা লাভে বিক্রি শুরু করেছেন। তিনি এর আগে গত বছর একইভাবে পণ্য বিক্রি করেছেন। গত বছরের ন্যায় এবারও প্রতি কেজি পণ্যতে ১ টাকা লাভে পণ্য বিক্রি করাতে এলাকার মানুষ উপকৃত হচ্ছে। রমজান মাসে সাধারণ মানুষের পাশে এভাবে দাঁড়ানোর জন্য তাকে ধন্যবাদ জানাই। সূত্র : ঢাকা পোস্ট
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।