বিজ্ঞান ও প্রযক্তি ডেস্ক : আধুনিক জীবনকের অপরিহার্য এক জিনিস হিসেবে হয়ে উঠেছে স্মার্টফোন। অবস্থা এমন যে নাওয়া, খাওয়া, ঘুম কিংবা ভালো-মন্দ কোনো মুহূর্তই কাটে না পুরো জীবনযাপনের মোড় ঘুরিয়ে দেওয়া ডিভাইসটি ছাড়া। এটি এখন শুধু আর ফোন নয়, বরং কম্পিউটারসহ নানা ডিভাইসের প্রয়োজনীয়তা মেটাচ্ছে।
তবে স্মার্টফোন আগমনের মাত্র কয়েক বছর আগেও ফোনে ছিল একটু ভিন্নতা। তুমুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল বেশ কিছু মোবাইল ফোন। চলুন আবার স্মৃতিচারণ করা যাক সেসব ফোনের।
নোকিয়া ৩৩১০: আধুনিক মোবাইল ফোনের ইতিহাস মনে করতে গেলে নোকিয়াকে ছাড়া সেই ইতিহাস লেখা সম্ভব নয়। এই প্রতিষ্ঠানটি একাধিক জনপ্রিয় মোবাইল ফোন বাজারে এনেছে। ২০০০ সালে তারা বাজারে ছাড়ে ৩৩১০ মডেলের ফোন। কাস্টমাইজেবল এক্সপ্রেস-অন কভার থাকা প্রথম মোবাইল ফোন এটি। এই ফোনের মাধ্যমেই জনপ্রিয় “স্নেক টু” গেমের সঙ্গে মানুষের পরিচয় হয়। শুধু ফোনটিই নয়, জনপ্রিয় হয়েছিল সেই গেমও। ফলে এখনও এই মোবাইলকে মনে রেখেছেন ব্যবহারকারীরা।
নোকিয়া ১১১০: বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া মোবাইল ফোনের একটি নোকিয়া ১১১০ মডলের ফোনটি। পাতলা আকার, দেখতে আকর্ষণীয় ও দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি থাকায় এটি ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। ২০০৩ সালে বাজারে আসা ফোনটিতে প্রথমবারের মতো টর্চলাইট যুক্ত করা হয়। এই ফোনে ৫০টি মেসেজ ধারণ করে রাখা যেত। এছাড়া দেওয়া ছিল সুন্দর সব রিংটোন, যা এখনও মানুষের স্মৃতিতে ভাস্বর। বলা হতো, এই ফোন অনেক উঁচু থেকে পড়লেও অক্ষত থাকত। সব মিলিয়ে আইকনিক ফোনের তালিকায় এটি থাকবে সবার ওপরে।
নোকিয়া ৬৬০০: ২০০৩ সালে বাজারে আনা এই মোবাইল ছিল স্মার্টফোনের শুরুর দিককার একটি ডিভাইস। সিমবিয়ান ওএস অপারেটিং সিস্টেম, ভিজিএ (০.৩ মেগাপিক্সেল) রেজ্যুলেশন রিয়ার-ক্যামেরা এবং ভিডিও কল করার ব্যবস্থা ছিল এই ফোনে। ৬ মেগাবাইটের এক্সপান্ডেবল মেমোরিসহ ফোনটিতে ছিল ফাইভ-ওয়ে জয়স্টিক এবং ২.১৬ ইঞ্চির টিএফটি ডিসপ্লে।
ব্ল্যাকবেরি পার্ল ৮১০০: ব্ল্যাকবেরি মোবাইল একসময় আভিজাত্যের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হতো। ২০০৬ সালে এই ফোনের ব্ল্যাকবেরি পার্ল ৮১০০ সিরিজের ফোন বাজারে আনে। উন্নত কি-বোর্ড আর সুনির্দিষ্ট নেভিগেশনের সঙ্গে ছিল ট্র্যাকবল পদ্ধতি। প্রতিষ্ঠানের প্রথম ডিভাইস হিসেবে এটিতে যুক্ত করা হয় ১.৩ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা।
নোকিয়া এন ৯৫: ২০০৭ সালে এন সিরিজের এই ফোন আনে নোকিয়া। এটি ছিল এই প্রতিষ্ঠানের অন্যতম সেরা ফোনের একটি। সিমবিয়ান এস ৬০ দিয়ে পরিচালিত সেই ফোনে ছিল টু-ওয়ে স্লাইডিং মেকানিজম, যার মাধ্যমে নিউমারিক কি প্যাড বা মিডিয়া প্লেব্যাক বাটনে ঢোকা যেত।
নোকিয়ার এই ফোনে ৫ মেগাপিক্সেল রিয়ার-ক্যামেরা, ব্লুটুথ, ওয়াই-ফাই ছিল। একই বছরে অ্যাপলের প্রথম আইফোনও বাজারে আসে। ফোনে এটিকে সেই সময় টক্কর দিতে হয়েছে আইফোনের সঙ্গে। সেখানে কতটা জয়ী নোকিয়া সেই বিচারের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হলো, ব্যবহারকারীদের কাছে এই ফোন এখনও স্মৃতির পাতায় ধরে রাখার মতোই একটি ডিভাইস।
অ্যাপল আইফোন: মার্কিন প্রতিষ্ঠান অ্যাপল ২০০৭ সালে মোবাইল ফোনের জগতে নতুন এক যুগের সূচনা করে। এই ফোনের মধ্য দিয়েই ফুলস্ক্রিন টাচ মোবাইলের যাত্রা শুরু হয়। এমনকি সেই মোবাইলে অন-স্ক্রিন কীবোর্ড, কোয়াডব্যান্ড জিএসএম এবং অ্যাক্সিলারোমিটার, প্রক্সিমিটি সেন্সর এবং অ্যামবিয়েন্ট লাইট সেন্সরের মতো ফিচার ছিল। সেই মোবাইল রীতিমত ইতিহাস গড়ে তোলে।
স্যামসাং গ্যালাক্সি নোট: অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনের প্রায় সমার্থক একটি নাম স্যামসাং। ২০১১ সালে স্যামসাং গ্যালাক্সি নোটের মধ্য দিয়ে এই প্রতিষ্ঠান নোট সিরিজের ফোন বাজারে আনে। ৫.৩ ইঞ্চির টাচস্ক্রিন আর মুঠোয় রাখার চমৎকার আকার এই ফোনটিকে জনপ্রিয় করে তোলে। সেই ফোনের পথ ধরেই পরবর্তীতে বাজারে আসে ফুলস্ক্রিন মোবাইলের প্রচলন। ফলে এটিকে এই প্রতিষ্ঠানের আইকনিক মোবাইল ফোন বলেই ধরা হয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।