আন্তর্জাতিক ডেস্ক : বিশাল প্রচীর বিশিষ্ট পৃথিবীর সপ্তাশ্চার্য চীনের ‘গ্রেট ওয়াল’ (মহাপ্রচীর)। পাহাড় ও সবুজ প্রকৃতির মাঝে পাথর ও মাটির তৈরি বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘ ও সুউচ্চ প্রচীর। চাঁদ থেকেও নাকি দেখা মেলে এর সৌন্দর্য। ইতহাস বলছে , ৫ম শতক থেকে ১৬শ শতক পর্যন্ত সময়ে চীনের উত্তর সীমান্ত রক্ষা করার জন্য এ প্রাচীরটি নির্মাণ করা হয়।
১৬২১ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি বিস্তৃত। ১৫টি প্রদেশ, ৯৭টি প্রিফেকচার ও ৪০৪টি কাউন্টির মধ্য দিয়ে যাওয়া অসম্ভব সুন্দর এক বিস্ময়। বিশ্বের সপ্তাশ্চর্যের এ বিস্ময় ঘিরে রয়েছে ৬ চমক। অনবদ্য শোভায় নির্মাণ করা হয়েছে ৬টি পর্যটন কেন্দ্র।
ইয়ংতাই টার্টল সিটি : মহাপ্রচীরের ইয়েলো রিভার (হলুদ নদীর) ডিফেন্স লাইনের অংশ হিসাবে মিং রাজবংশের (১৩৬৮-১৬৪৪) সময়কালে টার্টল সিটি (দুর্গ শহর) নির্মাণ করা হয়। প্রায় ২ হাজার মানুষ ও ৫০০ অশ্বারোহী ইউনিটের সাহায্যে ১৬০৮ সালে নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হয়েছিল। এটি চীনের উত্তর কেন্দ্রীয় গানসু প্রদেশের জিংতাই কাউন্টির সিতান শহরে অবস্থিত। এখানে আসল কচ্ছপ না থাকলেও অনন্য আকৃতির কারণে টার্টল নামে ডাকা হয়। পর্যাপ্ত আলো-বাতাস ও সুস্বাদু খাবারের জন্য পর্যটকের আকর্ষণ কেন্দ্র হয়ে উঠেছে।
মুতিয়ানু ও জিয়ানকু : মহাপ্রচীরটির দুটিসংলগ্ন অংশ। বেইজিংয়ের পাহাড়ের চূড়া বরাবর প্রায় ২৫ কিলোমিটার পর্যন্ত প্রসারিত। মিং রাজবংশের মহাপ্রাচীর টিকিয়ে রাখার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্থান। জানা যায়, এই অংশটুকু নির্মাণে শতাব্দী ধরে লাখ লাখ শ্রমিক কাজ করেছেন। শহরের কেন্দ্রস্থল বেইজিং থেকে ৯০ মিনিটের (গাড়িতে যানজট ছাড়া) পথ। মুতিয়ানু পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে সেরা অংশ।
বাতাইজি : মহাপ্রাচীর ঘেঁষে মতিয়ানলিং শহরের ঠিক ভেতরে বাতাইজি গ্রামটি অবস্থিত। ১৮৭৬ সালে একজন জার্মান ধর্মপ্রচারকের নির্দেশে নির্মাণ করা হয়েছিল। এখান থেকে মহাপ্রচীর ও সবুজ পাহাড়ের মধ্যে একটি বিস্ময়কর বৈসাদৃশ্য দেখা যায়। গ্রীষ্মের শেষের দিকে বাতাইজি দেখার জন্য উপযুক্ত সময়।
লাওনিউওয়ান : ১৪৬৭ সালে মহাপ্রচীর ও হলুদ নদীর মিলিত স্থানে লাওনিউওয়ান দুর্গটি নির্মাণ করা হয়। এটি শানসি প্রদেশের জিনঝো শহরের পিয়াংগুয়ান অঞ্চলে অবস্থিত। গ্রীষ্মের শেষের দিকে বা শরতের শুরুতে এখানে ভ্রমণ করার জন্য দুর্দান্ত সময়। হাতেগোনা কয়েকটি জায়গা আছে যেখানে মহাপ্রাচীর জলের সঙ্গে মিলিত হয়। তাদের মধ্যে, এই পর্যটন কেন্দ্রটি সবচেয়ে অত্যাশ্চর্য। এই এলাকার সবচেয়ে বিখ্যাত টাওয়ার ওয়াংহে টাওয়ার (আক্ষরিক অর্থে নদী দেখার টাওয়ার)। ১৫৪৪ সালে নির্মিত হয়েছিল।
ফেয়ারি টাওয়ার : ১৩৭৩ সালে সিমাটাইতে মহাপ্রাচীর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। মিং রাজবংশ জুড়ে পর্যায়ক্রমে প্রসারিত এবং শক্তিশালী করা হয়েছিল। ফেয়ারি টাওয়ার হলো সিমাতাইর দেওয়ালের সবচেয়ে পরিচিত টাওয়ারগুলোর মধ্যে একটি। এখান থেকে অবিশ্বাস্য সুন্দর দৃশ্য উপভোগ করা যায়।
দুশিকৌ : দুশিকৌ সম্রাট জিয়াজিংয়ার (১৫০৭-১৫৬৭) শাসনামলে নির্মিত হয়। এর কিছু জায়গায় সাত মিটার লম্বা পাথরের স্তূপ দ্বারা এটি তৈরি করা হয়েছিল। এটি হেবেই প্রদেশের চিচেংর দুশিকৌ শহরের রাস্তার ঠিক পাশে অবস্থিত। গ্রীষ্মকালে পর্যটন কেন্দ্রটি পরিদর্শনের জন্য উপযুক্ত সময়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।