ধর্ম ডেস্ক : শবে বরাত ইসলাম ধর্মে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও মহিমান্বিত রাত, যা হিজরি ক্যালেন্ডারের শাবান মাসের ১৪ তারিখ দিবাগত রাতে পালিত হয়। ফারসি শব্দ ‘শব’ অর্থ রাত এবং ‘বরাত’ অর্থ মুক্তি, শান্তি ও সৌভাগ্য। আরবিতে একে বলা হয় ‘লাইলাতুল বরাত’। হাদিসের বর্ণনা অনুযায়ী, এ রাতে মহান আল্লাহ তার বান্দাদের পাপ ক্ষমা করেন এবং জাহান্নাম থেকে মুক্তির সুযোগ দেন।
শবে বরাতের পরের দিনের রোজার বিধান
শবে বরাতের পরের দিন, অর্থাৎ শাবান মাসের ১৫ তারিখে অনেকেই রোজা রাখেন। হাদিসের আলোকে প্রতি চান্দ্র মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখে রোজা রাখা সুন্নত, যাকে ‘আইয়ামে বীজ’ বলা হয়। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিজেও এ তিন দিন রোজা রাখতেন এবং সাহাবীদের তা রাখতে উদ্বুদ্ধ করতেন (তিরমিজি ৭৬০, ৭৬১)।
১৫ শাবান রোজার ফজিলত
কিছু দুর্বল হাদিসে ১৫ শাবানের নির্দিষ্ট রোজার কথা উল্লেখ থাকলেও, বিশুদ্ধ মতানুসারে এটি পৃথকভাবে সুন্নত বা মুস্তাহাব নয়। তবে, মাসের ১৩, ১৪ ও ১৫ তারিখ একত্রে রোজা রাখা সুন্নত।
শবে বরাতের ইতিহাস
একবার উম্মুল মু’মিনিন হজরত আয়েশা (রা.) গভীর রাতে দেখলেন, নবীজি দীর্ঘ সেজদায় রয়েছেন। সন্দেহ হলে তিনি নবীজির বৃদ্ধাঙ্গুলি ধরে নাড়া দেন। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) সাড়া দেন এবং জানান, এটি অর্ধ শাবানের রাত, যেখানে আল্লাহ বান্দাদের ক্ষমা ও রহমত দান করেন। তবে যারা বিদ্বেষ পোষণ করে, তাদের জন্য এ ক্ষমা প্রযোজ্য নয়।
শবে বরাতের সঠিক আমল
শবে বরাত উদযাপনের জন্য আল্লাহ প্রদত্ত নির্দেশনা হলো ইবাদত করা, ক্ষমা প্রার্থনা ও নফল নামাজ আদায় করা। সাহাবারা এ রাতে বেশি বেশি ইবাদত করতেন। তবে, আনন্দ উৎসব বা আতশবাজি ইসলামী শরিয়ত অনুযায়ী অনুমোদিত নয়।
শবে বরাত ইবাদতের জন্য বরকতময় একটি রাত, যেখানে আল্লাহর রহমত লাভের সুযোগ রয়েছে। পরের দিন ১৫ শাবানসহ ১৩ ও ১৪ তারিখ মিলিয়ে তিন দিন রোজা রাখাই উত্তম। তবে শুধুমাত্র ১৫ শাবান পৃথকভাবে সুন্নত মনে করা উচিত নয়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।