ধর্ম ডেস্ক : শাবান মাসের ১৪ তারিখের দিবাগত রাতকে শবে বরাত বলা হয়। হাদিসে একে “লাইলাতুন নিসফে মিন শাবান” বা মধ্য শাবানের রাত বলা হয়েছে।
শবে বরাতের ফজিলত
বিশিষ্ট সাহাবি মুয়াজ বিন জাবাল (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী কারিম (সাঃ) বলেছেন—
“আল্লাহ তায়ালা অর্ধ শাবানের রাতে তার সৃষ্টির দিকে রহমতের দৃষ্টি দেন এবং মুশরিক ও বিদ্বেষ পোষণকারী ছাড়া সবাইকে ক্ষমা করে দেন।” (ইবনে হিব্বান, হাদিস: ৫৬৬৫)
এই রাতে আল্লাহর রাসূল (সাঃ) দীর্ঘ সময় নফল নামাজ আদায় করতেন। হজরত আয়েশা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন—
“একবার রাসূল (সাঃ) এত দীর্ঘ সেজদা করলেন যে, আমি মনে করলাম তিনি হয়তো ইন্তেকাল করেছেন। আমি তার বৃদ্ধাঙ্গুলি নাড়া দিলে তিনি নড়লেন এবং নামাজ শেষে বললেন— ‘তুমি কি জানো, এটা কোন রাত?’ আমি বললাম, ‘আল্লাহ ও তার রাসূলই ভালো জানেন।’ তখন তিনি বললেন— ‘এটি অর্ধ শাবানের রাত (শবে বরাত)। আল্লাহ এই রাতে ক্ষমাপ্রার্থনাকারীদের ক্ষমা করেন, অনুগ্রহপ্রার্থীদের অনুগ্রহ করেন এবং বিদ্বেষ পোষণকারীদের তাদের অবস্থাতেই ছেড়ে দেন।'” (শুআবুল ঈমান, বায়হাকি: ৩/৩৮২-৩৮৩)
শবে বরাতের নামাজের নিয়ম
- শবে বরাতে নফল নামাজ পড়া উত্তম, তবে নির্দিষ্ট কোনো নিয়ম নেই।
- সাধারণ নফল নামাজের মতোই পড়তে হবে, আলাদা নিয়ত বা নিয়ম করা বিদআত হিসেবে গণ্য হবে।
- রাসূল (সাঃ) ও সাহাবারা এই রাতের জন্য নির্দিষ্ট কোনো নামাজের পদ্ধতি অনুসরণ করেননি।
শবে বরাতের দোয়া
শবে বরাতে নির্দিষ্ট কোনো দোয়া নেই। তবে রাসূল (সাঃ) রজব ও শাবান মাসে আল্লাহর কাছে বরকতের জন্য যে দোয়াটি করেছেন, তা পড়া যেতে পারে—
আরবি:
اللَّهُمَّ بَارِكْ لَنَا فِي رَجَبٍ، وَشَعْبَانَ، وَبَلِّغْنَا رَمَضَانَ
উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মা বারিক লানা ফি রজবা ওয়া শাবান, ওয়া বাল্লিগনা রমাদান।
অর্থ:
“হে আল্লাহ! রজব ও শাবান মাস আমাদের জন্য বরকতময় করুন এবং আমাদের রমজান পর্যন্ত পৌঁছে দিন।” (মুসনাদে আহমাদ, হাদিস: ২৫৯)
বিদআত থেকে সাবধানতা
* শবে বরাত উপলক্ষে কোনো বিশেষ নামাজ, মোনাজাত বা ইবাদতের ধরন নির্ধারণ করা বিদআত।
* রাসূল (সাঃ) বলেছেন—
“দীনের মধ্যে নতুন কিছু যোগ করা বিদআত, আর প্রত্যেক বিদআত ভ্রষ্টতা, যার পরিণাম জাহান্নাম।” (মুসলিম, হাদিস: ১৫৩৫)
শবে বরাত একটি বরকতময় রাত। তবে ইবাদতের ক্ষেত্রে কোরআন-হাদিসের নির্দেশনা অনুসরণ করাই উত্তম। আল্লাহ আমাদের শুদ্ধভাবে আমল করার তাওফিক দিন। (আমিন)।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।