একসময়ের আলোচিত বলিউড অভিনেত্রী অচলা সচদেব। এক যুগ আগে এই অভিনেত্রী পাড়ি জমিয়েছেন না ফেরার দেশে। তার মৃত্যুর আগের ১২ বছর যেন সিনেমার গল্পকেও হার মানায়। স্বামীর মৃত্যুর পর একা হয়ে পড়েন শাহরুখ খানের ‘কাভি খুশি কাভি গম’ সিনেমার এই অভিনেত্রী।
দুই সন্তানের (এক ছেলে, এক মেয়ে) মা ছিলেন, তবে জীবনের শেষ মুহূর্তে সন্তাদের ভালোবাসা জোটেনি অভিনেত্রীর ভাগ্যে। তার স্বামীর মৃত্যুর পর একমাত্র ছেলে আমেরিকায় চলে যান। প্রথমদিকে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলেও পরে কোনো খোঁজ নিতেন না। অন্যদিকে একমাত্র মেয়েও অভিনেত্রীর সঙ্গে সম্পর্কের বিচ্ছেদ করেন।
জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত পুনের নিজস্ব দুই কামরার ফ্ল্যাটে একাই থেকেছেন। এক দশকেরও বেশি তার বাসায় দেখাশোনার জন্য জনসেবা ফাউন্ডেশন একজন সেবিকা নিয়োগ করেছিল। কয়েক মাস কেটেছিল পুনে হাসপাতালের বিছানায়। মৃত্যুর আগে নিজের বাড়িটি জনসেবা ফাউন্ডেশনের নামে লিখে দিয়েছিলেন।
তার মৃত্যুর পর কেবল অমিতাভ বচ্চন আর একতা কাপুর শ্রদ্ধা জানান। ছেলে জ্যোতিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে এসে কজন আত্মীয়ের সঙ্গে শেষকৃত্যে যোগ দেন। বাকিটা যেন মিলে যায় ওপি নেয়ার, ভরৎ ভূষণ, ভগবান দাদা প্রমুখ তারকার নিঃসঙ্গ পরিণতির গল্পে।
বলিউড বরাবরই নির্মম। বিশেষ করে যাদের সেভাবে কাজে লাগে না; তাদের কেউ মনে রাখে না।
অচলার ঘনিষ্ঠ বন্ধু রাজীব নন্দা তার মৃত্যুর পর ভারতীয় গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, শেষ সময়ে ইন্ডাস্ট্রির পরিচিতদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও খুব বেশি সাড়া পাননি।
১৯৫০-এর দশকে ‘দিলরুবা’ ছবিতে দেব আনন্দের বোনের চরিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমেই তার চলচ্চিত্রযাত্রা শুরু। পঞ্চাশের দশকে ‘মাদার, ‘রাহি, ‘ফুটপাত, ‘চাঁদনি চক, ‘আজাদ, ‘মিস মেরি’, ‘আদালত’-এর মতো জনপ্রিয় ছবিতে অভিনয় করেছিলেন।
১৯৬৫ সালে ‘ওয়াক্ত’সিনেমা মুক্তির পরই তার ক্যারিয়ার নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যায়। এই সিনেমার ‘আয়ে মেরি জোহরা জবীন’- গানটি এখনও শ্রোতাদের মুখে ফেরে।
উল্লেখযোগ্য সিনেমার মধ্যে রয়েছে ‘মেরা নাম জোকার’, ‘জুলি, ‘হকিকত’, ‘হিমালয় কি গোদ মে’-এর মতো জনপ্রিয় সব ছবি।
১৯২০ সালে পেশোয়ারে জন্মগ্রহণ করেন অচলা সচদেব। শতাধিক ছবিতে অভিনয়ের পর ১৯৭০-এর দশকে পুনেতে চলে যায়। এর পর ব্রিটিশ নাগরিক ক্লিফোর্ড ডগলাস পিটার্সকে বিয়ে করেন। যার সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন যশ চোপড়া। দুজনেরই এর আগে বিয়ে হয়েছিল।
ভিসা পেতে কত টাকা থাকতে হবে ব্যাংকে? জেনে নিন জনপ্রিয় দেশগুলোর শর্ত
বলিউডে অবহেলার শিকার আর সন্তানদের কাছে ভালোবাসা থেকে বঞ্চিত হয়ে ২০১২ সালে ৯১ বছর বয়সে মারা যান। তিনি চলে গেলেও তার রেখে যাওয়া সৃজনশীল কর্ম অনুরাগীদের মনে আজও বেঁচে রেখছে।