স্পোর্টস ডেস্ক : শেখ হাসিনা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের নির্মাণ শুরু হবে, হবে করে কয়েক দফায় পিছিয়েছে। নতুন করে সরকারের কাছে স্টেডিয়াম নির্মাণের ট্যাক্স মওকুফের আবেদনের কারণে নির্মাণ শুরু হতে বিলম্ব হচ্ছে। যদিও শনিবার গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান মাহবুব আনাম গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন খুব শিগগিরই পুরোদমে নির্মাণ কাজ শুরু হবে। আগামী দুই বছরের মধ্যে প্রায় ৭০০ কোটি টাকায় স্টেডিয়ামটি নির্মিত হবে। নির্মাণ কাজ শুরু হবে আগামী মাসের শুরু থেকে।
২০১৯ সালে ঢাকার পূর্বাচলে একটি নতুন স্টেডিয়াম তৈরির উদ্যোগ নিয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। কিন্তু করোনা সংক্রমণসহ নানা কারণে কিছুটা বিলম্বে শুরু হয়েছে এর কার্যক্রম। গত বছর জুলাইতে কাজ শুরুর ঘোষণা দিলেও ফের ঝুলে পড়ে কার্যক্রম। তবে শনিবার আশার কথা শুনিয়েছেন বিসিবির পরিচালক মাহবুব আনাম।
বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই মাঠের কিছু কাজ শেষ করার আশা তাদের। এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আউটডোর ফিল্ড, প্র্যাকটিস ফিল্ড হবে। দুটোকেই আমরা প্রস্তুত করা শুরু করবো। এরপর আমরা বর্ষার আগে মাঠের যে পানি নিষ্কাষণ ব্যবস্থা সেটিও আমরা সেরে ফেলতে চাই। এখনও যদি আমরা উইকেট তৈরি করতে পারি, তাহলে আগামী বছরের ক্রিকেট মৌসুমে ক্রিকেট খেলা সম্ভব হবে। উইকেট আর আউটফিল্ড তৈরি হয়ে গেলে বাকি কাজগুলো খেলা চালিয়েও করা সম্ভব হবে। বিশ্বের অনেক জায়গায় স্টেডিয়ামের রিডেভেলপমেন্ট হয়, সেখানে খেলা চলা অবস্থায় মাঠের বাইরের কাজগুলো চলমান থাকে।’
মাহবুব আনাম আরও জানিয়েছেন, ‘আমরা আগামী মাসের মধ্যে গ্রাউন্ড লেভেলিং, উইকেট প্রস্তুত করার কাজটা শুরু করবো। মে মাসের মাঝামাঝি কনসাল্ট্যান্ট আসবে। আমরা বিভিন্ন জায়গায় কথা বলছি, ঘাস কোথায় থেকে আনা যায়, সেই বিষয়টি ভাবছি। মে মাসের মাঝামাঝি যে কনসাল্ট্যান্ট আসবেন, উনি আমাদের উইকেট প্রস্তুত করাতে সহযোগিতা করবেন।’
বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় স্টেডিয়াম নির্মাণ করতে যাচ্ছে বিসিবি। স্বাভাবিকভাবেই খরচটা বেশি হওয়ার কথা। সুর্নির্দিষ্ট কোনও অঙ্কের কথা জানাতে না পারলেও বিসিবির এই পরিচালক জানিয়েছেন ৭০০ কোটি টাকার মতো খরচ হবে এই স্টেডিয়ামটি নির্মাণ করতে, ‘আমাদের কনসাল্ট্যান্ট আছেন, তাদের কাছে বিস্তারিত ডিজাইনে সব আছে। কনসাল্ট্যান্ট আমাদের একটা বিল অব কোয়ান্টিটি (বিওকিউ) এবং একটা কস্টিং দেবেন। এমনিতে আপনারা জানেন, একটা স্টেডিয়াম করতে অনেক ধরনের কস্টিং থাকে, ভারতের মোতেরা স্টেডিয়ামের কথা যদি ধরেন, ভারতীয় রুপিতে ৭০০ বা ৮০০ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল। তো ওটাকে যদি আপনি একটা মানদণ্ড ধরেন, তার তুলনায় কিছুটা কম হবে। কারণ সেখানে ১ লাখ ১০ হাজার ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন স্টেডিয়াম।’
এত ব্যয় কেন এর ব্যাখ্যায় বিসিবির এই পরিচালক বলেছেন, ‘এখানে কেবল মাঠই নয়, আমাদের একাডেমি ভবন হচ্ছে, বিসিবির একটা নিজস্ব ভবন হচ্ছে। একটা হোটেলের জায়গা ড্রয়িং করা অবস্থায় থাকবে, পরে আমরা এটা কনস্ট্রাকশনে যাবো। এছাড়া ক্রিকেটার্স ক্লাব, তার সঙ্গে একাডেমি ও একটা অ্যাডিশনাল মাঠ হচ্ছে। তার বাইরেও আমরা ৫ ফেডারেশনকে স্থাপনা দিচ্ছি। যারা এনএসসির অনুরোধ করেছেন আমাদের যে, তাদের এখানে সংকুলান করা যায় কি না। সে কারণে আমরা ৫টা ফেডারেশনকে এখানে সংকুলান, তাদের ঢোকা ও বাইরের জায়গাটাও আমরা আলাদাভাবে করে দিচ্ছি। যাতে আমাদের কারও কোনও কাজে বিঘ্ন না ঘটে।’
ট্যাক্স মওকুফের বিষয়ে মাহবুব আনাম বলেছেন, ‘আমরা এ বিষয়ে সরকারের কাছে আবেদন করেছি। সে আবেদন এখন তাদের বিবেচনাধীন আছে। আশা করছি এ বিষয়ে সহায়তা পাবো।’
আগামী মাসে নির্মাণ কাজ শুরু করে দুই বছরের মধ্যে কাজ শেষ করার ঘোষণা দিয়েছে বিসিবি। গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান মাহবুব আনাম বলেছেন, ‘বছর দুয়েক লাগবে। আশা করি এর মধ্যে পুরো মাঠ তৈরি হয়ে যাবে। আগামী বছর থেকে খেলার মতো অবস্থায় পৌঁছাবে স্টেডিয়ামটি।’
শেখ হাসিনা মাঠের জন্য স্পনসরশিপ নিলেও কখনোই এর নাম পাল্টানো হবে না বলে জানিয়েছেন বিসিবি এই পরিচালক, ‘মহামান্য প্রধানমন্ত্রীর নামে এই স্টেডিয়ামটা আমরা উৎসর্গ করেছি। যে সহযোগিতা বা অনুদান আমাদের এই স্টেডিয়ামের জন্য তিনি করেছেন, সেটাকে স্মরণ করে রাখতে চাই। সুতরাং স্টেডিয়ামের নামকরণে কোনও পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই। হয়তো ভেতরের বাণিজ্যিক বিষয়গুলো থাকে, সেখানে হবে। কিন্তু নামকরণের বিষয়ে আমরা অনড়।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।