কেরিয়ার না কি সংসার— জীবনে মহিলাদের ক্ষেত্রে কোনটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ, তা নিয়ে আলোচনা চলতেই থাকে। সম্প্রতি এই প্রসঙ্গে দক্ষিণী অভিনেত্রী শ্রুতি হাসনের একটি মন্তব্যকে ঘিরে শুরু হয়েছে চর্চা। অভিনেত্রী জানিয়েছেন, তিনি কখনও বৈবাহিক সম্পর্কে জড়াতে ইচ্ছুক নন। স্বাধীনচেতা বা সফল নারীরা এখন অনেকেই বিয়ের পথে এগোতে চাইছেন না। কিন্তু তার নেপথ্যে কী কারণ রয়েছে?
সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে শ্রুতিকে বিয়ে নিয়ে প্রশ্ন করা হয়। উত্তরে কমল হাসনের কন্যা বলেন, ‘‘বিয়ের কথা শুনলেই নিজেকে সন্ত্রস্ত লাগে। নিজের জীবন তৈরির জন্য সারা জীবন পরিশ্রম করেছি। সেটাকে কাগজে-কলমে আবদ্ধ করে ফেলার ধারণাটাকে ভয় পাই।’’ তাই বিয়ের পরিবর্তে কোনও সম্পর্কে আনুগত্য, ভালবাসা, আবেগ এবং একসঙ্গে পথ চলার প্রতি বিশ্বাস রয়েছে শ্রুতির। উল্লেখ্য, অতীতে শ্রুতি একাধিক সম্পর্কে ছিলেন।
শ্রুতির বক্তব্য প্রকাশ্যে আসার পর সমাজমাধ্যমেও বিষয়টি নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। অনেকেই অভিনেত্রীকে সমর্থন জানিয়েছেন। আবার কেউ কেউ মনে করছেন, বিবাহ নামক সামাজিক প্রতিষ্ঠানটি এখনও প্রাসঙ্গিক। বর্তমানে, মহিলারা নিজেদের অধিকার নিয়ে অনেক বেশি সচেতন। দেশে বিবিধ ক্ষেত্রে মহিলারা এখন নিজের পায়ে দাঁড়াচ্ছেন। কেরিয়ার তৈরি করতেও অনেকটা সময় চলে যাচ্ছে। ফলে সেখানে বিয়ে তাঁদের গুরুত্বের তালিকায় পিছনের দিকেই থাকছে। অনেকেই বেশি বয়সে বিয়ে করছেন।
কোনও সফল প্রাপ্তবয়স্ক নারী যদি বিয়ে করতে না চান, তার নেপথ্যে একাধিক কারণ থাকতে পারে বলেই জানালেন মনোবিদ অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়।
১) অর্থ ব্যক্তিকে বিভিন্ন দিক থেকে ক্ষমতা প্রদান করে। যদি কোনও মহিলা নিজে উপার্জন করেন, তা হলে অনেক সময়েই তিনি অন্য কোনও পুরুষের উপর নির্ভরশীল হতে চান না। ফলে তাঁরা বিয়ে না করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
২) অনেক সময়ে সংসারের চাপে কর্মরত মহিলাদের অনেক কিছু ত্যাগ করতে হয়। কেউ যদি কেরিয়ারের দিকে বেশি মনোনিবেশ করেন, সে ক্ষেত্রেও তিনি বৈবাহিক বন্ধন এড়িয়ে যেতে পারেন।
৩) সময়ের সঙ্গে সমাজে ‘একাকী মা’য়েরা স্বতন্ত্র গ্রহণযোগ্যতা তৈরি করেছেন। তাই সন্তান পালনের জন্য এখন স্বামী আর ততটা গুরুত্বপূর্ণ নন। ফলে সেখানে বিয়ে আর আবশ্যিক শর্ত নয়।
৪) অনেক সময়ে অতীত সম্পর্কের তিক্ততা বিয়ের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়াতে পারে। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার উপর নির্ভর করে অনেকে সারা জীবনের জন্য নতুন দায়িত্বের অংশভাক হতে চান না।
৫) শৈশবে, বেড়ে ওঠার দিনগুলিতে বাবা-মায়ের দাম্পত্য কলহ শিশুমনে গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। তার ফলে কোনও মহিলার মনে প্রাপ্তবয়সেও বিয়ের প্রতি ভীতি জন্মাতে পারে।
৬) বিয়ের সঙ্গেই আসে সামাজিক দায়িত্ব পালনের প্রসঙ্গ। রয়েছে বিভিন্ন প্রথা। শিক্ষিত স্ত্রী কোনও ‘অন্যায়’ মেনে নিতে নারাজ। সেখানে শিক্ষিত এবং স্বাধীনচেতা মহিলারা অনিচ্ছাকৃত সেই জটিলতার মধ্যে প্রবেশ করতে সব সময় স্বচ্ছন্দবোধ না-ও করতে পারেন।
৭) সময়ের সঙ্গে যুগলের একত্রবাসের ঘটনায় সমাজের তির্যক নজর কমেছে। পাশাপাশি, বিবাহ খরচসাপেক্ষ। অনেক যুগল এখন একত্রবাসের পথে হাঁটেন। সমীকরণ জরিপ করে, পরবর্তী জীবনেও তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।