জুমবাংলা ডেস্ক : নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগকর্মী নাঈম হাছান বিয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য গোপন করে বাংলাদেশ পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর (এসআই) নিয়োগের চূড়ান্ত তালিকায় স্থান পেয়েছেন। তিনি কিশোরগঞ্জের ইটনা উপজেলার বাসিন্দা। সম্প্রতি ঘোষিত এসআই পরীক্ষার ফলাফলে তার নাম প্রকাশিত হয়েছে।
জানা গেছে, অভিযুক্ত নাঈম হাছান কিশোরগঞ্জ জেলার ইটনা উপজেলার চৌগাংগা ইউনিয়নের কিষ্টপুর গ্রামের বাসিন্দা।
তার বাবা আব্দুল মোতালিব স্থানীয় আওয়ামী লীগের একজন প্রভাবশালী নেতা, তিনি বর্তমানে ইটনা উপজেলা আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য এবং ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। এলাকাবাসীর মতে, ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ ঘোষণার আগ পর্যন্ত নাঈম হাছান ইউনিয়ন ছাত্রলীগের একটি গুরুত্বপূর্ণ পদপ্রত্যাশী ছিলেন এবং সংগঠনের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করতেন।
স্থানীয় সূত্র মতে, নাঈম হাছান ২০২৪ সালের ২৬ জানুয়ারি পাকুন্দিয়া উপজেলার খামা গ্রামের বাসিন্দা আজিজুন্নাহার সাথীকে বিয়ে করেন। বিয়ের সময় উপস্থিত ছিলেন চৌগাংগা ইউপি চেয়ারম্যান মো. ছাইফুল ইসলাম, যিনি ওই বিয়েতে সাক্ষী হিসেবেও উল্লেখিত ছিলেন।
অথচ একই ব্যক্তি পরবর্তীতে পুলিশের নিয়োগ ফরমে নাঈমকে ‘অবিবাহিত’ বলে প্রত্যয়ন দেন, যা তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন।
তিনি বলেন, ‘সত্যি বলতে মনে নেই বিয়ের সময় সাক্ষী ছিলাম কি না। তবে সে আমার কাছে একটি প্রস্তুত প্রত্যয়ন এনেছিল, আমি সই করে দিয়েছি।’
এসআই নিয়োগ-২০২৫-এর চূড়ান্ত ফলাফলে নাঈম হাছানের নাম রয়েছে ৪৬০তম অবস্থানে, তার রোল নম্বর ১০৯৭২৩।
অভিযোগ উঠেছে, পুলিশের ভেরিফিকেশন পর্যায়েও বিয়ের তথ্য গোপন রাখতে সহায়তা করেছেন ইটনা থানার ওসি মো. জাফর ইকবাল। যদিও তিনি এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘তথ্য গোপনের বিষয়ে আমাদের কাছে কোনো অভিযোগ আসেনি। এখন বিষয়টি সামনে আসায় আমরা তদন্ত করছি।’
সম্প্রতি চৌগাংগা ইউনিয়নের এক স্থানীয় ব্যক্তি আব্দুর রব পুলিশ সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন। এতে নাঈমের বিয়ের কাবিননামাসহ বেশ কিছু প্রমাণ সংযুক্ত করা হয়েছে। যেখানে বলা হয়, নাঈম একদিকে বিবাহিত এবং অন্যদিকে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠনের কর্মী ছিলেন।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ পুলিশের এসআই নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, প্রার্থীকে নিয়োগকালীন এবং শিক্ষানবিশকাল শেষ না হওয়া পর্যন্ত অবিবাহিত থাকতে হবে। তালাকপ্রাপ্তরাও অযোগ্য বলে বিবেচিত।
তবে এ বিষয়ে কথা বলতে নাঈম হাছানের ফোনে যোগাযোগ করা হলে তার ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
কিশোরগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মুকিত সরকার জানান, ‘বিষয়টি নিয়ে তদন্তের জন্য একজন কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। তার প্রতিবেদন হেডকোয়ার্টারে পাঠানো হবে এবং হেডকোর্টারের নির্দেশা অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।