বর্তমান যুগ প্রযুক্তির, কিন্তু বইপড়ার চর্চা এখনও আমাদের জীবনকে সমৃদ্ধ করে চলেছে। শিক্ষার্থীদের মধ্যে বইপড়ার প্রবণতা বাড়াতে, মোবাইল সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোন একটি নতুন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তারা সম্প্রতি বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে, যার লক্ষ্য হলো শিশু ও তরুণ প্রজন্মের মধ্যে বইপড়ার আগ্রহ বৃদ্ধি করা। এই উদ্যোগটি শুধুমাত্র একটি পার্টনারশিপ নয়, বরং একটি সমাজকল্যাণমূলক কার্যক্রম, যা দেশের সাহিত্য সংস্কৃতি উন্নয়নকে আরো সুদৃঢ় করবে।
শিক্ষার্থীদের বইপড়ার উদ্যোগে গ্রামীণফোনের ভূমিকা
গ্রামীণফোন এবং বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের মধ্যে এই চুক্তি সই করা হয়েছে ৪ মে, রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায়। এই অংশীদারিত্বের ফলে বাংলাদেশের ৫টি বড় মহানগরে— ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী ও বরিশাল— পুরস্কার বিতরণের আয়োজন করা হবে। এই পুরস্কার বিতরণ আয়োজনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদেরকে নতুন বই উপহার দেয়া হবে, যা তাদের বইপড়ার প্রতি উৎসাহিত করবে।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে গ্রামীণফোন সামাজিক দায়বদ্ধতার অংশ হিসেবে দেশের শিশুদের মাঝে সাংস্কৃতিক ও শিক্ষাগত উন্নয়নের চেষ্টায় ভূমিকা রাখছে। অধ্যাপক আব্দুল্লাহ আবু সায়ীদ, যিনি বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা, চুক্তি সই অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোনের দীর্ঘদিনের সহযোগিতার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “এই সহযোগিতার ফলে বইপড়ার আগ্রহ ও উৎকর্ষ কার্যক্রমের ব্যাপ্তি বেড়েছে।”
পুরস্কার বিতরণ উৎসবের সময়সূচি
গ্রামীণফোন ও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের এই উদ্যোগের আওতায় পুরস্কার বিতরণ উৎসব শুরু হবে ৯ ও ১০ মে ঢাকা মহানগরে। এটির পর ধারাবাহিকভাবে বরিশালে ১৬ মে, চট্টগ্রামে ২৩ ও ২৪ মে, খুলনায় ১১ জুলাই এবং রাজশাহীতে ১৯ জুলাই এ আয়োজন অনুষ্ঠিত হবে। এই সকল আয়োজনের উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থীদের বইপড়ার অভ্যাস গড়ে তোলা এবং তাদের মাঝে সাহিত্যিক সচেতনতা সৃষ্টি করা।
পুরস্কার বিতরণের মাধ্যমে আশা করা হচ্ছে, দেশব্যাপী তরুণ প্রজন্ম নতুন বইয়ের প্রতি আকৃষ্ট হবে এবং বইপড়ার প্রতি আগ্রহী হবে। গ্রামীণফোনের এই সহযোগিতা শিক্ষার্থীদের মনে বইয়ের প্রতি পাণ্ডিত্য ডানার মতো কাজ করবে।
সমাজ ও সংস্কৃতিতে প্রভাব
এই উদ্যোগটি বাংলাদেশের সাহিত্য ও সংস্কৃতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। দেশে বইপড়ার প্রবণতা কমে যাওয়ার ইঙ্গিত দেয়, এবং এই ধরনের কার্যক্রম শিক্ষার্থীদের বই পড়তে উৎসাহিত করবে। অধ্যাপক সায়ীদ উল্লেখ করেন, “আমরা আশা করছি, এই উদ্যোগ দেশের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নয়ন ও সংস্কৃতির প্রসারে সহায়ক হবে।”
উৎসাহজনক এই উদ্যোগটি আমাদের সমাজের জন্য বিশেষ তাৎপর্যবাহী। শিক্ষার অঙ্গনে এটি কর্তব্যের প্রতি একটি নতুন আভা যোগ করবে, যা পরবর্তীতে পুরো দেশের তরুণদের মধ্যে বইপড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে সহায়ক হবে।
রাজনীতি, সমাজ ও সংস্কৃতিতে এই ধরনের উদ্যোগগুলি সচেতনতা সৃষ্টি এবং পরিবর্তন আনতে সহায়ক করে। প্রমাণিত হয়েছে যে, শিক্ষিত জাতি শুধুমাত্র প্রযুক্তিতে নয়, বরং সাহিত্যে ও সংস্কৃতিতে উন্নতি করেছে।
এই উদ্যোগের মাধ্যমে আশা করা হচ্ছে, গ্রামীণফোন তরুণ প্রজন্মকে একটি নতুন দিগন্ত দেখাবে যেখানে বইয়ের গুরুত্ব কখনোই কমে যাবে না।
বইপড়ার মাধ্যমে জীবনের প্রাচুর্য
একটি ভালো বই শুধু জ্ঞানের ক্ষেত্রই নয়, বরং আমাদের আবেগ এবং মনোভাবের প্রসারে সহায়ক। এটি আমাদেরকে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করে এবং বিভিন্ন সংস্কৃতির সাথে পরিচিত করে। এভাবে পদে পদে বইয়ের গুণাবলী আমাদের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে।
গ্রামীণফোন এর অঙ্গীকার, বইপড়ার চর্চাকে উৎসাহিত করার উদ্দেশ্যে মহৎ উদ্যোগ হিসেবে তাদের কাজ অব্যাহত রাখবে, যা বাঙালি সংস্কৃতির অহংকার সৃষ্টি করবে।
FAQs
গ্রামীণফোন ও বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের চুক্তির উদ্দেশ্য কী?
- এই চুক্তির উদ্দেশ্য হলো শিক্ষার্থীদের মধ্যে বইপড়ার প্রচার ও আগ্রহ বৃদ্ধি করা।
পুরস্কার বিতরণের সময়সূচি কেমন?
- পুরস্কার বিতরণ শুরু হবে ৯ ও ১০ মে ঢাকা থেকে, এরপর অন্যান্য মহানগরে অনুষ্ঠিত হবে।
এই উদ্যোগটি কি সব শিক্ষার্থীদের জন্য খোলা?
- হ্যাঁ, এই উদ্যোগটি সবার জন্য উন্মুক্ত, সকল শিক্ষার্থী এতে অংশ নিতে পারবে।
কি ধরনের বই পুরস্কার হিসেবে প্রদান করা হবে?
- শিক্ষার্থীদের জন্য নতুন ও বিভিন্ন লেখকের বই পুরস্কার হিসেবে প্রদান করা হবে।
- গ্রামীণফোনের সামাজিক দায়বদ্ধতার গুরুত্ব কেমন?
- গ্রামীণফোনের সামাজিক দায়বদ্ধতা যুব সমাজের সাহিত্য ও সামাজিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।