বিজ্ঞান ও প্রযক্তি ডেস্ক : ক্যাপকাট বর্তমানে বিশ্বব্যাপী ভিডিও নির্মাতা এবং সোশ্যাল মিডিয়া কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিডিও এডিটিং এপ হিসাবে নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করেছে। টিকটকের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ক্যাপকাটও দ্রুত বিকাশ লাভ করেছে, কারণ এটি ব্যবহারকারীদের সহজে এবং বিনামূল্যে পেশাদার মানের ভিডিও এডিট করতে সাহায্য করে।
ক্যাপকাট মূলত চীনা প্রযুক্তি কোম্পানি বাইটডান্স (ByteDance) কর্তৃক ডেভেলপ করা। এটি প্রথমবারের মতো ২০২০ সালের এপ্রিলে প্রকাশিত হয়। ক্যাপকাট মূলত একটি মোবাইল-ফোকাসড ভিডিও এডিটিং এপ, যা ছোট ভিডিও তৈরি করা সহজ করার লক্ষ্য নিয়ে ডিজাইন করা হয়েছিল। তবে এর ব্যবহার এতই জনপ্রিয় হয়ে ওঠে, এটি এখন ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম, ফেসবুকের মতো বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মেও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। ক্যাপকাটের বৈশিষ্ট্যগুলো এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যেন নতুন এবং পেশাদার উভয় ব্যবহারকারীর জন্যই এটি ব্যবহার করা সহজ হয়।
উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য
সহজ এবং ক্লিন ইন্টারফেস: নতুন ব্যবহারকারীও ক্যাপকাটের ইন্টারফেস বুঝতে খুব সহজেই সক্ষম হন। এটি নির্দিষ্ট ফিচারগুলোকে ব্যবহার করার জন্য ক্লিন এবং সরল ডিজাইন অনুসরণ করে।
বিনামূল্যে ব্যবহার: অন্য অনেক উন্নত ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার পেইড সাবস্ক্রিপশনের প্রয়োজন হলেও ক্যাপকাট সম্পূর্ণ ফ্রি। ব্যবহারকারীরা এটির সব ফিচার বিনামূল্যে ব্যবহার করতে পারেন। বিজনেসের ক্ষেত্রে বর্তমানে কিছু পেইড অপশন নিয়ে এসেছে।
পেশাদার এডিটিং টুলস: ক্যাপকাটে আছে ট্রিমিং, কাটিং, স্পিড অ্যাডজাস্টমেন্ট, ট্রানজিশন, ফিল্টার এবং অনেক অ্যাডভান্সড ফিচার, যা পেশাদার মানের ভিডিও তৈরি করতে সাহায্য করে।
অ্যাডভান্সড ইফেক্টস এবং ফিল্টার: বিভিন্ন ভিজুয়াল ইফেক্ট এবং ফিল্টার ব্যবহার করে ভিডিওগুলোকে আরও আকর্ষণীয় করা যায়।
এআই ফিচার: ক্যাপকাটে এখন এআই সমৃদ্ধ ফিচার যুক্ত হয়েছে, যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ভিডিও এডিট করতে, ভিডিওর অটো কাট বা ব্যাকগ্রাউন্ড রিমুভ করতে সক্ষম।
মিউজিক এবং সাউন্ড ইফেক্ট: ক্যাপকাটে বিশাল মিউজিক লাইব্রেরি রয়েছে, যেখানে ব্যবহারকারীরা তাদের ভিডিওর জন্য মানানসই মিউজিক ও সাউন্ড ইফেক্ট যোগ করতে পারেন। এছাড়াও নিজের সাউন্ড ফাইলও যোগ করার সুবিধা রয়েছে।
টেক্সট, স্টিকার এবং ইমোজি সুবিধা: ক্যাপকাটে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের কাস্টমাইজেশন অপশন, যেমন টেক্সট, স্টিকার এবং ইমোজি; যা কনটেন্টকে আরও জীবন্ত ও আকর্ষণীয় করে তোলে।
বর্তমানে ক্যাপকাট শুধু মোবাইল এপ নয়, ডেস্কটপ সংস্করণও নিয়ে এসেছে, যাতে পিসি ব্যবহারকারীরাও সহজেই এটি ব্যবহার করতে পারেন। এটি Windows এবং Mac অপারেটিং সিস্টেমে সমর্থন করে। মোবাইল সংস্করণে অ্যান্ড্রয়েড এবং আইওএস ব্যবহারকারীরা সহজেই প্লে স্টোর এবং অ্যাপ স্টোর থেকে এটি ডাউনলোড করতে পারেন।
ক্যাপকাটের সহজ ব্যবহার, উন্নত ফিচার এবং বিনামূল্য সুবিধার কারণে এটি খুব দ্রুত ভিডিও এডিটিং মার্কেটে একটি প্রধান প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে। যারা ভিডিও এডিটিং শিখতে চান বা আরও পেশাদার মানের কনটেন্ট তৈরি করতে চান, তাদের জন্য ক্যাপকাট নিঃসন্দেহে একটি চমৎকার সমাধান। বাইটডান্সের তৈরি এ এপটি ভবিষ্যতে আরও উদ্ভাবনী ফিচার নিয়ে আসবে এবং এটি আরও জনপ্রিয়তা লাভ করবে।
লেখক: আইটি ইঞ্জিনিয়ার ও এক্টিভিস্ট
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।