জুমবাংলা ডেস্ক : দক্ষিণ আমেরিকার খাদ্য শর্করার তৃতীয় বৃহত্তম উৎস হিসেবে পরিচিত শিমুল আলু বা কাসাভা এখন চাষাবাদ হচ্ছে উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ে। কয়েক বছর ধরে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে জেলার দেবীগঞ্জ ও বোদা উপজেলায় পরীক্ষামূলক চাষাবাদে ভালো ফল পাওয়া গেছে।
লাভজনক এই ফসলটি এখন বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদের স্বপ্ন দেখছেন চাষিরা। তবে এলাকায় এই শস্য তেমন পরিচিত না হওয়ায় স্থানীয় বাজারে এর চাহিদা কম।
তাই বাজারজাত করতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে চাষিদের। অনেকেই কম দরে বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। চাষাবাদের পাশাপাশি মানুষের মধ্যে এই শস্য নিয়ে প্রচারণা চালানোর দাবি তুলেছেন চাষিরা।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে দেবীগঞ্জ উপজেলায় পরীক্ষামূলক শিমুল আলু চাষাবাদের উদ্যোগ নেয় কৃষি বিভাগ।
কন্দালজাতীয় ফসল উন্নয়ন প্রকল্পের মাধ্যমে শুরুতে চার থেকে পাঁচ বিঘা জমিতে এর চাষ করা হয়। প্রথম বছরই মেলে ভালো ফলন। বর্তমানে এই উপজেলায় শিমুল আলু চাষ হচ্ছে প্রায় ৮০ বিঘা জমিতে।
দেবীগঞ্জের পাশাপাশি এবার বোদা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আহমেদ রাশেদ উন নবীর উদ্যোগে উপজেলার বড়শশী ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া এলাকায় ২০ বিঘা জমিতে এই আলুর চাষ হয়েছে।
কৃষি কর্মকর্তারা জানান, কাসাভা বা শিমুল আলু জানুয়ারি মাসে রোপণ করতে হয়। গাছের ডাল থেকেই এটির বীজ তৈরি করা হয়। আলুটি পতিত জমিতে তেমন কোনো পরিশ্রম ছাড়াই সহজে চাষ করা যায়। রোপণের ১০ থেকে ১১ মাসের মধ্যেই উত্তোলন করা যায়। মিষ্টি আলুর মতো গাছের শিকড়ই আলু হিসেবে পাওয়া যায়।
এই আলু দেখতে লম্বাটে। শিমুল আলু বিভিন্ন খাদ্য, ওষুধ এবং কেমিক্যাল তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া ভাতের বিকল্প হিসেবেও অনেকে খেয়ে থাকে।
তিনি বলেন, ‘পঞ্চগড়ে এখন পর্যন্ত ফলন পাওয়া গেছে হেক্টরে ২৮.২ টন। এখন অনেকেরই আলু তোলার উপযোগী হয়ে গেছে। আবার কেউ কিছুদিনের মধ্যেই ফসল উত্তোলন করতে পারবেন। তবে এই সময়ে শিমুল আলু চাষির বড় দুশ্চিন্তা বিক্রি নিয়ে। স্থানীয়ভাবে আলুটি তেমন পরিচিত না হওয়ায় বাজারজাত করা কঠিন হয়ে গেছে। যেসব ব্যবসায়ী এসব কিনে থাকেন, তাঁরা কঠিন শর্ত দিচ্ছেন। এতে চাষিরা আগ্রহ হারাচ্ছেন। তবে কোনো ব্যবসায়ী কিনতে আগ্রহ দেখালেও খুব কম দাম বলছেন। বছরজুড়ে চাষ করে এখন কাসাভা নিয়ে বেশ বিড়ম্বনায় চাষিরা।’
বোদা উপজেলার বড়শশী ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়ার শিমুল আলু চাষি মোমিনুল ইসলাম বলেন, ‘খুব পুষ্টিকর খাবার এই শিমুল আলু। এক কেজি চালে যে কাজ করে, ১০০ গ্রাম শিমুল আলু সেই কাজ করে। এটি ১০ থেকে ১১ মাসে তোলা যায়। রোপণের সময় সাথি ফসল হিসেবে মরিচ, সরিষা, বাদাম চাষ করি আমরা। বিঘায় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ হয়। এবার ফলনও ভালো হয়েছে। আশা করছি বিঘায় ৯০ থেকে ১০০ মণ পর্যন্ত ফলন হবে। কিন্তু বাজারজাত করা নিয়ে আমরা চিন্তায় আছি।’
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।