ভারতীয় বাংলা সিনেমার উজ্জ্বল তারকা সন্ধ্যা রায়। ৪৫০ এরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেছেন তিনি। অনেকেই ভাবেন তরুণ মজুমদারের মানস কন্যা তিনি। তরুণ মজুমদারের স্ত্রী তিনি।
তবে অনেকেই জানে না, আদতে তিনি যার ছায়ায় বাংলা ছবিতে বেড়ে উঠেছেন তিনি পরিচালক রাজেশ তরফদার। একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, খুব ছোটবেলায় জুনিয়র আর্টিস্ট থেকে উঠে এসেছেন তিনি।
সেই সময় পশুপতি চট্টোপাধ্যায়ের ছবিতে একটি দৃশ্যায়ন চলছে সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে। সেখানেই কিছু ভিড় দরকার ছিল, কয়েকজনের সঙ্গে সেখানে বসে পড়ে ছোট্ট সন্ধ্যা রায়।
তখন পরিচালক কিশোরী সন্ধ্যাকে বলেন, ‘এক লাইন সংলাপ বলতে পারবে?’ দৃশ্যটা ছিল নায়িকার কোলে একটি বাচ্চা দিয়ে বলতে হবে– ‘এই নাও তোমার সতিনপো’। ছোট্ট সন্ধ্যা গড়গড় করে সংলাপ বলে দিলেন। সেদিন সন্ধ্যা রায়ের নিজেও জানতেন না এই সংলাপ বলার মাধ্যমেই সিনেমায় হাতেখড়ি হয় গেল তার। ছবির নাম ‘মামলার ফল’।
সেদিন তিনি একটি গরম সিঙারা , জিলাপি পেলেন, সঙ্গে পাঁচটা টাকা। এটাই তার জীবনের প্রথম উপার্জন। এর কিছুদিন পরেই পরিচালক রাজেন তরফদার তার নতুন ছবির কাজ শুরু করবেন। মনে ধরল সন্ধ্যা রায়ের সুন্দর মুখ তাকে অন্তরিক্ষ ছবির জন্য নিজের ছবিতে নিলেন। দশ দিনের কাজ।
সন্ধ্যা রায় ভাবলেন দশ দিন কাজ করলে পেটভরে খাবার পাবেন, সঙ্গে পাঁচ টাকা করে পাবেন তিনি রাজি হয়ে গিয়েছিলেন। ১২ বছর বয়সে সন্ধ্যা রায়ের অন্তরিক্ষ ছবির নায়িকা হলেন এবং জীবনের প্রথম হিট দিয়েই দিলেন।
এরপর আর পেছন ফিরতে হয়নি তাকে। তিনি বারবার প্রমাণ করলেন, জাত অভিনেত্রী তিনি। সহজাত অভিনয় ক্ষমতা নিয়েই জন্মেছেন। রাজেশ তরফদারও মাটির ঢালা পেয়ে ঘষেমেজে অভিনেত্রী তৈরি করেছিলেন।
এরপর তরুণ মজুমদারের সঙ্গে তার পরিচয় একের পর এক ছবিতে অভিনয় করেছেন, সঙ্গে একাধিক নায়ক নায়িকা খুঁজে বার করেছেন। বাংলা থেকে হিন্দি বহু ছবিতে অভিনয় করে দর্শকদের মনে স্থান করে নিয়েছেন। উত্তম কুমার সন্ধ্যা রায়কে খুব স্নেহ করতেন। সন্ধ্যা রায়কে সন্ধ্যামণি নামে ডাকতেন উত্তম কুমার।
সন্ধ্যা রায় একবার বলেছিলেন, অনাথ সন্ধ্যা রায়ের মাথার ওপর রাজেন তরফদারের হাত ছিল বলেই কোনোদিন কক্ষচ্যুত হননি তিনি। তবে রাজেন তরফদারকে মনে রাখেননি টলিপাড়া।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।