আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আফ্রিকা মহাদেশে ভূপ্রাকৃতিক এক যুগান্তকারী পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে, যা বিজ্ঞানীদের মতে পৃথিবীতে একটি নতুন মহাসাগরের জন্ম দিতে পারে। আফ্রিকার ভূগর্ভে থাকা সোমালি প্লেট ধীরে ধীরে আলাদা হয়ে যাচ্ছে নুবিয়ান প্লেট থেকে। যদিও এই বিচ্যুতি অত্যন্ত ধীর—প্রতি বছর কয়েক মিলিমিটার—তবুও লক্ষ লক্ষ বছর ধরে এই পরিবর্তন যথেষ্ট বড় পরিণতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।
ভূবিজ্ঞানীরা বলছেন, এই ধীরগতির বিচ্যুতিই একসময় আফ্রিকা মহাদেশকে দুই ভাগে ভাগ করে ফেলবে। এই পরিবর্তনের নাম দেওয়া হয়েছে “প্লেট টেকটনিক মুভমেন্ট”, যা পৃথিবীর ভূপ্রকৃতির মূল চালিকাশক্তি।
২০০৫ সালে ইথিওপিয়ার আফার অঞ্চলে ৫৬ কিলোমিটার দীর্ঘ একটি বৃহৎ ভূ-ফাটল দেখা দেয়। ভূবিজ্ঞানীদের মতে, এটি সোমালি ও নুবিয়ান প্লেটের বিচ্ছিন্নতার প্রাথমিক চিহ্ন। ভবিষ্যতে এই ফাটলের মধ্যে দিয়ে পানি ঢুকে সেখানে ধীরে ধীরে সৃষ্টি হতে পারে একটি সম্পূর্ণ নতুন মহাসাগর।
এই নতুন মহাসাগরের সম্ভাব্য স্থান হিসেবে ধরা হচ্ছে লোহিত সাগর ও এডেন উপসাগরের মধ্যবর্তী অঞ্চলকে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই জলরাশি মিলে গড়ে তুলবে পৃথিবীর ষষ্ঠ মহাসাগর। যদিও এই পরিবর্তন ঘটতে সময় লাগবে আনুমানিক ১০ থেকে ৫০ লক্ষ বছর।
এই পরিবর্তনের সঙ্গে তুলনা করা হচ্ছে সেই অতীত ভূপ্রাকৃতিক ঘটনার, যখন আফ্রিকা ও দক্ষিণ আমেরিকা একত্রে ছিল এবং পরে বিভক্ত হয়ে যায়। একইভাবে এবার আফ্রিকাও দুটি ভাগে ভাগ হতে পারে—পূর্ব আফ্রিকা এবং পশ্চিম আফ্রিকা।
এই রূপান্তর শুধু মানচিত্রে নয়, বরং জলবায়ু, বাস্তুতন্ত্র, প্রাণীজগৎ এবং মানব সভ্যতার জীবনযাত্রায়ও ব্যাপক পরিবর্তন আনবে। নতুন এই সাগরের সৃষ্টি বিশ্বব্যাপী ভূসংস্থান ও পরিবেশগত পরিবর্তন ডেকে আনবে বলে আশঙ্কা করছেন বিজ্ঞানীরা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।