জুম-বাংলা ডেস্ক : কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) শেখ হাসিনা হলে সিনিয়রিটির প্রভাব খাটিয়ে এবং জোরপূর্বক সিট দখলের অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। হল প্রশাসন থেকে বরাদ্দকৃত সিটে উঠতে গেলে এমন আচরণের শিকার হন বলে প্রথমে হল প্রশাসনের কাছে লিখিত জানান। প্রতিকার না পেয়ে সর্বশেষ বিশ্ববিদ্যালয় প্রক্টর বরাবর অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী। অভিযুক্ত হলেন ফার্মেসি ১১তম ব্যাচের শিক্ষার্থী মাহমুদা তাহিরা। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হলেন ফিন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ১৩তম আবর্তনের শিক্ষার্থী মুনিরা আক্তার।
অভিযোগপত্রে মুনিরা উল্লেখ করেন, দেশ পুনরায় স্বাধীন হলেও আমি আমার অধিকার থেকে অন্যায়ভাবে বঞ্চিত হয়ে আসছি। চলতি বছরের মার্চ মাসের ২০ তারিখ হলের ২১৮ নম্বর রুমের ডব্লিউ-১ সিট বরাদ্দ পাই। তবে সে সিটে পূর্বে থাকা ছাত্রলীগের সভাপতি ও লোক প্রশাসন বিভাগের ১১তম আবর্তনের শিক্ষার্থী কাজী ফাইজা মেহেজাবিন আইনগতভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষ হওয়ার পরেও রাজনৈতিক বিভিন্ন বিষয় ও হল প্রশাসনকে বুঝিয়ে থাকেন। আমি সিটে উঠতে ব্যর্থ হই। তবে আন্দোলন চলাকালীন জুলাই মাসের শেষ দিকে কাজী ফাইজা মেহেজাবিন সিট ছেড়ে চলে যান। সরকার পতনের পরপরই আমার স্নাতকোত্তর এর ১ম সেমিস্টার পরীক্ষার রুটিন হয় ও ২ সেপ্টেম্বর থেকে পরীক্ষা শুরুর তারিখ থাকায় ২৯ আগস্ট হলে এসে নিজ বরাদ্দকৃত সিটে উঠতে যাই। তবে তখনই রুমের ১২তম ব্যাচের তাওফীকা নামক একজন আমাকে জানান সিটে ১১তম ব্যাচের মাহমুদা তাহিরা (ফার্মেসি বিভাগ) থাকছেন। আমি যেন রুমের ডোর সিটে উঠি।
যেহেতু দীর্ঘদিন যাবত লিগ্যাল সিট পাওয়ার পরও ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছিল তাই আমি নিজ সিট ব্যতীত অন্যত্র উঠতে নাকচ করি। সিটে উঠার জন্য এবার মাহমুদা তাহিরাকে জানালে তিনি আমাকে বলেন, হলে অনেক দিন যাবত আছি, তুমি আমাকে রুলস শেখাতে এসো না। কথাবার্তার এক পর্যায়ে আমাকে মানাতে না পেরে তিনি রূঢ় ভাষায় আমাকে বলেন, আমি সিট ছাড়ব না, তুমি পারলে উঠো। নিজের সিটে উঠতে না পেরে সার্বিক পরিস্থিতি জানিয়ে হল প্রশাসনের কাছে আবেদন করি। হল কর্তৃপক্ষ মাহমুদা তাহিরার সাথে কথা বলে এবং পরবর্তীতে তাকে সেপ্টেম্বর মাসের ২৩ তারিখ নিজ সিটে উঠে আমার সিটের দখলদারিত্ব ছাড়ার জন্য নোটিশ পাঠায়। এরপরও হল কর্তৃপক্ষের এই নোটিশকে উপেক্ষা করে তিনি এখনো পর্যন্ত আমার সিটেই আছেন।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মুনিরা আক্তার বলেন, নিজের লিগ্যাল সিট থাকতেও অন্যজনের সিটে উদ্বাস্তুর মতো পরে আছি। গত ৬ মাস ধরে আমি আমার সিটে উঠতে পারছি না শুধুমাত্র সিনিয়রদের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে। প্রশাসন থেকে নোটিশ দেওয়ার পরেও আমার সিটটি এখনও দখল করে বসে আছে।
অভিযোগের বিষয় মাহমুদা তাহিরা বলেন, আমি আসলে তাকে রুমে উঠতে বাধা দিয়েছি বিষয়টা এমন নয়৷ আমি এই সিটে অনেক আগে থেকেই থাকছি, সবকিছু গুছানো আর আমি কিছুদিনে চলে যাবো সেজন্য ওকে বলেছি পাশের সিটে উঠার জন্য। কিন্তু সে উঠবে না, এই সিটেই উঠবে। একপ্রকার আমাকে জোর করে সে সিট থেকে সড়াতে চাচ্ছে।
হল প্রশাসন আপনাকে সিট পরিবর্তন করতে বলেছিলেন বলে জানা গেছে। এই বিষয় তিনি বলেন, স্যার আমাকে বলেছিলেন।
মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা
এই বিষয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মো. আবদুল হাকিম বলেন, শেখ হাসিনা হলে বর্তমানে কোনো প্রভোস্ট নেই, তাই হলের প্রশাসনিক জায়গাটি শূন্য বলা যায়। তবে আশা করি দ্রুতই সেখানে প্রভোস্ট নিয়োগ দেওয়া হবে। প্রভোস্ট নিয়োগের পরপরই আমরা এই বিষয় যথাযথ ব্যবস্থা নিবো।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।