স্মার্টফোন ব্যবহারে পাকিস্তান-কেনিয়ার চেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ

mobile user

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাস্তবায়ন হয়েছে দাবি করে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ ঘোষণা করেছিল বিগত আওয়ামী লীগ সরকার। চটকদার নানান স্লোগানে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে এগিয়ে যাওয়ার গল্প শোনাতেন সরকারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।

mobile user

এ নিয়ে মন্ত্রীদের মুখেও খই ফুটতো। অথচ বাস্তবতা সম্পূর্ণ উল্টো। বৈশ্বিকভাবে বাংলাদেশের প্রযুক্তিগত দিক দিয়ে যতটা এগিয়ে যাওয়ার কথা, তার শিঁকিভাগও হয়নি। বৈশ্বিক বিভিন্ন প্রতিবেদনে তা উঠে আসছে।

সম্প্রতি বৈশ্বিক সংগঠন গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল কমিউনিকেশনস অ্যাসোসিয়েশনের (জিএসএমএ) এক প্রতিবেদনেও প্রযুক্তিখাতে বাংলাদেশের পিছিয়ে থাকা চিত্র উঠে এসেছে। সেখানে দেখা গেছে, স্মার্টফোন ব্যবহারে বাংলাদেশ পাকিস্তান ও কেনিয়ার চেয়েও পিছিয়ে। তালিকায় সবচেয়ে নিচে থাকা বাংলাদেশের সঙ্গী উগান্ডা ও ইথিওপিয়া।

প্রতিবেদনের তথ্যানুযায়ী—ইন্টারনেট ব্যবহারে আরও পিছিয়ে বাংলাদেশ। সেখানে বাংলাদেশের নিচে অবস্থান করছে শুধু ইথিওপিয়া। উগান্ডাও ইন্টারনেট ব্যবহারের হারে কথিত ডিজিটাল বাংলাদেশের চেয়ে ঢের এগিয়ে।

গত অক্টোবর মাসে প্রকাশিত এ প্রতিবেদনে সবশেষ ২০২৩ সালের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। বিশ্বের এশিয়া, আফ্রিকা ও ল্যাটিন আমেরিকার ১২টি নিম্নমধ্যম আয়ের দেশের মানুষের ওপর চালানো সমীক্ষার তথ্যে এ প্রতিবেদন সাজিয়েছে জিএসএমএ।

দেশগুলো হলো—মিশর, ইথিওপিয়া, কেনিয়া, সেনেগাল, নাইজেরিয়া, উগান্ডা, বাংলাদেশ, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, গুয়েতেমালা ও মেক্সিকো। অর্থাৎ, পিছিয়েপড়া দেশগুলোর মধ্যেও আরও পিছিয়ে বাংলাদেশ।

স্মার্টফোন ব্যবহারে পাকিস্তান-কেনিয়ার চেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ

জিএসএমএ’র প্রতিবেদন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, বাংলাদেশের শহরে বসবাস করা ৪১ শতাংশ মানুষের হাতে স্মার্টফোন আছে। তারা নিজের স্মার্টফোন ব্যবহার করছেন। আগের বছর অর্থাৎ, ২০২২ সালের চেয়ে এ হার কিছুটা (৪ শতাংশ) বেড়েছে। উগান্ডা ও ইথিওপিয়ায়ও শহরে বাংলাদেশের সমান ৪১ শতাংশ মানুষ স্মার্টফোনধারী।

তবে আগের বছরের চেয়ে গ্রামে স্মার্টফোনের মালিক কমেছে। ২০২২ সালে বাংলাদেশের গ্রামে স্মার্টফোন ব্যবহারকারী ছিলেন ২৭ শতাংশ মানুষ। ২০২৩ সালে এসে তা কমে ২৬ শতাংশে নেমেছে। গ্রামে স্মার্টফোন ব্যবহারে অবশ্য বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে উগান্ডা (১৭ শতাংশ) ও ইথিওপিয়া (১০ শতাংশ)।

সমীক্ষা চালানো ১২টি দেশের মধ্যে স্মার্টফোন ব্যবহারে সবচেয়ে এগিয়ে মেক্সিকো। দেশটির শহরের ৭১ শতাংশ এবং গ্রামের ৬১ শতাংশ মানুষ স্মার্টফোনধারী। এরপর সমান ৬৮ শতাংশ (শহর) স্মার্টফোন ব্যবহার করা দেশগুলো হলো—মিশর, গুয়েতেমালা ও ইন্দোনেশিয়া।

বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে শহরে স্মার্টফোনধারী ৫২ শতাংশ এবং গ্রামে ৪০ শতাংশ। আর পাকিস্তানে শহরে ৪৬ শতাংশ এবং গ্রামে ৩৬ শতাংশ স্মার্টফোন ব্যবহারকারী রয়েছেন।

সিরিয়ায় একটি স্থিতিশীল অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের পরিকল্পনা

মোবাইলফোন ইন্ডাস্ট্রি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (এমআইওবি) সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মেসবাহ উদ্দিন বলেন, বিশ্বের পিছিয়ে পড়া দেশগুলোতে সিম ও স্মার্টফোনের প্যাকেজ দেওয়া হয়। যেখানে গ্রাহক কিস্তিতে ফোনের দাম পরিশোধ করতে পারেন। বাংলাদেশে এ সুবিধা কম। স্মার্টফোন কিনতে গেলে ন্যূনতম যে, খরচ তা একসঙ্গে জোগাড় করতে না পারা মানুষ এখনো বাংলাদেশে অনেক। আরও অনেকক্ষেত্রে অসুবিধা রয়েছে। সেগুলো চিহ্নিত করে সরকার পদক্ষেপ নিলে আমরা এগিয়ে যেতে পারবে।