বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : এক সময় স্মার্টফোনে মাত্র একটি ক্যামেরা থাকত, তবে এখন তিন বা তারও বেশি ক্যামেরা থাকা একেবারেই সাধারণ বিষয়। এটি শুধু মার্কেটিং কৌশল নয়; বরং ভালো মানের ছবি তুলতে একাধিক ক্যামেরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
একাধিক ক্যামেরার প্রয়োজনীয়তা
ডিএসএলআর ক্যামেরায় বিভিন্ন শটের জন্য লেন্স পরিবর্তন করা যায়। কিন্তু স্মার্টফোনের আকার ছোট হওয়ায় এতে লেন্স পরিবর্তন সম্ভব নয়। এ সমস্যা সমাধানে স্মার্টফোন নির্মাতারা একাধিক ক্যামেরা যুক্ত করেন, যাতে প্রতিটি লেন্সের ভিন্ন ফোকাল লেংথ ও বিশেষত্ব থাকে। ফলে ব্যবহারকারীরা আলট্রা-ওয়াইড, টেলিফটো বা ম্যাক্রো মোড বেছে নিলে ফোনটি স্বয়ংক্রিয়ভাবে সঠিক ক্যামেরা নির্বাচন করে উন্নতমানের ছবি তোলে।
সাধারণ ক্যামেরা সেটআপ
বর্তমানে আইফোন ১৬ প্রো, গুগল পিক্সেল ৭ প্রো, স্যামসাং গ্যালাক্সি এস ২৫ বা ওয়ানপ্লাস ১৩-এর মতো স্মার্টফোনে সাধারণত তিনটি ক্যামেরা থাকে:
- প্রাইমারি (ওয়াইড-অ্যাঙ্গেল) ক্যামেরা: এটি সাধারণ ফটোগ্রাফির জন্য ব্যবহৃত হয় এবং সাধারণত সবচেয়ে শক্তিশালী সেন্সর যুক্ত থাকে।
- আলট্রা-ওয়াইড অ্যাঙ্গেল ক্যামেরা: বিস্তৃত দৃশ্য ধারণ করতে পারে, যা ল্যান্ডস্কেপ বা গ্রুপ ফটোর জন্য উপযুক্ত।
- টেলিফটো ক্যামেরা: অপটিক্যাল জুম সুবিধা দেয়, যা দূরের বস্তুর স্পষ্ট ছবি তুলতে সাহায্য করে।
কিছু ফোনে চারটি ক্যামেরা থাকে। যেমন, স্যামসাং গ্যালাক্সি এস ২৫ আলট্রা-তে রয়েছে পেরিস্কোপ টেলিফটো ক্যামেরা, যা দূরের বস্তু আরও স্পষ্টভাবে ক্যাপচার করতে সাহায্য করে। কিছু হুয়াওয়ে ও অনার ফোনে মনোক্রোম সেন্সর থাকে, যা সাদা-কালো ছবি তোলার পাশাপাশি বিস্তারিত আরও স্পষ্ট করে।
একাধিক ক্যামেরার সমন্বিত কাজ
শুধু ক্যামেরার সংখ্যা বেশি হলেই ভালো ছবি ওঠে না, বরং ইমেজ প্রসেসিংও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। উদাহরণস্বরূপ, গুগল পিক্সেল ৩-তে মাত্র একটি ক্যামেরা ছিল, তবুও উন্নত কম্পিউটেশনাল ফটোগ্রাফির মাধ্যমে এটি প্রতিযোগীদের ডুয়েল বা ট্রিপল ক্যামেরার সঙ্গে পাল্লা দিয়েছে।
স্মার্টফোনের ক্যামেরাগুলো সাধারণত কম্পিউটেশনাল ফটোগ্রাফি ব্যবহার করে। এতে একাধিক ক্যামেরা থেকে ছবি সংগ্রহ করে উন্নত ইমেজ প্রসেসিংয়ের মাধ্যমে চূড়ান্ত ছবি তৈরি করা হয়। উদাহরণস্বরূপ:
- পোর্ট্রেট মোড: একাধিক ক্যামেরা বিষয়বস্তুর গভীরতা পরিমাপ করে, যাতে সাবজেক্টের পেছনের অংশ ব্লার (বোকেহ) করা যায়।
- মনোক্রোম সেন্সর: এটি আলোর সংবেদনশীলতা বাড়িয়ে এবং কনট্রাস্ট উন্নত করে আরও স্পষ্ট ছবি তৈরি করতে সাহায্য করে।
স্মার্টফোনের একাধিক ক্যামেরা শুধু সংখ্যার ব্যাপার নয়, বরং এটি বিভিন্ন ফটোগ্রাফি প্রয়োজন মেটাতে সাহায্য করে। উন্নত ইমেজ প্রসেসিং এবং ক্যামেরার সমন্বিত কাজের ফলে আজকের স্মার্টফোনগুলোতে প্রায় ডিএসএলআরের মতো ফটোগ্রাফি করা সম্ভব হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।