অন্যরকম খবর ডেস্ক : কারও কাছে সাপ এক ভয়ংকর প্রাণী মনে হলেও এই গ্রামে সাপ এক গুরুত্বপূর্ণ প্রাণী, যাকে ঘিরে গড়ে উঠেছে তাদের জীবন ও জীবিকা। এখানে বাচ্চাদের খেলনা কোনও পুতুল নয়, সাপ দিয়ে খেলে বাচ্চারা, গরু-কিংবা ছাগলের চামড়া নয়, সাপের চামড়ায় তৈরি হয় জুতা, ওয়ালেট, বেল্ট সহ নানা পণ্য। এখানেই শেষ নয়, সাপকে বোতলে ডুবিয়ে বানানো হয় বিশেষ মদ, আবার সাপের মাংস খাওয়া হয় নানা রেসিপি বানিয়ে। তাই হাঁস মুরগি নয়, পালন করা হয় সাপ।
হ্যানয়ের কাছের এই ছোট্ট গ্রামটি শুধু খাবার বা পণ্যের জন্য নয়, এর ঐতিহ্যের জন্যও বিখ্যাত। স্থানীয়রা জানান, ১১শ শতকে এক সাহসী জেলে এক সাপাকৃতি দানবকে হত্যা করেছিলেন। সেই দিন থেকেই এই গ্রামে সাপ ধরার কাজ শুরু হয়। দ্যাং ভ্যান চিয়েন নামের এক সাপ প্রশিক্ষক জানান, তাদের পূর্বপুরুষদের সময় থেকেই সাপ ধরার কাজ পেশা হিসেবে চলে আসছে। তবে, বন্য সাপ ধরা যখন নিষিদ্ধ হয়ে যায়, তখন তারা সরকারি অনুমোদন নিয়ে সাপ পালন শুরু করেন। এখন এই গ্রামে বাণিজ্যিকভাবে সাপ পালন করে সাপের মাংস ও চামড়া বিক্রি করা হয়।
এই গ্রামে ঢুকলেই অন্যরকম এক পরিবেশের মুখোমুখি হতে হয়। বাচ্চারা সাপ নিয়ে খেলা করছে, প্রশিক্ষকরা যেন সাপের সঙ্গে কথা বলছেন। সাপগুলোকে শীতকালে বিশেষভাবে যত্ন নিতে হয়। দোকানদার ট্রান থি হুং জানালেন, শীতকালে সাপের শরীর গরম রাখতে খুব যত্ন নিতে হয়। সামান্য অবহেলা তাদের মৃত্যুর কারণ হতে পারে। সাপ পালনের জন্য ভালোবাসা আর ধৈর্য খুব প্রয়োজন।
এই গ্রামে সাপের চামড়ায় তৈরি পণ্য যেমন মানিব্যাগ, বেল্ট, জুতা ইত্যাদি পর্যটকদের মন কাড়ে। আর খাবারের তালিকায় সাপের মাংসের বিভিন্ন পদ এক অন্যরকম স্বাদ এনে দেয়। পর্যটক গুয়েন তাত লে জুং জানান, লে ম্যাটের সাপের মাংসের স্বাদ এতটাই আলাদা যে বারবার এখানে আসতে ইচ্ছে হয়। এখানে সাপ শুধু ভয়ঙ্কর এক প্রাণী নয়, বরং জীবনের একটি অংশ। তাদের ঐতিহ্য আর ভালোবাসা মিলে তৈরি করেছে এক সম্পূর্ণ নতুন সংস্কৃতি।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।