লাইফস্টাইল ডেস্ক : বর্ষা মৌসুমে বাংলাদেশে সাপের দংশনের শিকার হওয়ার ঘটনা বেশ সাধারণ। প্রতি বছর প্রায় পাঁচ লাখ আশি হাজার মানুষ সাপের কামড়ে আক্রান্ত হয়, যার ফলে প্রায় ছয় হাজার মানুষ মারা যান। তবে, সাপের কামড় থেকে নিরাপদে বাঁচার উপায় জানা থাকলে মৃত্যুর ঝুঁকি অনেক কমানো যায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক, সাপে কাটলে কী করবেন এবং কী করবেন না।
সাপে কাটার প্রতিকার
সাপে কাটলেই মৃত্যু—এটি একটি প্রচলিত ভুল ধারণা। বাংলাদেশে প্রায় ৮০ শতাংশ সাপ নির্বিষ, যারি এদের কামড়ে মানুষের মৃত্যু হয় না। তবে, সাপ যদি বিষাক্ত হয়, তাহলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি। সাপে কামড়ানোর পর অ্যান্টিভেনম প্রয়োগ করাই হলো প্রাথমিক ও গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা।
বাংলাদেশে ব্যবহৃত অ্যান্টিভেনম ভারতের তামিলনাড়ু থেকে আসে, তবে এটি সব সময় কার্যকর হয় না। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, স্থানীয় সাপের বিষ দিয়ে অ্যান্টিভেনম তৈরি করলে তবেই তা কার্যকর হবে।
সাপে কাটলে কী করবেন
দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন: সাপে কাটার সঙ্গে সঙ্গে কাছের হাসপাতাল বা চিকিৎসকের কাছে যান।
হলকা করে বাধুন: সাপে কাটা পেশী যত কম সম্ভব নড়াচড়া করুন।
হাত বা পা ভাঙলে যেমন করে কাপড় দিয়ে হলকা করে বাধা হয়, সেভাবে সাপে কাটার স্থানটি বাধুন।
পেশীর নড়াচড়া কমান: পেশীর নড়াচড়া কমিয়ে রাখলে বিষের ছড়ানো কম হবে।
সাপে কাটলে কী করবেন না
আতংকিত হবেন না: আতংকিত হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।
ওঝা বা ঝাড়ফুঁকের অপেক্ষা করবেন না: এতে সময় নষ্ট হয় এবং পরিস্থিতি আরও জটিল হতে পারে।
চিকিৎসকের পরামর্শের আগে কিছু খাবেন না: কিছু খাওয়া বিপদজনক হতে পারে।
কোন মলম বা মালিশ লাগাবেন না: এতে বিষের প্রভাব বাড়তে পারে।
শক্ত করে বাধা যাবে না: রক্ত জমে গিয়ে আক্রান্ত ব্যক্তি পঙ্গু হয়ে যেতে পারেন।
বাংলাদেশে অ্যান্টিভেনম উৎপাদন
বাংলাদেশে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের আর্থিক সহায়তায় ২০১৭ সালে অ্যান্টিভেনম তৈরির একটি প্রকল্প শুরু হয়। এই প্রকল্পের আওতায় দেশি সাপের প্রায় সব প্রজাতির ওপর জরিপ চালানো হয়েছে এবং সবচেয়ে বিষধর সাপের প্রজাতি সংগ্রহ ও তাদের লালনপালন নিয়ে কাজ চলছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সাপের জীবনযাপন ও দংশন প্রক্রিয়া সম্পর্কে পূর্ণ ধারণা পেলে অ্যান্টিভেনম তৈরির কাজ সফল হবে।
সাপে কাটার ঘটনা ঘটলে আতংকিত না হয়ে দ্রুত চিকিৎসা নিন এবং সঠিক পদ্ধতি অনুসরণ করুন। সঠিক সময়ে সঠিক পদক্ষেপ নিলে সাপের কামড় থেকে মৃত্যু এবং গুরুতর আঘাত থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব। স্থানীয় সাপের বিষ দিয়ে তৈরি অ্যান্টিভেনম পাওয়া গেলে বাংলাদেশে সাপে কাটার কারণে মৃত্যুর সংখ্যা অনেক কমে আসবে বলে আশা করা যায়।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।