জুম-বাংলা ডেস্ক : বিশ্বে জুতার ধরন কত রকমের—অক্সফোর্ড, লোফার, মোকাসিন, বোট শু, স্লিপ অন, ডার্বি বা গিবসন। তবে বর্তমান প্রজন্মের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় জুতাগুলোর মধ্যে একটি হলো স্নিকার্স। শুরুর দিকে মূলত খেলাধুলা বা শরীরচর্চার জন্য এই জুতা তৈরি করা হলেও, এখন স্নিকার্স হয়ে উঠেছে ফ্যাশনের অন্যতম উপকরণ। সহজে পায়ে গলিয়ে নেয়া যায় এবং আরামদায়ক বলে তরুণ প্রজন্মের মধ্যে এর ব্যবহার ব্যাপকভাবে বেড়েছে।
স্নিকারের ইতিহাস প্রায় ১০৭ বছরের। ১৯১৭ সালে যুক্তরাষ্ট্রের কনভার্স কোম্পানি প্রথমবারের মতো স্নিকার তৈরি করে, যার নাম ছিল ‘নন-স্কিড’। এটি প্রথমে বাস্কেটবল খেলোয়াড়দের জন্য ডিজাইন করা হয়। এরপর ১৯২২ সালে এর নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘চক টেলর অল স্টার’। সেই সময়ের বাস্কেটবল খেলোয়াড় চক টেলরের নামানুসারে এই নামকরণ করা হয়। শুরুতে এটি লাল রঙের গোড়ালি ঢাকা ও সাদা-কালো রঙের লো কাট (গোড়ালির নিচ পর্যন্ত) দুটি রূপে বাজারে আসে।
১৯৫০ এবং ’৬০-এর দশকে যুক্তরাষ্ট্রের বাস্কেটবল দলগুলো স্নিকার্সকে জনপ্রিয় করে তোলে। এরপর থেকে শুধু খেলাধুলার নয়, ফ্যাশন দুনিয়াতেও এর ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়। স্নিকার্সের লো কাট ধরনের জুতা বিশেষভাবে জনপ্রিয়, কারণ এটি খুব সহজে পায়ে গলানো যায়। তরুণদের মধ্যে লো কাট স্নিকার্সের ব্যবহার তাই অনেক বেশি।
কনভার্সের পাশাপাশি নাইকি, অ্যাডিডাস, রিবকসহ বিভিন্ন ব্র্যান্ড স্নিকার্স তৈরিতে নতুন নতুন উদ্ভাবন আনছে। এসব প্রতিষ্ঠান ক্যানভাস ও রাবারের সমন্বয়ে আরামদায়ক, মজবুত এবং স্টাইলিশ স্নিকার্স তৈরি করে। শীতকালে লো কাট স্নিকারের বদলে বুট কাট বা গোড়ালি ঢাকা স্নিকার বেশি ব্যবহৃত হয়, যা শীতের জন্য আরামদায়ক।
বর্তমানে স্নিকার্স আর শুধুই পুরুষদের জুতা নয়। এই জুতাকে ইউনিসেক্স হিসেবে বিবেচনা করা হয়, কারণ পুরুষদের পাশাপাশি মেয়েরাও স্নিকার্স পছন্দ করে। গোলাপি, লাল, সাদা-কালো ছাড়াও বিভিন্ন রঙের স্নিকার্স পাওয়া যায়। এমনকি যারা ভ্রমণ ভালোবাসেন, তাদের জন্য রয়েছে ক্যামোফ্লেজ ডিজাইনের স্নিকার, যা বিভিন্ন রঙের মিশ্রণে তৈরি। এই বৈচিত্র্য ও আরামের কারণে স্নিকার্স এখন ক্যাম্পাস, অফিস, ভ্রমণ—প্রায় সব জায়গাতেই পরা যায়।
স্নিকার্সের ক্ল্যাসিক রং হিসেবে লাল ও সাদা-কালো জনপ্রিয় হলেও বর্তমানে তরুণদের কথা মাথায় রেখে নানা ডিজাইন ও রঙের স্নিকার বাজারে পাওয়া যায়। পাশাপাশি ক্যাজুয়াল-স্টাইলের পোশাকের সঙ্গে স্নিকার্স দারুণ মানানসই। জিনস ও টি-শার্ট কিংবা হুডির সঙ্গে স্নিকার্স যেমন মানিয়ে যায়, তেমনি ক্যাজুয়াল ব্লেজারের সঙ্গেও বেশ ভালো লাগে। ফলে স্নিকার্স এখন কেবল খেলার মাঠেই নয়, ফ্যাশনের প্রতীক হিসেবেও পরিচিতি পেয়েছে।
দামের দিক থেকেও স্নিকার্স বেশ বৈচিত্র্যপূর্ণ। ব্র্যান্ড, রং, ডিজাইনের ওপর ভিত্তি করে স্নিকার্সের দাম ৮০০ টাকা থেকে ৫ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। দেশের প্রায় সব জেলা ও উপজেলার জুতার দোকানে স্নিকার্স পাওয়া যায়, পাশাপাশি বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মেও এগুলো কিনতে পারেন। স্নিকার্সের দীর্ঘ এই যাত্রা ফ্যাশন দুনিয়ার চাহিদা মেটাতে সক্ষম হয়েছে। খেলাধুলার জন্য তৈরি এই জুতা আজ ফ্যাশনের অপরিহার্য অনুষঙ্গ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।