জুমবাংলা ডেস্ক : ‘আমি চেয়েছি মানুষ আমার জীবন থেকে শিখুক। আমি চাই না অন্য কেউ একই ভুল করুক।’ গত ফেব্রুয়ারিতে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এমন কথাই বলছিলেন দেশের আলোচিত ‘জল্লাদ’ শাহজাহান ভূঁইয়া। তখন অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হয় শাহজাহানের স্মৃতিকথা ‘কেমন ছিল জল্লাদ জীবন’।
আজ সোমবার (২৪ জুন) রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন শাহজাহান। তার বোন ফিরোজা বেগম ভাইয়ের মৃত্যুর বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। ফিরোজা বেগম জানান, তার ভাই বেশ কিছুদিন ধরে ঢাকার অদূরে হেমায়েতপুরে থাকতেন। রবিবার রাতে তার বুকে ব্যথা শুরু হয়। এরপর তাকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল।
তিন দশকেরও বেশি সময় কারাগারে ছিলেন শাহজাহান। এ সময় রাজনীতিবিদ, জঙ্গি ও সামরিক কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামির ফাঁসি কার্যকর করেছেন। এসব ঘটনাই লিপিবদ্ধ হয়েছিল কিংবদন্তি প্রকাশনী থেকে বেরোনো স্মৃতিকথায়। বইমেলায় শাহজাহানকে ঘিরে ছিল পাঠকের ভিড়।
শাহজাহান জানিয়েছিলেন দীর্ঘ কারাবাসে স্মৃতিকথা লেখার ধারণা পান। সে সময় আসামিদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা ছাড়া তার খুব বেশি কিছু করার ছিল না। তিনি বলেছিলেন, ‘আমি একটা ডায়েরি রাখতাম। গত বছর জেল থেকে বের হয়ে প্রকাশনী সংস্থার মালিকের সঙ্গে দেখা করি।’
১৯৯১ সালে গ্রেপ্তার হন শাহজাহান। ডাকাতি ও হত্যার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হন তিনি। তাকে ১৮৪ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পরে আপিলে তার সাজা কমিয়ে ৪২ বছর করা হয়। তবে জল্লাদ হিসেবে প্রতিটি মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের পর তার সাজা দুই মাস করে কমিয়ে আনা হয়েছিল।
এছাড়া সাধারণ ও বিশেষ ছাড়ের আওতায় তার কারাবাসের মেয়াদ ১০ বছর কমানো হয়। সব মিলিয়ে ৩১ বছর ৬ মাস ২ দিন কারাভোগের পর ২০২৩ সালের ১৮ জুন ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পান তিনি।
জল্লাদ হিসেবে কাজ করা নিয়ে শাহজাহান বলেন, ‘আমি আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করেছি মাত্র। কোনো আসামির প্রতি আমার কোনো সহানুভূতি ছিল না।’ তার দাবি, কারাগারে প্রধান জল্লাদ এবং অন্যদের সহকারী হয়ে কমপক্ষে ৬০ জনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছেন তিনি। যদিও কর্তৃপক্ষ তাকে মাত্র ২৬ জনের মৃত্যুদণ্ডের জন্য কৃতিত্ব দেওয়া হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।