বিনোদন ডেস্ক : ঢাকাই সিনেমার একসময়ের পর্দা কাঁপানো অভিনেত্রীদের একজন চিত্রনায়িকা মুনমুন। ১৯৯৭ সালে গুণী পরিচালক এহতেশামের ‘মৌমাছি’ সিনেমার মধ্য দিয়ে রূপালি ভুবনে তার পথচলা শুরু। দীর্ঘ ক্যারিয়ারে প্রায় ৮৫টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। জুটি বেঁধেছেন শাকিব খানের সঙ্গেও। মাঝে নানা বিতর্কের কারণে সিনেমা থেকে দূরে সরে যান মুনমুন। অবশেষে সেই বিরতির ইতি টেনে আগামী মাসে আবার মূলধারার সিনেমায় ফিরছেন তিনি।
নির্মাতা মিজানুর রহমান মিজানের ‘রাগী’ সিনেমায় ভিন্ন রূপে পাওয়া যাবে এই অভিনেত্রীকে। সিনেমা ও নানা বিষয় নিয়ে দেশের জনপ্রিয় পত্রিকা দৈনিক আমাদের সময় অনলাইন’র সঙ্গে কথা বলেছেন মুনমুন।
বিরতির মাঝেও কিন্তু আপনাকে কয়েকটি সিনেমায় দেখা গেছে। তবে মূল ধারার সিনেমায় কাজ করলেন অনেকদিন পর। কেমন লাগছে?
শুরুতে আপনাদের ধন্যবাদ জানাই, আমার খোঁজ নেওয়ার জন্য। মাঝে যে ক’টি ছবিতে কাজ করেছি, সবগুলোরই ছিল অনুরোধের। আর সেখানে আমার চরিত্রও ছিল একেবারে অল্প সময়ের জন্য। তাই সেগুলো নিয়ে কথা না বলাই ভালো। বলতে পারেন ‘রাগী’ দিয়ে নতুন এক মুনমুনের যাত্রা শুরু হচ্ছে। আর এতে দর্শকরা আমাকে একেবারে ভিন্ন একটি চরিত্রে দেখবেন। নির্মাতা মিজানুর রহমান মিজান ও সিনেমার টিম সবাই বেশ আন্তরিক ছিল, তাই কাজটি করেও বেশ আনন্দ পেয়েছি। আর এই সিনেমায় নতুন-পুরোনো মিলিয়ে বেশ ক’জন জনপ্রিয় শিল্পী অভিনয় করেছেন। সব মিলিয়ে কাজটি বেশ ভালো হয়েছে।
‘রাগী’তে ভিন্ন রূপে আসছেন। রূপটি কেমন, ভয়ানক?
আপনারা পোস্টার দেখেছেন বলে কি বলছেন ভয়ানক! তাহলে ভয়ানকই। আসলে এখানে আমি ভিলেনের চরিত্রে অভিনয় করেছি। যে নাকি সত্যি অনেক ভয়ানক একজন খারাপ মানুষ। চরিত্রটি এমন যে, মানুষ দেখলে আমাকে ঘৃণা করবে, গালি দেবে। আর ছবিটি দেখার পর গালি দিলেই আমার স্বার্থকতা। বাকিটা হলে গিয়েই দেখবেন।
আপনি বলছেন, সিনেমাটি দেখে দর্শক গালি দিলেই আপনার স্বার্থকতা। এমনিতেই কিন্তু আপনাকে নিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক নেতিবাচক কথা আছে। তার মধ্যে আবার এটি যোগ হলে বিষয়টি কেমন হবে?
দেখুন, শিল্পীদের নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা থাকবেই। আর আমার যে অতীত নিয়ে কথা বলা হচ্ছে, আমি কিন্তু সে রকম না। আমাকে অনেকেই ইতিহাসে কালো অধ্যায়ের সঙ্গে মিলিয়েছে। আমি মুনমুন কিন্তু কখনই তেমন ছিলাম না। একজন নির্মাতা যেভাবে চেয়েছেন, আমি কিন্তু সেভাবেই অভিনয় করেছি। আমি অ্যাকশন হিরোইন ছিলাম। আর সব সময় অভিনয়ের সর্বোচ্চটুকু দেওয়া চেষ্টা করেছি। একটা সময় শিল্পীদের মধ্যে সবচেয়ে আবেদনময়ী কিন্তু আমিই ছিলাম। আর সে কারণে আমার অভিনয়ের ডাকও বেশি আসত। আমি কিন্তু অভিনয়ের বাইরে খারাপ কোনো কাজে বা নেশায় যুক্ত ছিলাম না। এমনটা কিন্তু কেউই বলতে পারবে না। আমি সব সময়ই সম্মানের সঙ্গে জীবনযাপন করেছি।
তারপরও অতীত কিন্তু মানুষের পিছু ছাড়ে না…
ঠিক আছে, কিন্তু অতীতকে আঁকড়ে ধরে তো আর জীবন চলে না। আমি সব সময়ই নিজের জায়গা থেকে বিতর্কের ঊর্ধ্বে থাকার চেষ্টা করেছি। আমি যখন অভিনয় থেকে আড়ালে ছিলাম, তখন কি আমাকে নিয়ে কোনো খারাপ সংবাদ প্রকাশ হয়েছে? যদি আমি খারাপ মানুষ হতাম, তাহলে আপনারা কিন্তু খবরের কাগজে আমাকে নিয়ে ঠিকই খারাপ লিখতেন। যাই হোক, আমি নতুন করে পথ চলতে চাই।
মাঝে ইন্ডাস্ট্রি নিয়ে আপনার অনেক ক্ষোভ ছিল। তা কী কমেছে?
কার সঙ্গে রাগ করব, সবাই তো আপনজন। অভিমান ছিল আমাদের পুরোনো শিল্পীদের এখন অভিনয়ের জন্য আর ডাকা হয় না। এটা কিন্তু এখনো আছে। দেখুন, এক সময়ের জনপ্রিয় তারকারা এখন অনেকেই ঘরবন্দি। তাদের খবর কেউ না। আমি মনে করি, এই প্রজন্মের প্রযোজক, নির্মাতা, শিল্পীদের সে বিষয়গুলো নিয়ে চিন্তা ভাবনা করা উচিত। এখন সিনেমার সুবাতাস চলছে। তাই বলব, বিষয়টি একটু নজরে রাখার।
আর কী নিয়ে ব্যস্ত আছেন?
উল্লেখ্য করার মতো তেমন কোনো কাজ নেই আপাতত। এখন একটাই কাজ ‘রাগী’। আর এর জন্যই অপেক্ষা করছি। আশা করি, দর্শক ছবিটি দর্শকদের ভালো লাগবে।
ব্যক্তিজীবন কীভাবে কাটছে?
চলছে কোনোমতে। ঘর-সংসার নিয়ে ব্যস্ত আছি। আর ব্যক্তিজীবনের কথাগুলো নিজের মধ্যেই থাক, অন্য কোনদিন বলব।
সূত্র : দৈনিক আমাদের সময় অনলাইন
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।