জুমবাংলা ডেস্ক : সপ্তাহের ব্যবধানে আরও বেড়েছে শাক-সবজি, আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের দাম। দাম বাড়ার তালিকায় রয়েছে মসলা, কাঁচা মরিচ, আদা-রসুনসহ আরও বেশ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য। তবে চাল, ডাল ও আটা-ময়দার দাম আগের মতোই স্থিতিশীল। মাছ-মাংসের দামও বাড়েনি বা কমেনি।
সপ্তাহের ব্যবধানে কিছু কিছু পণ্যের দাম বাড়ার পেছনে ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবকেই কারণ হিসেবে বলছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। বিশেষত, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব পড়েছে শাক-সবজির বাজারে। বিক্রেতারা বলছেন, ঘূর্ণিঝড়ে কৃষকের সবজি ক্ষেতের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এতে বাজারে সরবরাহ কমেছে। এ কারণে দামও বাড়তি। তবে তাদের এ ধরনের ব্যাখ্যাকে অজুহাত বলছেন ক্রেতারা।
শুক্রবার (৩১ মে) সকালে রাজধানীর শ্যামলী ও মোহাম্মদপুর কাঁচাবাজার ঘুরে বাজারের এ চিত্র দেখা গেছে।
খুচরা ব্যবসায়ীদের দাবি, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব ও হিমাগারে মূল্যবৃদ্ধির কারণে আলুর দাম বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারে। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সরবরাহ কমে যাওয়ায় কাঁচা মরিচসহ অন্যান্য সবজির দাম বাড়তি।
মোহাম্মদপুর কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৫৫-৬০ টাকায়। যা গত সপ্তাহে ছিল ৫০ টাকা। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত বছরের মাঝামাঝি থেকে বাড়তে শুরু করে আলুর দাম। আমদানির আলু আসার পর দাম কিছুটা কমে। তবে চলতি মৌসুমে আলুর দাম তেমন কমেনি।
ওই বাজারের ব্যবসায়ী খলিল রহমান বলেন, হিমাগারের গেটে পাইকারিতে প্রতি কেজি আলু কিনতে হচ্ছে ৪২ টাকায়। এরপর পরিবহন ও লেবার খরচ আছে। ৫৫ টাকার কমে আলু বিক্রি করলে লাভ থাকে না।
এদিকে, সরবরাহ ঘাটতির অজুহাতে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ২০০ টাকায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত এক মাস ধরে কাঁচা মরিচের বাজার চড়া। কোরবানির ঈদ সামনে রেখে এবং ফলন তুলনামূলক কম হওয়ায় চলতি মাসে পণ্যটির দাম দ্বিগুণ হয়েছে। অথচ দুই সপ্তাহ আগেই কাঁচা মরিচের কেজি ছিল ১০০ টাকা। যা গত সপ্তাহে দ্বিগুণ হয়ে ২০০ টাকায় উঠে।
দীর্ঘদিন ধরেই চড়া ডিমের বাজার। সপ্তাহের ব্যবধানে ডজনপ্রতি ডিমের দাম বেড়েছে ৫ টাকা। বাজারে এখন প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৫৫ টাকায়। হালি হিসেবে কিনতে গেলে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকা। কোথাওবা ৬০ টাকাও রাখা হচ্ছে। এছাড়া সাদা রঙের প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪০-১৪৫ টাকায়। বাজারের তুলনায় অলিগলির দোকানে দাম আরও কিছুটা বেশি। এসব দোকানে ডিমের ডজন এখন ১৬০ টাকায় ঠেকেছে।
তবে স্থিতিশীল রয়েছে মাংসের বাজার। রাজধানীর বাজারগুলোতে প্রতি কেজি ব্রয়লার ২০০-২২০ টাকা এবং সোনালি জাতের মুরগি ৩৫০-৩৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৭৫০-৭৮০ টাকা আর খাসি মাস ১১৫০-১২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়েছে। বাজারে এখন মানভেদে প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়। প্রতি কেজি দেশি রসুন ২০০-২২০ টাকা এবং আমদানি করা চায়না রসুন ২২০- ২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গত দুই সপ্তাহে আদার দাম কেজিতে বেড়েছে ২০-৩০ টাকা।
ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাব পড়েছে শাক-সবজির বাজারে। বিক্রেতারা বলছেন, ঘূর্ণিঝড়ে কৃষকের সবজির অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এতে সরবরাহ কিছুটা ব্যাহত হওয়ায় কিছু সবজির দাম কেজিতে ১০-২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
গত সপ্তাহে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া টমেটো সপ্তাহের ব্যবধানে ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মাঝারি আকারে লাউয়ের দাম প্রতি পিসে ১০-২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকায়।
বাজারে এসেছে নতুন কচুরমুখি। এ পণ্যটি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১১০-১২০ টাকায়। এছাড়া প্রতি কেজি বেগুন ৬০-৮০ টাকায়, পেঁপে ও শসা ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পেঁপে ও শসার দাম সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা।
শ্যামলী নতুন কাঁচাবাজারের সবজি বিক্রেতা শাহজাহান বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের কারণে সবজি খেতের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বাজারে সবজির ঘাটতিও রয়েছে। এ কারণে দাম একটু বেশি।
এছাড়া পটোল, ঢ্যাঁড়স, চিচিঙ্গা, ঝিঙে ও করলা আগের মতোই ৬০ টাকা বা এর আশপাশের দামে কিনতে পারছেন ভোক্তারা।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।