জুমবাংলা ডেস্ক : কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতে পানির সঙ্গে ভেসে আসছে মরা জেলিফিশ। সপ্তাহ খানেক ধরেই প্রতিদিন এসব মরা জেলিফিশ ভেসে আসছে। এর মধ্যে বুধবার ও বৃহস্পতিবার দুইদিন সর্বোচ্চসংখ্যক মরা জেলিফিশ ভেসে এসেছে।
সমুদ্র সৈকতে নিয়োজিত সি সেইফ গার্ডের ইনচার্জ ওসমান গণি বলেন, গত সপ্তাহ আগে থেকে ক্রমান্বয়ে মরা জেলিফিশগুলো ভেসে আসতে থাকে। বুধবার ও বৃহস্পতিবার বেশি-সংখ্যক এসেছে। ৬৫ দিন বন্ধ থাকার পর সাগরে নামা বোটের জালে আটকা পড়ে অথবা অনাবৃষ্টির কারণে সাগরের পানি বেশি গরম হওয়ায় জেলিফিশগুলো মরে কূলে উঠে আসছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে সরেজমিন ঘুরে দেখা গেছে, কক্সবাজার সমুদ্র সৈকতের নাজিরাটেক পয়েন্ট থেকে ইনানি পর্যন্ত সবখানে পড়ে আছে মরা জেলিফিশ। এসব মাছের মধ্যে কোনোটা আকারে ছোট, আবার কোনোটা বড়। মরা এসব জেলিফিশ দেখতে ভিড় করছেন উৎসুক পর্যটকরা। তবে দুর্গন্ধ ছড়ানোয় বিব্রত হচ্ছেন সবাই।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গত ১০ বছরে এভাবে মরা জেলিফিশ দেখা যায়নি সমুদ্র সৈকতে। হঠাৎ কেন এভাবে জেলিফিশ মারা যাচ্ছে তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছে সংশ্লিষ্টরাও।
গত কয়েকদিন ধরে ঢেউয়ের তোড়ে ভেসে আসা মৃত জেলিফিশ পড়ে আছে সাগর পাড়ে। এসব জলজ প্রাণীর মৃত্যুর কারণ জানতে উঠে পড়ে লেগেছেন গবেষকরা। নমুনা সংগ্রহ করে তারা গবেষণা করছেন।
সমুদ্র গবেষণা ইনস্টিটিউটের বিজ্ঞানী আবু সাইদ মোহাম্মদ শরীফ বলেন, ‘গভীর সাগরে লবণাক্ততার পরিমাণ বেড়ে গেলে কম লবণাক্ততার জায়গায় জেলেফিশ উপকূলে চলে আসতেই বালুতে আটকা পড়ে। তখন মরে যায়। দীর্ঘদিন সাগরে মাছ ধরা বন্ধ ছিল। হঠাৎ করেই অনেক ট্রলার মাছ ধরতে গেছে। তাদের জালে আটকেও অনেক জেলিফিশ মারা গিয়ে থাকতে পারে। গত মঙ্গলবার রাতে ভেসে আসা মরা জেলিফিশের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। গবেষণার পরই মৃত্যুর কারণ নিশ্চিত হওয়া যাবে। তখন সমুদ্রদূষণ বা অন্য কোনো কারণ আছে কি না তাও গবেষণায় উঠে আসবে।’
প্রাণঘাতী না হলেও সমুদ্রসৈকতে পড়ে থাকা এসব জেলিফিশের সংস্পর্শে গেলে চুলকানিসহ নানা সমস্যা হতে পারে বলেও সতর্ক করে দেন এ বিজ্ঞানী
জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বদরুজ্জামান বলেন, এটা জেলিফিশ মরার কোনো সময় নয়। হয়তোবা উপকূলের কাছাকাছি এসে জেলেদের জালে আটকা পড়ে মারা যাচ্ছে। পরে জেলেরা মাছগুলো ফেলে দেয়ায় সৈকতের বেলাভূমিতে ভেসে আসছে। মরা জেলিফিশগুলো থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। এতে সৈকতের পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। অন্যদিকে জেলিফিশ মানুষের শরীরে লাগলে শরীরে চুলকানিমত প্রদাহ সৃষ্টি হচ্ছে। কৌতুহল বশত বহু পর্যটক মরা জেলিফিশ ধরে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছে।
কক্সবাজার টুরিস্ট পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল করিম জানিয়েছেন, সৈকতের মরা জেলিফিশগুলো থেকে যাতে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পরিবেশ দূষিত না হয় সেজন্য অপসারণের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।