টাটা মোটরস ভারতের বাজারে তাদের নতুন ব্যাটারিচালিত স্পোর্টস ইউটিলিটি ভেহিকেল (এসইউভি) হ্যারিয়ার ইভি-এর সরবরাহ (ডেলিভারি) শুরু করেছে। ২০২৫ সালের জুন মাসে চালু হওয়া এই গাড়িটির শোরুমের বাইরের মূল্য (এক্স-শোরুম মূল্য) শুরু হয়েছে ২১ লাখ ৪৯ হাজার রুপি থেকে।
এই গাড়িটি তিনটি প্রধান সংস্করণে (ট্রিম) পাওয়া যাচ্ছে—অ্যাডভেঞ্চার, ফিয়ারলেস ও এমপাওয়ার্ড। এ ছাড়া রয়েছে একটি বিশেষ কালো সংস্করণ স্টিলথ সংস্করণ, যা দেখতে আরও আক্রমণাত্মক ও দৃষ্টিনন্দন।
চারটি রঙে পাওয়া যাচ্ছে হ্যারিয়ার ইভি। এগুলো হলো-
-নৈনিতাল নকটার্ন
-এমপাওয়ার্ড অক্সাইড
-প্রিস্টাইন সাদা
-পিওর ধূসর
এই রঙগুলোর সঙ্গে মিল রেখে তৈরি স্টিলথ সংস্করণ গাড়িটিকে দিয়েছে একেবারে আলাদা স্টাইল ও উপস্থিতি।
নতুন প্ল্যাটফর্ম, দুই ধরনের চালনা ব্যবস্থা
হ্যারিয়ার ইভি তৈরি হয়েছে অ্যাক্টিভ প্লাস নামের প্ল্যাটফর্মে, যা মূলত টাটার প্রচলিত হ্যারিয়ার গাড়ির ডিজেল সংস্করণের একটি পরিবর্তিত রূপ। এই প্ল্যাটফর্মকে ব্যাটারিচালিত ব্যবস্থার জন্য বিশেষভাবে উন্নত করা হয়েছে।
গাড়িটি দুইটি চালনা পদ্ধতিতে (ড্রাইভ ট্রেন) পাওয়া যাবে: পেছনের চাকায় চালিত (রিয়ার হুইল ড্রাইভ – আরডব্লিউডি)
সকল চাকায় চালিত (অল হুইল ড্রাইভ – কিউডব্লিউডি, যা টাটা ‘কোয়াড হুইল ড্রাইভ’ নামে পরিচিত)
আরডব্লিউডি সংস্করণে রয়েছে একটি মোটর, যা পেছনের চাকায় শক্তি জোগায়।
কিউডব্লিউডি সংস্করণে সামনের ও পেছনের চাকায় দুটি মোটর থাকে, যা উন্নত নিয়ন্ত্রণ ও শক্তিশালী পারফরম্যান্স নিশ্চিত করে।
আরডব্লিউডি সংস্করণে ২৩৫ বিএইচপি শক্তি ও ৩১৫ এনএম ঘূর্ণনক্ষমতা (টর্ক) পাওয়া যায়। কিউডব্লিউডি সংস্করণে এই শক্তি বেড়ে দাঁড়ায় ৩৯১ বিএইচপি ও ৫০৪ এনএম টর্কে।
ব্যাটারির বিকল্প ও গতি
গাড়িটিতে রয়েছে দুটি ব্যাটারির বিকল্প:
৬৫ কিলোওয়াট-ঘণ্টা ব্যাটারি: যা একবার পূর্ণ চার্জে সর্বোচ্চ ৫৩৮ কিলোমিটার পর্যন্ত চালানো যাবে।
৭৫ কিলোওয়াট-ঘণ্টা ব্যাটারি: যা আরডব্লিউডি সংস্করণে ৬২৭ কিলোমিটার এবং কিউডব্লিউডি সংস্করণে ৬২২ কিলোমিটার পর্যন্ত চলতে সক্ষম।
প্রযুক্তি ও সুবিধা—সবই আধুনিক
হ্যারিয়ার ইভি-তে থাকছে একগুচ্ছ আধুনিক প্রযুক্তিগত সুবিধা ও উন্নত বৈশিষ্ট্য:
সম্পূর্ণ ডিজিটাল চালক ডিসপ্লে
-স্যামসাং ও হারম্যানের তৈরি নিও কিউএলইডি স্পর্শসংবেদী (টাচস্ক্রিন) বিনোদন ব্যবস্থা
-ডলবি অ্যাটমস প্রযুক্তিতে চারদিকে বিস্তৃত শব্দ ব্যবস্থা
-৫৪০-ডিগ্রি ক্যামেরা সেটআপ, যা গাড়ির চারপাশের পূর্ণাঙ্গ দৃশ্য দেয়
ডিজিটাল রিয়ার-ভিউ মিরর
স্বচ্ছ বনেট দৃশ্য (ট্রান্সপারেন্ট বনেট ভিউ)—যার মাধ্যমে গাড়ির নিচের জমির পরিস্থিতি স্ক্রিনে দেখা যাবে। অফ-রোডিং বা সংকীর্ণ পথে চালাতে এই ফিচার অত্যন্ত কার্যকর।
ভারতের ইলেকট্রিক গাড়ি বাজারে টাটার বড় পদক্ষেপ
হ্যারিয়ার ইভি শুধু শক্তিশালী ব্যাটারি ও দীর্ঘ রেঞ্জের জন্য নয়, আধুনিক নকশা, উন্নত প্রযুক্তি ও টাটার নতুন ব্যাটারিচালিত প্ল্যাটফর্মের জন্যও আলাদা গুরুত্ব পাচ্ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই গাড়ি ভারতের ব্যাটারিচালিত গাড়ির বাজারে একটি নতুন যুগের সূচনা করবে এবং টাটা মোটরসকে আরও শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছে দেবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।