জুমবাংলা ডেস্ক : অদম্য ইচ্ছা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে সফল খামারি খাতায় নাম লিখেছেন লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার প্রত্যন্ত অঞ্চল শিয়ালখোওয়া এলাকার সোলায়মান গণি। হোটেল ব্যবসায় কয়েক দফা পুঁজি হারিয়ে স্ত্রীর সহায়তায় দেশি জাতের গুরু পালন করে সফল হয়েছেন ইউপি সদস্য সোলায়মান ইসলাম।
পরবর্তীতে ভাই ভাই ডেইরী ফার্ম নামে উন্নত জাতের গরুর খামার প্রতিষ্ঠা করেছেন। তিনি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার চলবলা ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান সদস্য। ভাই ভাই ডেইরি ফার্ম থেকে বাৎসরিক আয় দিয়ে তিনি নির্মাণ করেছেন একটি পাঁচতলা বাড়ি। দুগ্ধ গাভী পালন করে একজন সফল খামারি হিসেবে এই অঞ্চলে মানুষের কাছে ব্যাপক পরিচিত লাভ করেছেন ।
তার ডেইরী ফার্মে দেশি-বিদেশি গাভি ও ষাঁড় পালন করা হচ্ছে। খামার থেকে প্রতিদিন ১৫০ লিটার দুধ উৎপাদন হয়।আসন্ন কোরবানি ঈদের জন্য ৩৫টি গরু প্রস্তুত করেছেন। এর মধ্যে ২০ গরু বিক্রি করেছেন বাকি গরুগুলো বিক্রির প্রক্রিয়া চলছে। এখনো তার খামাটে ৩০টি গাভী ও ২২টি ষাড় গরু রয়েছে। নিজস্ব কৃষি জমিতে সবজি উৎপাদনে জৈব সার হিসেবে গোবর ব্যবহার করছেন।
এতে ফসলের উৎপাদন বেড়ে গেছে। উন্নত জাতের ফ্রিজিয়ান ৩৫টি গাভির ৯টি গাভী দুধ দিচ্ছে। বাকি গাভিগুলো বাচ্চা প্রসবের সময় সন্নিকটে। গড়ে প্রতিদিন ১৪০ কেজির বেশি দুধ বিক্রি হচ্ছে তার খামার থেকে। এতে প্রতিদিন প্রায় ৭ হাজার টাকা আয় হয়। যা থেকে মাসিক আয় হয় ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা এবং প্রতি বছরে আয় হয় ২২ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
খামারি সোলায়মান গনি জানান, হোটেল ব্যবসায় কয়েকবার পুঁজি হারিয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়ি পরবর্তীতে কিছু বুঝতে না পেরে স্ত্রীর সহযোগিতায় দেশি দুইটি গরু পালন শুরু করি, পরবর্তীতে ২০১৩ সালে বিদেশি তিনটি দুগ্ধ গাভি পালনের মধ্য দিয়ে খামারের যাত্রা শুরু করা হয়। কয়েক বছরের ব্যবধানে খামারে এখন ছোট-বড় মিলিয়ে মোট ৫২টি গরু রয়েছে। খামার পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ও দেখভালের জন্য রয়েছেন ৬ জন শ্রমিক। তারা দিনরাত পরিশ্রম করেন।
এদের কেউ গরুকে ঘাস খাওয়ানোর কাজ করেন, কেউ গাভি থেকে দুধ নেওয়ার এবং বাজারজাত করার কাজ করছেন তবে ধীরে ধীরে এর চেয়ে আরও বড় পরিসরে খামার করার চিন্তাভাবনা রয়েছে। কিন্তু খাবারের দাম বেড়ে যাওয়ায় হিমশিম খেতে হচ্ছে।
সরকার গরুর খাদ্যের সিন্ডিকেটটা ভেঙে একটু সহযোগিতা করে, তাহলে আমারা যারা উদ্যোক্তা আছি তারা সফল হতে পারবো। ৭০০ টাকা ফিডের বস্তা ছিল, তখনও কিন্তু দুধের দাম ৫০ টাকা ছিল। এখন ১৩শ টাকা ফিটের বস্তা এখনও দুধের দাম ৫০ টাকা। তাহলে কীভাবে সম্ভব, আমরা কীভাবে টিকে থাকব। বর্তমানে আমার এখানে প্রায় ১ কোটি ৪০ লাখ টাকার গরু রয়েছে। শেড নির্মাণে আমার প্রায় ৬-৭ লাখ টাকা ব্যয় হয়েছে। সরকারিভাবে কোন ব্যাংক বা সহায়তা করা হয়নি।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আমার খামার পরিদর্শন করে গেছেন। তিনি শুধু নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছেন। এ এলাকায় দগ্ধ ক্রয় কেন্দ্র স্থাপনের দাবি জানান তিনি। বেকার যুবকদের উদ্দেশে কি বার্তা রয়েছে এমন প্রশ্নে তিনি জানান, বেকার যুবকরা উদ্যোক্তা হতে পারেন। ব্যাপক হারে না হলেও দুই-চারটা গরু দিয়ে আপনারা শুরু করতে পারেন। সঠিক পরিকল্পনায় একজন সফল খামারি হওয়া সম্ভব ।
এ ব্যাপারে উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোশারফ হোসেন বলেন, ভাই ভাই ডেইরি ফার্মটি আমি পরিদর্শন করেছি। খামারি সোলায়মান গণি অনেক পরিশ্রমী উপজেলায় শ্রেষ্ঠ খামারি নির্বাচিত হয়েছেন। তিনি সরকারি সহায়তা পাওয়ার যোগ্য, প্রাণীসম্পদ অফিস থেকে সকল ধরনের সহযোগিতা কর হবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।