বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ডেস্ক : পৃথিবী এখন যে অবস্থায় আছে তাতে কম বেশি সব দেশই চাইছে পেট্রোল ডিজেলের উপর নির্ভরতা কমাতে। প্রথমত জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহার করলে দূষণ বেশি হয়, দ্বিতীয়ত প্রাকৃতিক উপায়ে পাওয়া বিদ্যুতের সাহায্যে গাড়ি চালালে তুলনামূলক ভাবে খরচ কম হয়। অর্থাৎ পকেট পরিবেশ দুই ভালো থাকবে।
এমতাবস্থায় কাশ্মীরের এক অঙ্ক শিক্ষক তৈরি করেছেন সোলার কার। ডিজেলের বিকল্প হিসেবে তিনি বিগত এগারো বছর ধরে চেষ্টা করে এই গাড়িটি তৈরি করেছেন।
পেট্রোল ডিজেলের উপর নির্ভরতা কমার জন্যই দিন দিন ইলেকট্রিক গাড়ির চাহিদা বাড়ছে। ভারতও তার বাইরে নয়। ভারতেও CNG এবং electric car এর চাহিদা বেড়েছে অনেকাংশেই। গোটা পৃথিবী জুড়ে fossil fuels ব্যবহার নিয়ে গবেষণা চলছে। একে তো এর পরিমাণ সীমিত তায় পরিবেশের ক্ষতি করে। বিকল্প পথ খুঁজে বের করতে চাইছেন অনেকেই। পৃথিবীর বহু বিজ্ঞানী এই কাজের সঙ্গে জড়িত, তাতে ভারতের বিজ্ঞানীরাও আছেন।
কাশ্মীরের অঙ্ক টিচার বিলাল আহমেদ পেট্রোল ডিজেলের বিকল্প হিসেবে সৌরবিদ্যুৎ চালিত গাড়ি নিয়ে হাজির হয়েছেন। সূর্যের আলোর সাহায্যে চলবে এই গাড়ি।
বিলাল আহমেদের বাড়ি কাশ্মীরের রাজধানী শ্রীনগরের সনত নগর। বিলাল আহমদ বহু বছর ধরেই নানান গাড়ির ধারণা, ভাবনা নিয়ে কাজ করছিলেন। এই সৌরবিদ্যুৎ চালিত গাড়ি তাঁর সেই দীর্ঘ গবেষণা এবং পরিশ্রমের ফসল।
কী কী রয়েছে বিলালের এই গাড়িতে?
বিলাসবহুল গাড়িগুলোতে যে যে ফিচার পাওয়া যায় বিলাল আহমেদের গাড়িতেও সেই একই ফিচার রয়েছে। গাড়িটি সম্পূর্ন ভাবে বিদ্যুতে চলে, যা মনোক্রিস্টালাইন সোলার প্যানেল দিয়ে তৈরি। আহমেদের এই গাড়ি কম সূর্যের তাপেও বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম। এটা করার জন্য তিনি একটি বিশেষ ধরনের সোলার প্যানেল ব্যবহার করেছেন। গাড়ির বিশেষত্ব বা আকর্ষণীয় ফিচার হচ্ছে এর দরজা। দরজা উপরের দিকে খোলে এই গাড়ির। দরজার উপরে সোলার প্যানেল বসানো হয়েছে।
গাড়িটির চারপাশেই রয়েছে সোলার প্যানেল। তা সত্বেও যাতে গাড়িটিকে সুন্দর দেখায় সেই বিষয়েও খেয়াল রেখেছেন বিলাল আহমদ। এই গাড়ি নির্মাণ করতে তাঁর এগারো বছর সময় লেগেছে। তাই তিনি জানিয়েছেন তিনি যদি সাহায্য পেতেন তাহলে তিনি ভারতের এলেন মাস্ক হয়ে উঠতে পারতেন। এর আগে তিনি প্রতিবন্ধীদের জন্য একটি গাড়ি তৈরি কথা ভেবেছিলেন কিন্তু আর্থিক সমস্যার কারণে বাস্তবায়িত করা যায়নি। তারপরেই তিনি 2009 সালে সৌরবিদ্যুৎ চালিত গাড়ি তৈরির পরিকল্পনা করেন। এবং এই প্রজেক্ট শুরু করেন। তারপর টানা এগারো বছর চেষ্টার পর সফল হন নিজের লক্ষ্যে। পেশায় বিলাল আহমেদ একজন অঙ্ক শিক্ষক।
নিজের গাড়ি সম্পর্কে বিলাল আহমেদ বলেছেন, কাশ্মীরের আকাশ প্রায়শই মেঘলা থাকে তাই যাতে অল্প সূর্যের আলোতেও এই গাড়ি সব থেকে বিদ্যুৎ উৎপন্ন করতে পারে তেমনই একটা সোলার প্যানেল ব্যবহার করেছেন। তিনি এই সোলার প্যানেলের কার্যক্ষমতা কেমন সেটা যাচাই করার জন্য অনেক কোম্পানিতে গিয়েছেন বলেই জানিয়েছেন।
গাড়িতে কী করে microcrystalline সোলার প্যানেল ব্যবহার করা যায় এই বিষয় নিয়ে তাঁকে বিস্তর গবেষণা করতে হয়েছে। বাজারে দুধরনের সোলার প্যানেল পাওয়া যায়, এক microcrystalline এবং আরেকটি হল পলিক্রিস্টালাইন। তিনি প্রথমটি ব্যবহার করেছেন গাড়িতে। পাশাপাশি কম সূর্যের আলোতে কী করে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যায় সেদিকেও নজর রেখেছিলেন।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।