সমাজের কারণেই হিরো আলমরা হয়ে উঠেন জোকার

হিরো আলম

বিনোদন ডেস্ক : বলা হয়ে থাকে কাউকে এত কষ্ট দিও না। যেটা তাকে পাথর করে তুলে। সবকিছুর একটা লিমিট থাকে। যতক্ষণ সেটা তার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। ততক্ষণ স্বাভাবিক থাকবে। কিন্তু যখন সেটা তার সীমা পার করে ফেলবে। তখন সেটা তার নমনীয় রূপ হারিয়ে ফেলে। কথাগুলো শুধুমাত্র একটা বিষয়কে কেন্দ্র করে নয়। সমস্ত ক্ষেত্রেই এর সত্যতা বিদ্যমান। হিরো আলম নামটার সাথে আমরা সবাই কমবেশি পরিচিত।

হিরো আলম

কিছুদিন পর পর তার নতুন নতুন রূপ আমাদেরকে অনেক হাসিয়েছেন তিনি। আশরাফুল আলম সাঈদ। ওরফে হিরো আলম। তিনি যেন সোশ্যাল মিডিয়াতে আমাদের জন্য একটা হাসির পাত্র। অবশ্যই কথাটা কিছুটা সময় আগে হলে খাটতো। একথা বলছি কারণ তিনি প্রতিনিয়ত নিজেকে বদলানোর চেষ্টা করছেন। সেখানেই যেন আমাদের সমস্যাটা হয়ে দাঁড়ায়। তাকে যেন আমরাই বদলাতে দিচ্ছি না। সর্বসময় তাকে নিয়ে মজা করা হাসি তামাশা। এই বিষয় নিয়ে ঠিক ছিল। শুরুতে আর মাঝখানে তিনি যেভাবে আমাদের সামনে এসেছেন। তাকে নিয়ে হাসি তামাশা হবে এটা স্বাভাবিক ছিল।

কিন্তু এখন তিনি যদি একটা ভাল কাজ করতেও এগিয়ে আসেন। সেখানেও তাকে নিয়ে আমরা হাসি তামাশাই করছি। ভালোভাবে আমাদের সামনে আসতে চাইলেও এখনো তাকে নিয়ে আমরা হাসি তামাশাই করি। বিশেষ করে সবাই যে বিষয়টাকে নিয়ে কটুক্তি করে। সেটা হলো তার কথা বলার ধরন। তিনি তার একাউন্টে নিজেই জানিয়েছেন। আমার গলার আওয়াজই এরকম। সেখানে আমি কি করতে পারি। অর্থাৎ এখানেই বোঝা যাচ্ছে আমাদের মন মানসিকতা কতটা নিচে নেমে গিয়েছে তার প্রতি।

সমাজের কারণেই হিরো আলমরা হয়ে উঠেন জোকার

মনে আছে ২০১৯ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত জোকার সিনেমাতে এমোনি এক মানুষকে দেখানো হয়েছিল। সমাজের নিপীড়নে সে যতই ভালো থাকতে চেষ্টা করছিল। কোন দিক দিয়েই যেন কেউ তাকে মেনে নিতে পারেনি। সিনেমাটা যারা দেখেছেন। তারা বুঝেছেন একটা সিনেমা কিভাবে মানুষের ব্রেইন নিয়ে খেলতে পারে।

একজন দর্শক যিনি নাকি এই সিনেমা দেখা শুরু করেছিলেন স্বাভাবিক মন-মানসিকতা নিয়ে। ২ ঘন্টা পর তার চিন্তাভাবনায় এত বিশাল পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। সে নিজে ও বিশ্বাস করতে পারছে না। গল্পে দেখানো হয়েছিল একটা মানুষ কিভাবে তার স্বাভাবিক জীবন থেকে এক শয়তানের রূপান্তরিত হয়। কাদের জন্য জানেন। আমাদের এই বাহ্যিক সমাজের জন্য। সমাজ তাকে কখনোই মেনে নিতে পারেনি। জীবনের প্রতিটা ক্ষেত্রেই সবাই তাকে এক কমেডিয়ানের চোখে দেখেছে। গুরুত্ব পায়নি কোনখানে। আর এখানেই ভিডিওর শুরুতে বলা। সেই কথাটা বলতে হয়।

সমাজের কারণেই হিরো আলমরা হয়ে উঠেন জোকার

কাউকে এতটা কষ্ট দিও না যেটা তাকে পাথর করে দেয়। জন্ম হয় মানুষরূপী এক শয়তানের। সিনেমাটা দেখতে দেখতে কখনো হয়তো বা আপনার জোকারের প্রতি দয়া হবে। কষ্ট হবে তার জন্য। আবার পরমুহূর্তেই তাকে যেন ঘৃণা করবেন। আর যেটা বলে রাখা ভালো। সিনেমাতে জোকার কে একটা ক্যারেক্টার হিসেবে দেখা গেলেও। তার বাস্তব রূপটা হল মানুষের মনে লুকিয়ে থাকা শয়তান।

সমাজের এই নিপীড়ন এই অবহেলা । তার ভেতরের মনকে পাথর করে দিয়েছিল। তৈরি হয়েছিল এক দানবের। যে দানবের মধ্যে ছিল না কোন ফিলিংস। গল্পটা সিনেমার হলেও। এখানেই বলতে হচ্ছে আজ যেন সেই জোকার জীবন্ত হচ্ছে। উদাহরণস্বর আমাদের হিরো আলম কিন্তু ব্যতিক্রম নয়। হয়তোবা সিনেমায় দেখানো ক্যারেক্টারের মতো চরিত্রে সে আসতে পারবেনা। কিন্তু তাকে নিয়ে এই অনৈতিকতা। তার মনের ভিতরে অবশ্যই সেই চরিত্রকে জাগিয়ে তুলবে।

সমাজের কারণেই হিরো আলমরা হয়ে উঠেন জোকার

আপনি নিজেই চিন্তা করুন । কোন এক সময় ভুল করেছিলেন ঠিক আছে । কিন্তু বর্তমানে যত ভালো করারই চেষ্টা করছেন। সেখানে শুধুমাত্র আপনার পেছনের ভুলগুলোকে নিয়েই কথা বলা হয়। আপনি ভাববেন হয়তোবা আজকে না হয় কালকে ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু যখন দেখবেন দিন অনেকগুলো চলে যাচ্ছে।

কিছু ঠিক হচ্ছে না। আপনার সেই অতীতকে নিয়েই টানাটানি করছে সবাই। সেখানে আপনার ধৈর্য শক্তি আপনি হারিয়ে ফেলবেন এটাই স্বাভাবিক। হিরো আলমের ক্ষেত্রে ও সেটা ব্যতিক্রম নয়। মূলত আসল কথা হচ্ছে আমরা নিজেরাই যেন তাকে ভালো হতে দিচ্ছি না। সে ক্ষেত্রে তিনি মানসিকভাবে এখন কোন পর্যায়ে আছেন সেটা যদি একবার চিন্তা করে দেখেন। তাহলে তার সম্পর্কে মজা করা তো দূরের কথা। আপনার নিজেকেই ভুল মনে হবে। তবে আফসোস ঐরকম চিন্তা করার মত মানুষ আমাদের সমাজে খুব কমই আছে।

সমাজের কারণেই হিরো আলমরা হয়ে উঠেন জোকার

আমি কোন প্রকার সিনেমায় দেখানো ক্যারেক্টারের সাথে হিরো আলমের তুলনা দেইনি। প্রশ্ন তুলেছি আমাদের চিন্তাভাবনার উপর। তাকে কেন আমরা সুযোগ দিচ্ছি না। কেন তার ভালো কাজগুলো আমাদের হাসির পাত্র হচ্ছে।

চলনবিলে খিরার বাম্পার ফলন, খুশি কৃষকরা

কেন তার স্বাভাবিক ভালো ছবিগুলোতেও হা হা রিয়েক্ট পরছে। আমরা অবশ্যই হাসবো যদি তিনি তেমন কোন কাজ আবারো করেন। কিন্তু সে চাইছে পরিবর্তন হতে। সেখানে ও কেন তাকে নিয়ে আমরা মজা করছি। চিন্তাভাবনার পরিবর্তন দরকার আমাদের। না হলে সিনেমার জগৎ থেকে বেরিয়ে আসবে সেই জোকার।