আন্তর্জাতিক ডেস্ক : কথায় আছে “ইচ্ছা থাকলে উপায় হয়”। মানুষ যদি সত্যি কঠোর পরিশ্রম করতে পারে তালে সব অসম্ভবকেই সম্ভবে পরিণত করা যায়। আজ আমরা এই আর্টিকেলের মাধম্যে এমন এক ব্যবসায়ী মহিলার বিষয় আলোচনা করবো যিনি নিজের সাহস ও পরিশ্রম দ্বারা তার ব্যবসাকে সফলতার চূড়া পর্যন্ত নিজে গেছেন। আসুন জেনেনি কে সেই মহিলা।
ভারতের মতো দেশে আজও মহিলাদের জন্য দোকান থেকে আন্ডারগার্মেন্ট কেনা একটি কঠিন ব্যাপার। বিশেষ করে দোকানদার যদি একজন পুরুষ মানুষ হয়। কিন্তু খুব কম লোক আছে যারা মহিলাদের এই অসুবিধার বিষয়টি বুঝতে পারে। তবে, রিচা কর নামে এক মহিলা, লোকে কি বলবে এইসব কথা চিন্তা না করে, মহিলাদের আন্ডারগার্মেন্টসের ব্যবসা শুরু করে নিজের সাহসিকতার প্রমান দেন। আজ এই আন্ডারগার্মেন্টসের ব্যবসা ৭০০ কোটি টাকার কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। এই কোম্পানিটির নাম জিভামি ও ব্রান্ডটি হলো লিঙ্গেরি। অর্থাৎ রিচা হলো এই জিওয়ামে-র লিঙ্গেরি ব্র্যান্ডের সিইও এবং ফাউন্ডার।
রিচা কর এর এডুকেশন ও ফ্যামিলি ব্যাকগ্রাউন
রিচা কর ঝাড়খণ্ডের জামশেদপুর শহরে ১৭ই জুলাই ১৯৮০ সালে জন্মগ্রহণ করে ছিলেন। রিচা করের মা একজন গৃহকর্মী ছিলেন ও তার বাবা টাটা স্টিল কোম্পানিতে কাজ করতেন।রিচা তার স্কুলিং শেষ করার পর বিড়লা ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি অ্যান্ড সায়েন্স, পিলানি থেকে তার গ্র্যাজুয়েশনের সম্পন্ন করেছিলেন।
রিচা করের কঠিন যাত্রা
ব্যবসায়ের শুরুতে নিজের বাড়িতেই অনেক বিরোধিতার সম্মুখীন হতে হয়েছিল রিচা করকে। রিচার মা তার মেয়ের ব্যবসায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে বলেছিলেন যে “আমাদের আত্মীয়-স্বজনদের আমরা কী বলব যে আমাদের মেয়ে ব্রা-প্যান্টি বিক্রি করে।” এছাড়া এই ব্যবসার জন্য জায়গা খুঁজে পেতেও অনেক সমস্যার মধ্যে পরতে হয়েছিল রিচাকে। যখনই রিচা বাড়ি ভাড়া করার চেষ্টা করতেন তখন বাড়িওয়ালা রিচাকে জিজ্ঞাসা করতো যে কিসের ব্যবসা শুরু করবে সে। আর যখন তার ব্যবসা সম্পর্কে রিচা বলতেন তখন কেউ তাকে তাদের জায়গা দিতে চাইত না। শেষে রিচাকে তার ব্যবসার বিষয়টি লুকিয়ে গিয়ে শুধু এটা বলে বাড়ি ভাড়া নিতে হয়েছিল যে তিনি শুধু অনলাইন কাপড় বিক্রির ব্যবসা করবেন।
রিচা করের সফলতার গল্প
রিচা কর কলেজে তার ব্যাচমেট কেদার গোবিন্দের সাথে ভালোবাসার সম্পর্কে জড়িয়ে ছিলেন। তারপরে রিচা কর তাকে বিয়েও করেছিলেন। রিচার স্বামী গোবিন্দ প্রথম থেকেই রিচাকে তার কাজে সমর্থন করতেন। রিচা কর ই-কমার্স কোম্পানিকে এমনভাবে ডিজাইন করেছিলেন যাতে তার পণ্য গ্রাহকের কাছে খুব সহজে পৌঁছাতে পারে এবং সমস্ত মহিলারা সঠিক ফিটিং বেছে নিতে পারে। এরপর ২০১৫-১৬ সালে রিচা করের কোম্পানিকে প্রায় ৫৪ কোটি টাকার লোকসানের মুখে পড়তে হয়েছিল। কিন্তু তারপরও রিচা কর হাল ছাড়েননি। আর আজ জিভামেতে ৫০০০ টিরও বেশি রেঞ্জ, ১০০০ টির বেশি সাইজ ও ৫০ টিরও বেশি ব্র্যান্ডকে অন্তর্ভুক্ত করেছে।
প্রতি মাসে প্রায় ২.৫ মিলিয়ন ইউনিক ভিজিটর রিচা কর এর ওয়েবসাইট ভিজিট করে। ওয়েবসাইটে প্রতি ১ মিনিটে প্রচুর গার্মেন্টস বিক্রি হয়। এছাড়া জানিয়ে দি যে আজ অনেক বড় বড় বিনিয়োগকারী এই কোম্পানিতে টাকা বিনিয়োগ করেছেন। জিভামি আজকের সময়ে এমন একটি কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে, যেটি মহিলাদের ভালো মানের পণ্যে ও সুবিধা প্রদান করছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।