ধর্ম ডেস্ক : পর্নোগ্রাফি এক বিষাক্ত ভাইরাস। মাদকের চেয়ে ভয়ংকর। প্রযুক্তির স্রোতে নানা বয়সী নারী-পুরুষের হাতে এটি পৌঁছে গেছে । অপরাধপ্রবণতা বাড়ছে।
ধ্বংস হচ্ছে জীবন-যৌবন। মানুষ ছিটকে পড়ছে দ্বিন-ধর্ম থেকে । এটাকে এখন গোপনীয়তা ও লজ্জার কারণে এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। দ্রুত এই অন্ধকার রাজ্য থেকে বেরিয়ে আসার পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন।
এখানে মুক্তির কয়েকটি বিষয় আলোচনা করা হলো।
নিয়ত ও ঈমানি শক্তি প্রয়োগ
পর্নো আসক্তি থেকে মুক্তির জন্য প্রথমে সুদৃঢ়ভাবে নিয়ত করতে হয়। রাসুলুল্লাহ ইরশাদ করেছেন, সব কাজ নিয়তের ওপর নির্ভরশীল। প্রত্যেক ব্যক্তি তা-ই পাবে, যা সে নিয়ত করবে।
(বুখারি, হাদিস : ১)
নিয়তের শক্তি ও ঈমানি শক্তির সমন্বয়ে প্রতিরোধ শক্তি বাড়াতে হয়। এই দুই শক্তির মাধ্যমে নফস ও শয়তানের অপকৌশলের বিরুদ্ধে বিজয়ী হওয়া যায়। মহান আল্লাহর মদদ চলে আসে। কোরআনে এসেছে, যারা আমার উদ্দেশ্যে প্রচেষ্টা চালায়, আমি তাদের অবশ্যই আমার পথে উপনীত করব। ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ সৎকর্মশীলদের সঙ্গে আছেন।
’ (সুরা : আনকাবুত, আয়াত : ৬)
দৈনিক নামাজ আদায় করা
পর্নো আসক্তির গুনাহ থেকে বাঁচার বড় উপায় হলো নিয়মিত নামাজ আদায় করা। নামাজ সব গুনাহ থেকে বাঁচিয়ে দেয়। পবিত্র কোরআনে এসেছে, ‘হে নবী! ওহির মাধ্যমে তোমার প্রতি যে কিতাব নাজিল করা হয়েছে, তা তিলাওয়াত করো এবং নামাজ কায়েম করো। নিশ্চয়ই নামাজ অশ্লীল ও অন্যায় কাজ থেকে বিরত রাখে। আর আল্লাহর জিকিরই তো সর্বাপেক্ষা বড় জিনিস। তোমরা যা কিছু করো আল্লাহ তা জানেন।
(সুরা : আনকাবুত, আয়াত : ৪৫)
একবার সাহাবারা নবীজি (সা.)-কে বললেন, অমুক সাহাবি বিভিন্ন ধরনের খারাপ কাজে জড়িয়ে পড়েছেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) জিজ্ঞেস করলেন, সে কি এখনো নামাজ পড়ে? সবাই বললেন, হ্যাঁ পড়ে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, সে যদি নামাজ পড়তে থাকে তাহলে নামাজ তাকে অবশ্যই একদিন খারাপ কাজ থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসবে। (মুসনাদে আহমদ : ২/৪৪৭)
নিয়মিত দোয়া করা
ভয়ংকর এই গুনাহ থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহর কাছে দোয়া করা প্রয়োজন। কেননা দোয়া মুমিনের হাতিয়ার। পারমাণবিক বোমার চেয়েও শক্তিশালী। পবিত্র কোরআনে দোয়া কবুলের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। সালমান ফারসি (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) ইরশাদ করেছেন, নিশ্চয়ই আল্লাহ তাআলার অনেক শরম ও আত্মমর্যাদা আছে। সুতরাং যখন মানুষ চাওয়ার জন্য তার নিকট দুই হাত উত্তোলন করে, তখন তিনি সেই হাত দুটিকে ব্যর্থ ও খালি ফেরত দিতে লজ্জা বোধ করেন।
(তিরমিজি, হাদিস : ৩৫৫৬, আবু দাউদ, হাদিস: ১৪৮৮)
পাপের কথা গোপন রাখা
কেউ যদি অজ্ঞতাবশত অনলাইনে অশ্লীল কিছু করে বা শয়তানের প্ররোচনায় অশ্লীল ভিডিও দেখে, এতে অবশ্যই গোনাহগার হবে। তবে পাপী ব্যক্তি যদি খালেস দিলে তাওবা করে এবং কারো কাছে গুনাহ প্রকাশ না করে, তাহলে মহান রব তাকে ক্ষমা করে দেবেন। কোরআনে এসেছে, ‘তোমাদের মধ্যে যারা অজ্ঞতাবশত মন্দকর্ম করবে, অতঃপর তাওবা করবে এবং সংশোধন করে নেবে, তাহলে তো তিনি ক্ষমাপরায়ণ, দয়াশীল।’ (সুরা : আনআম, আয়াত : ৫৪)
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন, আমি রাসুল (সা.) কে বলতে শুনেছি। তিনি বলেন, আমার সব উম্মতকে মাফ করা হবে, তবে প্রকাশকারী ছাড়া আর নিশ্চয়ই এটা বড় অন্যায় যে কোনো ব্যক্তি রাতের বেলা অপরাধ করল, যা আল্লাহ গোপন রাখলেন; কিন্তু সে সকাল হলে বলে বেড়াতে লাগল হে অমুক! আমি আজ রাতে এই এই কাজ করেছি। অথচ সে এমন অবস্থায় রাত কাটাল যে আল্লাহ তার কর্ম লুকিয়ে রেখেছিলেন। আর সে ভোরে ওঠে তার ওপর আল্লাহর দেওয়া আবরণ খুলে ফেলল। (বুখারি, হাদিস : ৬০৬৯)
Get the latest Zoom Bangla News first — Follow us on Google News, Twitter, Facebook, Telegram and subscribe to our YouTube channel.