নূরে আলম সিদ্দিকী শান্ত : স্মার্টফোন, কম্পিউটার আর ইমেইলের যুগে হাতে লেখার চল নেই বললেই চলে। তবু ক্লাসরুমে, পরীক্ষার খাতায় শিক্ষার অনুষঙ্গ হিসেবে হাতেই লিখতে হয়। সেই প্রাচীনকাল থেকেই হাতের লেখা ব্যক্তির সৌন্দর্যবোধ, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য ও রুচির প্রকাশক হিসেবে স্বীকৃত। এ কারণে প্রাথমিক শ্রেণিগুলোতে শিশুকে বর্ণ পরিচয় ও লেখার মাধ্যম হিসেবে হাতে লেখাকেই প্রাধান্য দিয়েছেন শিক্ষাবিদরা। এর ফলে শিশুরা চৌকস হয়ে ওঠে বলে রায় দিয়েছেন নরওয়েজিয়ান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষক অধ্যাপক অর্ডে ভেন ডার মের। কিন্তু দীর্ঘ অনভ্যাসে হাতের লেখা হারায় সৌন্দর্য। হাতের লেখা সুন্দর করার উপায় জানিয়েছেন নূরে আলম সিদ্দিকী শান্ত
সুন্দর হাতের লেখা সবসময়ই প্রশংসনীয়। ঝকঝকে ও পরিচ্ছন্ন হাতের লেখা সবারই নজর কাড়ে। পরীক্ষায় ভালো নম্বর পাওয়ার ক্ষেত্রেও সুন্দর হাতের লেখার বেশ গুরুত্ব রয়েছে। আমাদের অনেকেরই ইচ্ছা জাগে হাতের লেখা সুন্দর করার। ধৈর্য এবং ইচ্ছাশক্তির মাধ্যমেই হাতের লেখা সুন্দর করে গড়ে তোলা সম্ভব। নিজের হাতের লেখাকে সুন্দর করতে নিচের কৌশলগুলোর চর্চা করতে পারো।
কলমের ব্যবহার
খাতায় লেখার জন্য আমরা মূলত কলম ব্যবহার করি। সুন্দর হাতের লেখার জন্য হালকা ওজনের ও অধিক গতিসম্পন্ন কলম ব্যবহার করতে হবে। এ ক্ষেত্রে যে কলম দিয়ে তুমি লিখতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করবে সেটিই সংগ্রহে রাখবে। কলমটিকে বেশি চেপে ধরবে না। বেশি চেপে ধরলে অল্প লেখার পর আঙুলে ব্যথা শুরু হবে। হালকা করে ধরতে হবে।
বর্ণমালা অনুশীলন
হাতের লেখা সুন্দর করার গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হচ্ছে প্রতিটি বর্ণ সুন্দর করে লেখা। স্বরবর্ণ, ব্যঞ্জনবর্ণ প্রতিটি অক্ষর আলাদাভাবে হুবহু লেখার চেষ্টা করবে। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বালিকণার সমন্বয়ে যেমন বিশাল মরুভূমি করে গড়ে ওঠে, ঠিক তেমনি প্রতিটি বর্ণ সুন্দর হলেই প্রতিটি শব্দ সুন্দর হবে, প্রতিটি লাইন সুন্দর হবে, এতে পুরো লেখাটিই সুন্দর লাগবে। বর্ণের পাশাপাশি লাইন গ্যাপ, মাত্রা ঠিক রাখতে হবে।
সোজা করে লেখা
আমাদের অনেকেরই লেখা বাঁকা হয়ে যায়। বাঁকা লাইন লেখার সৌন্দর্যকে নষ্ট করে। লাইন সোজা রাখতে হবে। এ জন্য প্রথম দিকে পেন্সিল দিয়ে লাইন টেনে লেখার অনুশীলন করা যেতে পারে। লেখার সময় সোজা হয়ে বসতে হবে। ঝুঁকে বা বাঁকা হয়ে বসলে হাতের লেখা বাঁকা হয়ে যায়।
মাঝারি সাইজের অক্ষর
খাতায় লেখার সময় অক্ষরগুলো খুব বেশি ছোট করে লেখা যাবে না আবার বড় করেও লেখা যাবে না। লেখা সবসময় মাঝারি সাইজে রাখার চেষ্টা করবে। এতে লেখা দেখতে সুন্দর লাগে।
ধীরেসুস্থে লিখবে
অনেকেই ভীষণ দ্রুততার সঙ্গে লেখে। ফলে কী লিখেছে কিছুই বোঝা যায় না। দ্রুততার সঙ্গে লেখার প্রয়োজন আছে, কিন্তু এত দ্রুত লিখবে না যেন হাতের লেখা বাজে ও অস্পষ্ট হয়ে যায়। হাতের লেখা স্পষ্ট রেখে লেখার চেষ্টা করবে। লেখার সময় পূর্ণ মনোযোগ দেবে তোমার খাতায় ও কলমের ডগায়।
কাটাকাটি নয়
হাতের লেখা সুন্দর করতে কাটাকাটির অভ্যাস পরিত্যাগ করতে হবে। যদি কাটতে হয় সোজা এক টানে কেটে দেবে। কোন ধরনের ওভার রাইটিং বা ঘষামাজা করা যাবে না। এতে লেখার সৌন্দর্য কমে যায়।
অধিক অনুশীলন
হাতের লেখা সুন্দর করতে অধিক অনুশীলন করার কোনো বিকল্প নেই। তোমাদের অনেকের মাথায় আসতে পারে, ‘আমি তো এখন বড় হয়ে গেছি। আমার হাতের লেখা কি সুন্দর হবে? হ্যাঁ, চেষ্টা করলে হাতের লেখা যে কোনো সময় সুন্দর করে গড়ে তোলা সম্ভব। এ জন্য প্রয়োজন বেশি বেশি অনুশীলন করা। প্রতিদিন অবসর পেলেই হাতের লেখার অনুশীলন করবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।