বিজ্ঞান ও প্রযক্তি ডেস্ক : রাত বা দিনের আকাশে দৃশ্যমান সমস্ত নক্ষত্র ছায়াপথের অংশ। আমাদের নিজেদের ছায়াপথের নাম মিল্কিওয়ে। ইংরেজিতে মিল্কিওয়ে গ্যালাক্সি। এর গঠন বিস্তৃত চাকতির মতো।
প্রায় ১,০০,০০০ আলোকবর্ষ জুড়ে তার পরিধি। সমস্ত আলো গুচ্ছাকারে ছড়িয়ে একটা ব্যান্ড তৈরি করে। নীল নক্ষত্রগুচ্ছ, উজ্জ্বল নীহারিকা ও নক্ষত্রের ধুলো—ছায়াপথটির গাঢ় কুণ্ডলিত কাঠামো স্পষ্ট করে। সৌরজগতের কেন্দ্র সূর্য এই চাকতিতে অবস্থিত।
কেন্দ্রে ও বাহিরের প্রান্তের মাঝখানে রয়েছে সূর্য।
মিল্কিওয়ের কেন্দ্র কেন্দ্র-স্ফীত (সেন্ট্রাল বুলজ) এবং এর কেন্দ্রে অতিভরের বা সুপারম্যাসিভ একটা কৃষ্ণগহ্বর রয়েছে। সব নক্ষত্র, মহাজাগতিক বস্তু—সমস্তই একে অপরের প্রতি কিছুটা হলেও মহাকর্ষীয় টানে আকর্ষিত হয়। এই টানের প্রভাবে ছায়াপথের সকল সদস্য ছায়াপথের কেন্দ্রের চারদিকে ঘোরাফেরা করে।
একেই বলি প্রদক্ষিণ বা পাক খাওয়া। ঘূর্ণনের বেগ সেকেন্ডে ২২০ কিলোমিটার (১৩৫ মাইল/সেকেন্ড)। কক্ষপথটি পুরো করতে পৃথিবীর হিসেবে ২৪০ মিলিয়ন বছর সময় লাগে।
পরিধির বাহিরের দিকের নক্ষত্রগুলো ছায়াপথে টিকে থাকতে খুব দ্রুত ঘোরে। তারপরও কেন্দ্রের কাছে থাকা সদস্যদের সাথে পেরে ওঠে না।
গতি আরও বাড়ে। একসময় প্রবল গতির কারণে কক্ষপথ থেকে ছিটকে যাওয়ার কথা। কিন্তু যায় না। তাহলে নক্ষত্র টিকে থাকে কী করে? গ্যালাক্সির ভেতর এদের আটকে রাখার শক্তির জোগান কোথা থেকে আসে! এই শক্তি আসে ডার্ক ম্যাটার থেকে। নক্ষত্রগুলোর মাঝেও শ্রেণি আছে। ছোট, বড়, বৃহদাকার, প্রকৃষ্ট নক্ষত্র। বৃহদাকার, বিশাল নক্ষত্রগুলোর মহাকর্ষীয় বলের জোগান দেয় ডার্ক ম্যাটার। মূলত নক্ষত্রের মহাকর্ষীয় বলের জোগানদাতা অনুসন্ধান করতে গিয়েই ডার্ক ম্যাটারের দেখা মেলে।
১,০০,০০০ মিলিয়ন নক্ষত্রের একটা সূর্য। যা বিশাল কুণ্ডলিত ছায়াপথের প্রতিনিধিত্ব করে। আমরা ডাকি মিল্কিওয়ে। এ নামটি নেওয়া গ্রিক কিকলস গ্যালাক্টিকস—অর্থ ‘দুধাল বৃত্তাকার পথ’।
পরিমণ্ডল
আমাদের মিল্কিওয়ে আবার ৩০টি ছায়াপথ নিয়ে গঠিত স্থানীয় গ্যালাক্সি ক্ল্যাস্টারের সদস্য। খুব কাছেই রয়েছে অ্যানড্রোমিডা, ট্রায়াঙ্গুলাম কুণ্ডলি আকারের ছায়াপথ। এদের প্রত্যেকের চারপাশ ঘিরে হরেক বামন ছায়াপথও রয়েছে। আমরাও অযথা বসে নেই। মহাকর্ষ বলে প্রতিনিয়ত আমাদের জমজ, অ্যানড্রোমিডা ছায়াপথকে টানছি নিজের দিকে। আড়াই মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে হলেও আকর্ষণের কোনও কমতি হয় না। আশা করা যায়, সামনে মাত্র ৬০০ কোটি বছরের মধ্যে দুটো ছায়াপথ একত্রে একটা একক বিশাল ছায়াপথ গঠন করবে।
সম্পর্কিত বিষয়
পারমাণবিক মেঘ এবং নীহারিকা
মহাজাগতিক কাঠামো
ডার্ক ম্যাটার
আলোকবর্ষ এবং পারসেক
বিজ্ঞানী
হেবার কার্টিস
১৮৭২-১৯৪২
মার্কিন জ্যোতির্বিজ্ঞানী।
হারলো শ্যাপলি
১৮৮৫-১৯৭২
মার্কিন জ্যোতির্বিজ্ঞানী।
ইয়ান ওর্ট
১৯০০-১৯৯২
ডাচ জ্যোতির্বিজ্ঞানী।
বর্ণনা
ক্যারোলিন ক্রফোর্ড
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।