জুমবাংলা ডেস্ক : চট্টগ্রাম নগরের পতেঙ্গা থানা এলাকায় লাগেজে পাওয়া খণ্ডবিখণ্ড মরদেহের পরিচয় শনাক্ত করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। একই সঙ্গে এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উন্মোচনের দাবি করেছে তারা। এ ঘটনায় জড়িত নিহত মো. হাসানের (৬০) স্ত্রী ছেনোয়ারা বেগম ও ছেলে মোস্তাফিজুর রহমানকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই।
পুলিশ জানায়, গত ২১ সেপ্টেম্বর পতেঙ্গা থানার ১২ নম্বর ঘাট এলাকায় সড়কের পাশে একটি লাগেজ পড়ে থাকতে দেখা যায়। পরে ওই লাগেজ থেকে উদ্ধার করা হয়েছিল মানুষের শরীরের ৮টি খণ্ড। এর মধ্যে ছিল ২ হাত, ২ পা, কনুই থেকে কাঁধ এবং হাঁটু থেকে উরু পর্যন্ত অংশ ছিল। মরদেহের প্রত্যেকটি অংশ টেপ দিয়ে মোড়ানো ছিল। তবে ওই লাগেজে নিহতের মাথা না থাকায় তাৎক্ষণিক পরিচয় শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ।
এ ঘটনায় পতেঙ্গা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল কাদির বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
পরে খণ্ডবিখণ্ড এই মরদেহ পরিচয় শনাক্ত ও হত্যার রহস্য উন্মোচনে মাঠে নামেন পিবিআই কর্মকর্তারা। তারা প্রথমে ফিঙ্গার প্রিন্টের সহায়তায় নিহত ব্যক্তি মো. হাসান বলে শনাক্ত করেন। তার জাতীয় পরিচয়পত্র থেকে জানা যায়, তিনি জেলার বাঁশখালীর উপজেলার কাথারিয়া এলাকার সাহেব মিয়ার ছেলে। জাতীয় পরিচয়পত্রে হাসানের বর্তমান ঠিকানা লেখা আছে সিলেট সদরের সাধুর বাজার সংলগ্ন রেলওয়ে কলোনির এলাকায়।
পিবিআই জানায়, অন্তত ৩০ বছর ধরে ভুক্তভোগী হাসানের সঙ্গে পরিবারের যোগাযোগ ছিল না। এতদিন তিনি কোথায় ছিলেন তাও জানতেন না তার পরিবারের সদস্যরা। গত এক বছর আগে হঠাৎ তিনি বাড়িতে ফিরে আসেন। বাড়িতে হাসানের নামে কিছু পৈতৃক সম্পত্তি ছিল। যেগুলো নিজেদের নামে লিখে দেওয়ার জন্য হাসানের স্ত্রী এবং সন্তানরা চাপ দিতে থাকেন। কিন্তু এতে রাজি ছিলেন না হাসান।
এ নিয়ে বিরোধের জেরে গত ১৯ সেপ্টেম্বর নগরের ইপিজেড থানার আকমল আলী রোডের পকেট গেট এলাকার জমির ভিলা ভবনে হাসানের ছোট ছেলের বাসায় স্ত্রী-সন্তানরা মিলে তাকে হত্যা করে টুকরো টুকরো করে ফেলে। পরে তা লাগেজে ভরে ফেলে দেওয়া হয়।
পিবিআই চট্টগ্রাম মেট্রোর সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) এ কে এম মহিউদ্দিন সেলিম বলেন, সিসিটিভি ফুটেজে আকমল আলী রোডের সেই বাসা থেকে হাসানের ছেলেকে বস্তায় ভরে মরদেহ বের করতে দেখা যায়। তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় জানা গেছে ১৯ সেপ্টেম্বর হাসান, তার স্ত্রী ও দুই ছেলের অবস্থান বাসাটিতে ছিল। ওইদিনই সম্পত্তি লিখে দেওয়া নিয়ে তর্কাতর্কির জেরে হাসানকে খুন করা হয়।
দুর্দান্ত ডিজাইনের সঙ্গে কিলার লুক, বাজার কাঁপাতে আসলো বাজাজের নতুন বাইক
মহিউদ্দিন সেলিম বলেন, অভিযুক্তরা মরদেহের খণ্ডিত অংশগুলো কয়েকভাগে ফেলে দেয়, যাতে হত্যাকাণ্ডের কোনো ক্লু পাওয়া না যায়। কিন্তু পিবিআইয়ের তদন্তে অভিযুক্তদের শনাক্ত এবং দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদেরকে নিয়ে হাসানের মরদেহের অবশিষ্ট অংশ উদ্ধারে চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় জড়িত হাসানের আরেক ছেলেসহ অন্যান্যদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।