জুমবাংলা ডেস্ক : নিম্নচাপের রেশ কাটতে না কাটতেই বঙ্গোপসাগরে আবারও একটি লঘুচাপ তৈরির আভাস পাওয়া গেছে। এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন আবহাওয়াবিদরা। সম্ভাব্য এ ঘূর্ণিঝড়টির নাম দেয়া হয়েছে ‘ডানা’। স্থলভাগে আঘাত করার সময় ঘূর্ণিঝড়টির বাতাসের গতিবেগ থাকতে পারে সর্বোচ্চ ১১৭ কিলোমিটার। সেই সঙ্গে এটি স্থলভাগে আঘাত হানার ৬ থেকে ১২ ঘণ্টা আগে সর্বোচ্চ শক্তি অর্জন করতে পারে বলেও জানিয়েছেন কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক পিএইচডি গবেষক আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ।
রবিবার (২০ অক্টোবর) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভেরিফায়েড আইডি থেকে দেয়া এক পোস্টে এসব তথ্য জানিয়েছেন তিনি। আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক এই পিএইচডি গবেষক জানিয়েছেন, সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ আগামী বুধবার (২৩ অক্টোবর) রাত ১২টার পর থেকে বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের ওপর দিয়ে সরাসরি তীব্র ঘূর্ণিঝড় (৮৯-১১৭ কি.মি/ঘণ্টা) হিসেবে স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে। এটি স্থলভাগে আঘাত করার ৬ থেকে ১২ ঘণ্টা আগে তার সর্বোচ্চ শক্তি অর্জন করতে পারে।
আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ জানিয়েছেন, সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের উপকূলে আঘাত হানলে এর গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১১০ থেকে ১৪০ কিলোমিটার। পাশাপাশি এটি যদি প্রতিবেশী দেশটির উড়িষ্যা রাজ্যের উপকূলে আঘাত হানে তবে এর গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১২০ থেকে ১৩০ কিলোমিটার।
অন্যদিকে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ দেশের খুলনা বিভাগের উপকূলে আঘাত করলে এর গতিবেগ ঘণ্টায় ১১০ থেকে ১২০ কিলোমিটার থাকতে পারে। পাশাপাশি এটি বরিশাল বিভাগের উপকূলে আঘাত হানলে বাতাসের একটানা গতিবেগ থাকতে পারে ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার।
এদিকে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ আঘাত হানলে জলোচ্ছ্বাসের সম্ভব্য উচ্চতা সম্পর্কেও ধারণা দিয়েছেন আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ। তিনি জানান, সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে সাতক্ষীরা, খুলনা, ও বাগেরহাট জেলায় জোয়ারের সময় স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে ৭ থেকে ৮ ফুট বেশি ও ভাটার সময় স্বাভাবিকের চেয়ে অপেক্ষা ৩ থেকে ৫ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি বরগুনা, পটুয়াখালী ও ভোলায় জোয়ারের সময় স্বাভাবিকের চেয়ে ৫ থেকে ৬ ফুট বেশি ও ভাটার সময় স্বাভাবিকের চেয়ে ১ থেকে ৩ ফুট বেশি উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে।
অন্যদিকে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টির প্রভাবে নোয়াখালী ও চট্টগ্রামে জোয়ারের সময় স্বাভাবিকের চেয়ে ৩ থেকে ৫ ফুট বেশি এবং ভাটার সময় স্বাভাবিকের চেয়ে ২ থেকে ৩ ফুট বেশি জলোচ্ছ্বাস হতে পারে। এছাড়া কক্সবাজারে জোয়ারের সময় স্বাভাবিকের চেয়ে ২ থেকে ৪ ফুট বেশি ও ভাটার সময় স্বাভাবিকের চেয়ে ১ থেকে ৩ ফুট বেশি জলোচ্ছ্বাসের সম্ভাবনা রয়েছে।
অন্যায়-অনিয়ম দেখলেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দিন : সারজিস
পলাশ জানান, আমেরিকা ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ পূর্বাভাস অনুসারে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টি ২৩ অক্টোবর মধ্যরাতের পর থেকে ২৪ অক্টোবর সন্ধ্যার মধ্যে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের খুলনা বিভাগের উপকূলে আঘাত করার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এটি প্রায় একই পথে অগ্রসর হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে যে পথে ঘূর্ণিঝড় ‘আম্ফান’ স্থলভাগে আঘাত করে অগ্রসর হয়েছিল। অর্থাৎ, সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ডানা পশ্চিমবঙ্গের মেদনিপূর ও দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা এবং বাংলাদেশের সাতক্ষীরা ও খুলনা জেলার উপকূলে আঘাত হানার আশঙ্কা করা হচ্ছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।