জুমবাংলা ডেস্ক : ভরা মৌসুমের মধ্যেই হঠাৎ করে বেড়েছে পিঁয়াজের দাম। মাত্র তিন-চার দিনের ব্যবধানে প্রতি কেজিতে দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা। ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা করছেন, এই দাম বৃদ্ধির ধারা আগামী দিনগুলোতেও অব্যাহত থাকতে পারে। অভিযোগ উঠেছে, কিছু আমদানিকারক ভারত থেকে পিঁয়াজ আমদানির পাঁয়তারা করছেন এবং তারাই সিন্ডিকেট করে দেশের বাজারে পিঁয়াজের দাম বাড়াচ্ছেন।
বাজারে পিঁয়াজের দাম বাড়তি থাকলে সরকার আমদানির অনুমতি দেয়, যা কিছু ব্যবসায়ীর জন্য লাভের সুযোগ তৈরি করে। তবে এই ভরা মৌসুমে পিঁয়াজের দাম বৃদ্ধিতে সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
রাজধানীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে বর্তমানে মানভেদে পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা কেজি দরে। অথচ মাত্র কয়েকদিন আগেই, পহেলা বৈশাখের আগে বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার দেশি পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৪৫ টাকায়। ব্যবসায়ীরা জানান, আড়তে পিঁয়াজের সরবরাহ হঠাৎ কমে যাওয়ায় পাইকারি বাজারে দাম বেড়ে গেছে। ঢাকার বাজারে সবচেয়ে বেশি পিঁয়াজ সরবরাহ হয়ে থাকে ফরিদপুর থেকে। ফলে ফরিদপুরে দাম বাড়লে এর প্রভাব ঢাকায় পড়ে।
ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি)-এর তথ্যানুযায়ী, এক সপ্তাহের ব্যবধানে পিঁয়াজের দাম কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। গত সপ্তাহে যেখানে প্রতি কেজি পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছিল ৩০ থেকে ৫০ টাকায়, বর্তমানে তা বেড়ে ৪০ থেকে ৬০ টাকায় পৌঁছেছে।
রাজধানীর এক খুচরা বিক্রেতা জানান, চার দিন আগেও তিনি প্রতি কেজি পিঁয়াজ ৪০ টাকায় বিক্রি করেছেন। কিন্তু এখন পাইকারি বাজারেই কেজিতে ১০ টাকা দাম বেড়ে যাওয়ায় ৫৫ টাকার নিচে বিক্রি করা যাচ্ছে না। কারওয়ান বাজারের আরেক বিক্রেতাও জানান, খুচরা বিক্রেতারা দাম বৃদ্ধির জন্য দায়ী নন। পাইকারি বাজার থেকে যে দামে কিনছেন, সেই দামেই বিক্রি করছেন।
আড়তদাররা জানাচ্ছেন, এবার মুড়িকাটা পিঁয়াজে কৃষকরা আশানুরূপ দাম পাননি। এতে লোকসানে পড়ায় অনেক কৃষক হালি পিঁয়াজ বাজারে না ছেড়ে মজুদ করে রেখেছেন। ফলে সরবরাহ কমে গিয়ে আড়ত, পাইকারি ও খুচরা বাজারে প্রভাব ফেলেছে। এর ফলে পিঁয়াজের দামের হঠাৎ এই ঊর্ধ্বমুখিতায় ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
বাজার করতে আসা অনেক ক্রেতা বলছেন, বাজারে নতুন করে সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। তারা মনে করেন, দেশের বাজারে পিঁয়াজের দাম কম থাকুক, এটা কিছু অসাধু আমদানিকারক ও ব্যবসায়ী চান না। তাই এখনই আড়ত ও পাইকারি পর্যায়ে সরকারের নজরদারি জরুরি, না হলে সামনে আরও দাম বেড়ে যেতে পারে।
অন্যদিকে, উৎপাদন মৌসুমে ন্যায্য দাম না পাওয়ায় কৃষকের কাছে আর তেমন পিঁয়াজ নেই, যা এখন মজুদদারদের হাতে চলে গেছে। বাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে সিন্ডিকেট করে তারা বাজার অস্থির করার চেষ্টা করছে।
ক্রেতাদের অভিযোগ, রমজান মাসে চাহিদা বেশি থাকলেও দাম বাড়েনি। কিন্তু এখন হঠাৎ করে প্রতি কেজিতে ১৫ টাকা পর্যন্ত দাম বাড়া অস্বাভাবিক। কোরবানির ঈদের আগে বাজার আরও অস্থির হয়ে উঠতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা। তাদের দাবি, বাজার মনিটরিং অবিলম্বে জোরদার করা উচিত।
এ বিষয়ে কনজিউমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, পিঁয়াজের এই আকস্মিক দাম বৃদ্ধি ব্যবসায়ীদের নেতিবাচক ব্যবসা চর্চার ফল। আড়তদার, কমিশন এজেন্ট ও দাদন ব্যবসায়ীরা মজুদ করে রাখার কারণে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি হয়েছে। তদারকির অভাবে এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ভোক্তা অধিদপ্তর বা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও কোনো কার্যকর তদারকি হচ্ছে না।
সূত্র: কালের কণ্ঠ
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।