জুমবাংলা ডেস্ক : বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিলের (বিপিসি) কো-অর্ডিনেটর ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব আবদুর রহিম খান বলেছেন, বিপিসি শুরু থেকেই চামড়া শিল্প নিয়ে কাজ করছে। কারণ বিপিসির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, চামড়া খাতে লক্ষ্যমাত্রার ৫ বিলিয়ন ডলার আয় করা।
সোমবার (৪ ডিসেম্বর) বিকেলে ঢাকা ক্লাবে বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ) এবং লেদার সেক্টর বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল (এলএসবিপিসি) ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যৌথ আয়োজনে ‘বাংলাদেশের ট্যানারি শিল্পে এলডব্লিউজি সনদ অর্জনে করণীয়’ শীর্ষক কর্মশালায় একথা বলেন তিনি।
আবদুর রহিম খান বলেন, বিপিসির সহায়তায় ৩টি প্রতিষ্ঠান এলডব্লিউজি সনদ পেয়েছে। আমরা আশা করি, উদ্যোক্তারা আগ্রহী হলে এবং এগিয়ে এলে এই সনদ প্রাপ্তির সংখ্যা আগের থেকে অনেক বেশি বাড়বে।
তিনি আরও বলেন, বিপিসি শুরু থেকেই চামড়া শিল্প নিয়ে কাজ করছে। কারণ বিপিসির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে, চামড়া খাতে লক্ষ্যমাত্রার ৫ বিলিয়ন ডলার আয় করা। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) ভাইস প্রেসিডেন্ট আমিন হেলালি।
তিনি বলেন, ট্যানারি শিল্প উন্নত করতে বাংলাদেশের যা যা দরকার, তার সব রয়েছে। আমরা চাইলেই সঠিক পরিকল্পনার মাধ্যমে এই শিল্পকে উন্নত করে তুলতে পারি। পাশের দেশ ভারত যেখানে চামড়া শিল্পে অনেক এগিয়ে গেছে, আমরা সেখানে বেশ পিছিয়ে আছি। এই শিল্প নিয়ে কালক্ষেপণের সময় নেই।
উল্লেখ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের বাজার হচ্ছে ইতালি, নেদারল্যান্ডস, জার্মানি, ফ্রান্স, স্পেন, রাশিয়া, ব্রাজিল, জাপান, চীন, সিঙ্গাপুর, তাইওয়ান, দক্ষিণ কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র।
রফতানির বড় বাজার ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলো। ইউরোপে রফতানির জন্য এলডব্লিউজি বা লেদার ওয়ার্কিং গ্রুপ সনদ প্রয়োজন হয়। এটি ইংল্যান্ড এবং ওয়েলভিত্তিক একটি কোম্পানি। এলডব্লিউডি অডিট প্রটোকলের ৭.০.০ এবং ৭.২.০ ভার্সন এর ১৭১০ নম্বরের ১৭টি সেকশন বাস্তবায়ন কর্মকাণ্ডের ওপর ভিত্তি করে, যেমন- এনার্জি ও পানির ব্যবহার, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, নিষিদ্ধ উপাদানের ব্যবস্থাপনা, ইমার্জেন্সি প্ল্যান, হাউজকিপিং ইত্যাদি বিষয়ে পরিবেশ ও নিরাপত্তাজনিত দক্ষতা নিরূপণ করে এলডব্লিউজি সনদ অর্জন করতে হয়।
স্কোর হিসেবে এই সনদ এর ক্যাটাগরি হলো-৫০ শতাংশ বা এর উপরে হলে অডিটেড, ৬৫ শতাংশ বা এর উপরে হলে ব্রোঞ্জ, ৭৫ শতাংশ বা এর উপরে হলে সিলভার এবং ৮৫ শতাংশ বা এর উপরে হলে গোল্ড। কমপ্লাইয়েন্স অনুসরণ করে এলডব্লিউজি সনদ অর্জন করতে পারলে ব্র্যান্ড বায়ারদের আকর্ষণ এবং রফতানি উত্তরোত্তর বৃদ্ধি করা সম্ভব হয়।
এই সনদ কমপ্লাইয়েন্স অর্জনে ট্যানারিগুলোর সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বাংলাদেশে ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিটিএ) ও এলএসবিপিসি, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যৌথ উদ্যোগে ২০১৮-২০১৯ অর্থবছর থেকে বিভিন্ন কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়েছে।
এই কর্মসূচির আওতায় ২৫টি ট্যানারি নির্বাচন করে বিভিন্ন কনসালটেন্টের মাধ্যমে এলডব্লিউজের সর্বশেষ প্রটোকল অনুযায়ী জিএপি অ্যানালাইসিস করে বর্তমান অবস্থা তুলে ধরা হয় এবং করণীয়গুলো চিহ্নিত করে গাইডলাইন তৈরি করা হয়। কনসালটেন্টের প্রতিটি ট্যানারির মনোনীত প্রতিনিধিদেরকে এর তৈরি করা গাইডলাইন অনুযায়ী কাজ করার জন্য প্রশিক্ষিত করে তোলা হয়। পরবর্তীতে যেসব ট্যানারি এলডব্লিউজি সনদ অর্জনে অধিকতর সক্ষম সেরকম ১২টি ট্যানারি নির্বাচন করে ২০২২-২০২৩ অর্থবছরের ফলোআপ কার্যক্রমে অন্তর্ভূক্ত করা হয়।
এই কার্যক্রমের মাধ্যমে ১২টি ট্যানারির মধ্যে নিজস্ব ইটিপি থাকায় খুলনায় অবস্থিত সুপারেক্স লেদার লিমিটেড সিলভার ক্যাটাগরিতে এলডব্লিউজি সনদ এবং যশোরে অবস্থিত এস.এ.এফ ইন্ডাষ্ট্রিজ লিমিটেড গোল্ড ক্যাটাগরিতে এলডব্লিউজি সনদ পেয়েছে।
এই এলডব্লিউজি সনদ অর্জনের ফলে দেশি-বিদেশি উন্নত ব্র্যান্ডের ক্রেতাদের কাছে চামড়া বিক্রি বৃদ্ধি পাবে এবং রফতানি আয় বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।