হাসান ভূঁইয়া : সাভারের আশুলিয়ায় ইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের উপ-নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অস্ত্র ঠেকিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ করেছেন ঘোড়া মার্কার প্রার্থী বকুল ভূইয়া। এ ঘটনায় তিনি থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করেছেন।
সোমবার (২৬ ডিসেম্বর) রাত ৯টার দিকে আশুলিয়ার পল্লীবিদ্যুত এলাকায় এ ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
অভিযুক্ত মারুফ ভুইয়া আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার মোর্শেদ ভূইয়ার ছেলে। তিনি বিদ্রোহী প্রার্থী সুমন আহম্মেদ ভূইয়ার চাচাতো ভাই এবং রুবেল আহম্মেদ ভুইয়া বিদ্রোহী প্রার্থী সুমন আহম্মেদ ভূইয়ার বোনের জামাতা। আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার বাসিন্দা।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আফছার সরদার বলেন, আজকে আমরা বিভিন্ন জায়গায় নির্বাচনী প্রচারণা করেছি। এ সময় আমাদের প্রার্থীর চোখে একটু সমস্যা হওয়ায় আমরা উনাকে নিয়ে হাসপাতালে আসবো। এখানে আসার সাথে সাথেই তারা আমাদের গাড়ীটি বেরিকেট দেন। এ সময় তারা ডালা খুলে দৌড়াদৌড়ি করছে। পরে আমি বলি গাড়ীটা চাপান তো ও কিজানি হাতাচ্ছে, মনে হয় লাঠি উঠাইতেছে। পরে আমাদের প্রার্থী নেমে গেছে। আমাদের নামতে একটু দেরি হয়েছে। পরে পিস্তল বের করেই মনে করেন ভাইকে ঠেকায় দিছে।
ঘটনার অন্য এক প্রত্যক্ষদর্শী আব্দুল ওয়াহেদ বলেন, এখানে আসার পরে সে আমাদের গাড়ীর সামনে বেরিকেট দিয়ে তার গাড়ী দাড়া করে। পরে সে (মারুফ ভুইয়া) গাড়ীর ডালা খুলে অকথ্য ভাষায় গালি দিয়ে গাড়ী থেকে বের হতে বলে। তার হাতে পিস্তল ছিল। পরে সে ভাইয়ের সামনে আসলে আমি তাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেই। আমি যদি না সড়াতাম তাহলে তো ভাইকে মেরে ফেলতো।
ভুক্তভোগীর ছেলে রনি ভূইয়া বলেন, সারাদিন নির্বাচনী প্রচারণা করে আমার বাবা চোখের সমস্যার জন্য ডাক্তার দেখাতে পল্লীবিদ্যুৎ চক্ষু হাসপাতালে আসে। পল্লী বিদ্যুৎ আসার পরে সুমন ভূইয়ার বোন জামাই রুবেল আহমেদ ভূইয়া এবং চাচাতো ভাই মারুফ ভূইয়া সাদা কালারের একটি গাড়ীতে এসে আমার বাবার গাড়ি বেরিকেট দেয়। তারপরে তারা গাড়ি থেকে নেমে এসে আমার বাবার বুকে অস্ত্র ঠেকিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের গালিগালাজ ও হুমকি দেয়। আমার বাবা যদি নির্বাচন থেকে সরে না দাঁড়ায় তাহলে ২৯ তারিখের আলো দেখতে পারবে না। পরে লোকজন জড়ো হলে তারা পালিয়ে যায়।
ঘটনার বিবরণ দিয়ে মোঃ বকুল ভূইয়া বলেন, সারাদিন নির্বাচনী প্রচারণার পরে আমার চোখে কি যেন লেগেছিলো। তাই আমি চোখের ডাক্তার দেখাতে চক্ষু হাসপাতলে পল্লী বিদ্যুৎ আসি। পল্লী বিদ্যুৎ আসার পরে আমার গাড়ি চাপিয়ে দিয়ে আমার এ্যাটাক করেছে। গাড়ি থেকে নেমে ব্যাকডালা থেকে একটা কালো অস্ত্র বের করে আমার বুকে ঠেকিয়ে দিয়েছে মারুফ ভুইয়া এবং রুবেল।
এ বিষয়ে রুবেল আহমেদ ভূইয়া বলেন, এ ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটে নাই ভাই। ঘটনার যে স্থলের কথা বলছে, সেখানে আমি রহিম (ছদ্মনাম) ভাইয়ের সাথে দেখা করতে গিয়েছিলাম। উনার অফিস থেকে আমি যখন বের হইছি তখন মারুফ ভুইয়া হচ্ছে তার সর্ম্পকের চাচাতো ভাই তারা দুইজন তর্কাতর্কি করতেছে। আমি তখন গিয়ে দুইজনকে দুই গাড়িতে উঠাই দিছি। মারুফকে মারুফের গাড়ীতে বকুল ভূইয়াকে বকুল ভুইয়ার গাড়ীতে উঠাই দিছি।
আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আমরা ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলাম। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শেষে পরবর্তী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
অন্যদিকে গতকাল রাতে আশুলিয়ার মোল্লা বাজার এলাকায় ঘোড়া মার্কার দুই কর্মীকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগও ওঠেছে এই মারুফ ভুইয়ার বিরুদ্ধে। ইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনকে সামনে রেখে মারুফ ভূইয়ার হঠাৎ এমন মারমুখি আচরণে এলাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।