স্পোর্টস ডেস্ক : কলকাতায় আজ কি বৃষ্টি হবেই? আবহাওয়ার পূর্বাভাস আরেক কাঠি সরেস, জানিয়েছে, আগামীকালও বৃষ্টি হতে পারে! তাতে ইডেনের সেমিফাইনালের ভাগ্যই মেঘাচ্ছন্ন। বৃষ্টি মানেই দক্ষিণ আফ্রিকার কান্না। ১৯৯২ বিশ্বকাপে ১ বলে ২২ রানের গল্প তো ক্রিকেটীয় লোকগাথার অংশ হয়ে গেছে। অবশ্য স্নায়ুক্ষয়ী ম্যাচে প্রোটিয়াদের মুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ার অতীতও তা-ই।
নইলে ১৯৯৯ বিশ্বকাপে অমন হাঁদারামের মতো করে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারে দক্ষিণ আফ্রিকা!
কী আশ্চর্য, এবার বৃষ্টি এলে তা সৌভাগ্য বয়ে আনবে দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য। লিগ ম্যাচে পয়েন্ট টেবিলে ওপরে থাকায় ইডেনের সেমিফাইনাল ভেসে গেলে ফাইনালে উঠবে দক্ষিণ আফ্রিকা, কপাল পুড়বে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়ার। পয়েন্ট সমান, তবে নেট রান রেট এবং হেড টু হেডও এগিয়ে রেখেছে প্রোটিয়াদের। লিগ ম্যাচে ১৩৪ রানের বড় ব্যবধানে হেরেছিল অস্ট্রেলিয়া।
শুধু কি তাই, এই সেপ্টেম্বরে ঘরের মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে সিরিজ জিতেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। আবার অস্ট্রেলিয়া, নাকি দক্ষিণ আফ্রিকা?
তবু ফাইনালে ওঠার টিকিট নিশ্চিত করতে প্রোটিয়াদের গতকাল ক্রমাগত উত্ত্যক্ত করে গেলেন অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স। আবহাওয়া কারোর নিয়ন্ত্রণে নেই। তবে খেলা হলে দক্ষিণ আফ্রিকা যে প্রবল চাপে থাকবে, ইনিয়ে-বিনিয়ে তিনি বলে গেলেন গতকালের সংবাদ সম্মেলনে, ‘১৯৯৯ বিশ্বকাপের কথা বলছেন? ওটা তো লোকগাথা, তাই না? আমি ওটার ভিডিও অসংখ্যবার দেখেছি।
সেই গল্প আপনি বারবার শুনবেন।’
দক্ষিণ আফ্রিকা নিশ্চিতভাবেই অ্যালান ডোনাল্ডের ওরকম উদভ্রান্তের মতো দৌড়ের ফুটেজ মনেও করতে চায় না। ২০০৭ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার কাছে হারের ঘটনা সে তুলনায় অনেক ভদ্রগোছের, অন্তত হাসাহাসি হয় না।
তবু চারদিক থেকে প্রশ্ন উড়ে আসে তেম্বা বাভুমার দিকে, ঘুরিয়ে ফিরিয়ে যার সারমর্ম-এবারো তীরে এসে তরি ডুববে না তো? চোটের কারণে অধিনায়কের নিজের খেলাই অনিশ্চিত। তবে ইতিহাসের বাঁকবদেলের প্রত্যয় ব্যক্ত করার সময় তেজি বাভুমা, ‘অনেকেই বিশ্বাস করে এবার আমরা ফাইনাল খেলব।’
দক্ষিণ আফ্রিকা ফাইনালে উঠলে বিস্ময়েরও কিছু নেই। সাত জয়ে ভারতের পর দ্বিতীয় দল হিসেবে সেমির টিকিট নিশ্চিত করেছে প্রোটিয়ারা। বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি সেঞ্চুরি এই দলটির। জেতা ম্যাচগুলো অসুরের মতো ব্যাটিং করেছে। অবসরের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে বিশ্বকাপে আসা কুইন্টন ডি কক একাই চারটা সেঞ্চুরি করেছেন। তবে রাসি ফন ডার ডুসেন, এইডেন মারক্রাম কিংবা কলিন মিলারকেই বিশ্বকাপের বোলাররা বেশি ভয় পান কি না- তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে।
এমন দুর্ধর্ষ ব্যাটিং লাইনআপের সঙ্গে তেম্বা বাভুমার অস্ত্রাগারে আছে অস্ট্রেলিয়া বধের উপযোগী বোলিং আক্রমণও। ঘোষণা দিয়েই প্রোটিয়া অধিনায়ক জানিয়েছেন, ‘কেশব মহারাজের সঙ্গে তাবরেজ শামসিকেও খেলাব।’
এসবে প্যাট কামিন্সের অত হেলদোল নেই। দুই হারে শুরু, এরপর টানা সাত হারে সেমি নিশ্চিত করা অস্ট্রেলিয়া অধিনায়কের আত্মবিশ্বাস ড্রেসিংরুমে স্তূপ করে রাখা অভিজ্ঞতা। ২০১৫ বিশ্বকাপজয়ী অস্ট্রেলিয়া দলের সদস্য ছিলেন প্যাট কামিন্স, ডেভিড ওয়ার্নার, স্টিভ স্মিথ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, মিচেল মার্শ ও মিচেল স্টার্করা আছে এবারও। মাঝের সময়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপও জিতেছে অস্ট্রেলিয়া। এই অভিজ্ঞতা এগিয়ে রাখবে পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নদের।
ফুটনোটে ম্যাক্সওয়েল থাকুক। ব্যক্তিগত নৈপুণ্যকে গতকাল নতুন উচ্চতায় তুলে নিয়েছেন বিরাট কোহলি। তবে এই বিশ্বকাপে জোড়া রেকর্ড গড়েছেন ম্যাক্সওয়েল। ৪০ বলে সেঞ্চুরিয়ান ম্যাক্সওয়েল এক পায়ে ভর দিয়ে করেছেন ডাবল সেঞ্চুরিও। মনে হচ্ছে একমাত্র প্রকৃতিই বিমুখ করতে পারে তাঁকে!
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।