আন্তর্জাতিক ডেস্ক : টিটিকাকা হ্রদ। খোলা আকাশের নিচে নীল পানির চোখ জুড়ানো সমাহার। যার আকর্ষণে আকৃষ্ট হন পর্যটকরাও। পেরু এবং বলিভিয়ার সীমান্তজুড়ে ৩ হাজার ২০০ বর্গমাইলেরও বেশি বিস্তৃত। মধ্য আন্দিজ পর্বতমালার প্রায় ৩ হাজার ৮০০ মিটার (১২ হাজার ৫০০ ফুট) উচ্চতায় অবস্থিত। এ উচ্চতার জন্যই এটিকে বিশ্বের সর্বোচ্চ নৌযানযোগ্য হ্রদ বলা হয়ে থাকে। দক্ষিণ আমেরিকার বৃহত্তম হ্রদ বা প্রাণও বলা হয়। তবে সর্বোচ্চর খেতাব পেলেও এ উচ্চতাই যেন কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ সূর্য অনায়াসেই এর পানিকে ছুঁতে পারে। এ কারণে বিকিরণের মাত্রাও থাকে তীব্র। যার ফলশ্রুতিতে পানির বাষ্পীভবনও ঘটে খুব সহজেই। ফলে শুকিয়ে যাচ্ছে দক্ষিণ আমেরিকার এ প্রাণ। তাপমাত্রার পাশাপাশি খরাও এর অন্যতম কারণ। সিএনএন।
হ্রদের চারপাশে ৩০ লাখেরও বেশি মানুষের বসবাস। বিশেষভাবে এটি আয়মারা, কেচুয়া এবং উরোস আদিবাসী সম্প্রদায়ের আবাসস্থল। যাদের বেশির ভাগই মাছ ধরা এবং কৃষি কাজের ওপর নির্ভরশীল। সম্প্রতি পানির পরিমাণ কমে যাওয়ায় মাছ ধরার ওপর নির্ভরশীল সম্প্রদায়গুলো প্রতিনিয়ত লড়াই করছে। ক্রমবর্ধমান খরায় প্রভাবিত হচ্ছে কৃষিকাজও। পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে নৌকা চলাচল ব্যাহত হওয়ায় লেকের চারপাশে দর্শনার্থীদের সংখ্যাও কমে গেছে। এতে পর্যটন অর্থনীতিও ভেঙে পড়েছে। ৩৬ বছর বয়সি স্থানীয় জুলিয়ান হুয়াত্তামারকা বলেছেন, ‘পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় আমরা অনেক চিন্তিত। চলমান এ খরা বাসিন্দাদের তাদের বাড়িঘর ছেড়ে যেতে বাধ্য করবে।’ ৬৩ বছর বয়সি নাজারিও চারকা বলেছেন, পানির স্তর কমছে। ডিসেম্বর পর্যন্ত কী হবে তা আমরা জানি না। এই উষ্ণ তাপমাত্রা কমপক্ষে ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে আশঙ্কা করছেন জলবায়ুবিদরা।
যদিও পানির স্তর প্রতি বছর ওঠানামা করে। তবে এবারের জলবায়ু সংকটের কারণে এই পরিবর্তনগুলো চরম আকার ধারণ করেছে। সিএনএন আবহাওয়াবিদ টেলর ওয়ার্ডের মতে, রেকর্ড-ব্রেকিং শীতকালীন তাপপ্রবাহ বাষ্পীভবন বৃদ্ধি করছে এবং হ্রদের স্তর হ্রাসের দিকে পরিচালিত করেছে। খরার কারণেও পানির ঘাটতি আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। পেরুর ন্যাশনাল মেটিওরোলজি অ্যান্ড হাইড্রোলজি সার্ভিসের পরিচালক সিক্সটো ফ্লোরেস সিএনএনকে বলেছেন, আগস্ট-২০২২ থেকে মার্চ-২০২৩ পর্যন্ত গড়ে ৪৯ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।