বিনোদন ডেস্ক : পুরো ভারত জুড়েই এখন দক্ষিণী ছবির জয়জয়কার। একের পর এক দক্ষিণী ছবি দখল করছে বলিউডের বাজার। অবস্থা এমন বেগতিক যে, দক্ষিণী নতুন ছবির কারণে মুক্তি পেছাতে বাধ্য হচ্ছে বলিউড!
সাম্প্রতিক এমন নজির অসংখ্য। তবে পুরো ভারতজুড়ে দক্ষিণী ছবির দাপট দারুণভাবে শুরু হয়েছে ‘বাহুবলী’ থেকে। সর্বশেষ ‘ট্রিপল আর’ ছবিটি যেভাবে বলিউডের বক্স অফিস কাঁপাচ্ছে, তাতে অনেকের ধারণা- বলিউড সিনেমার রাজত্বের দিন শেষের পথে!
বড় আয়োজনের দক্ষিণী নতুন ছবি মুক্তির দিনক্ষণ এগিয়ে আসলেই যেন হৃদকম্পন শুরু হয় বলিউডের। সর্বশেষ উদাহরন, বলিউডের মুক্তি প্রতীক্ষিত সিনেমা ‘জার্সি’। শহীদ কাপুর ও ম্রুনাল ঠাকুর অভিনীত এই ছবিটি বেশ কয়েকবার মুক্তির তারিখ পিছিয়েছে। শেষ পর্যন্ত ১৪ এপ্রিল মুক্তি চূড়ান্ত হয়। কিন্তু এখানেও বাঁধা হয়ে দাঁড়ালো দক্ষিণী ছবি!
এদিন পুরো ভারতজুড়ে মুক্তি পেতে যাচ্ছে কোটি দর্শকের কাঙ্খিত ছবি ‘কেজিএফ: চ্যাপ্টার ২’। ভারতের কন্নড় ইন্ডাস্ট্রির এই ছবিটিরে জন্য শেষ সময়ে এসে মুক্তি পেছাতে বাধ্য হলো ‘জার্সি’ টিম। এক সপ্তাহ পিছিয়ে মুক্তি চূড়ান্ত করা হয়েছে ২২ এপ্রিল।
শেষ সময়ে এসে হঠাৎ কেন ‘জার্সি’ মুক্তি এক সপ্তাহ পিছিয়ে গেল, তা নিয়ে অবশ্য টিম জার্সি টুঁ শব্দটিও করেনি। তবে বলিউডের অন্দরে চাপা গুঞ্জন চর্চিত দক্ষিণী ছবি ‘কেজিএফ: চ্যাপ্টার ২’-এর সঙ্গে মুখোমুখি লড়াই এড়াতেই বুদ্ধিদীপ্ত সিদ্ধান্ত।
‘কেজিএফ: চ্যাপ্টার ১’-এর হিন্দি সংস্করণ ব্যাপক সাফল্য পেয়েছিল বক্স অফিসে। ছবির সিকুয়েলের জন্য দীর্ঘ সময় ধরে অপেক্ষায় রয়েছে যশ ভক্তরা। উপরি পাওনা হিসেবে এই ছবিতে খলনায়কের চরিত্রে থাকছেন সঞ্জয় দত্ত। রয়েছেন প্রকাশ রাজ, রাবিনা টেন্ডনের মতো তারকারা। তাই কোনওরকম রিস্ক নিতে আগ্রহী নয় ‘জার্সি’ ছবির নির্মাতা প্রযোজকরা। একইসঙ্গে তামিল, তেলুগু, হিন্দি ও মালায়ালম ভাষায় মুক্তি পাবে এই ছবি।
‘পুষ্পা’ ঝড়ের রেশ থামতে না থামতেই বক্স অফিস কাঁপাচ্ছে ‘ট্রিপল আর’। আল্লু অর্জুন, জুনিয়র এনটিআর, রামচরণদের ছবি হাঁ করে গিলছে ভারতীয় দর্শকরা। দক্ষিণী ছবির বাজার ক্রমেই বাড়ছে। অন্যদিকে বলিউড ছবি দক্ষিণী ছবির সঙ্গে লড়াইতে নেমে বেশ খানিকটা পিছিয়ে পড়ছে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের একাংশের।
সম্প্রতি সালমান খানকেও দক্ষিণী ছবির বাজার দখল নিয়ে কথা বলতে দেখা গেছে। সালমান মনে করেন, বলিউডে আরও বেশি করে হিরোইজম ছবি করা উচিত। দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রি আসলে সবসময়েই হিরোইজমে বিশ্বাসী। আমরাও কিন্তু তাই। সিনেমা হল থেকে বেরনোর পর দর্শকরা হিরোইজমই খোঁজে বা চায়। বলিউডে এক-দু’জন ছাড়া এরকম সিনেমা কেউ বানায় না। আমাদের উচিত এবার থেকে আরও বেশি করে ‘লার্জার দ্যন লাইফ’ গোছের ‘হিরোইজম’ সিনেমা তৈরি করা। আমি তো সেরকমই সিনেমা করছি কেবল। হ্যাঁ, এটা আলাদা বিষয় যে, অনেকেই মনে করছেন আমি ভীষণ একঘেয়ে হয়ে গিয়েছি। হিরোইজম-এর সঙ্গে দর্শকরা ভাল কানেক্ট করতে পারেন। আর এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
দক্ষিণী সিনেমার প্রশংসা করে এই সুপারস্টার আরও বলেন, সেলিম-জাভেদদের সময়ে এই ধরনের ছবি তৈরি করা হত। তবে এখন দক্ষিণী পরিচালকরা সেটাকে অন্য মাত্রায় পৌঁছে দিয়েছেন। দক্ষিণী সিনেমার অনুরাগীদের সংখ্যা প্রচুর। আর আমিও তো এখন দক্ষিণী ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছি। ওদের ফিল্ম মেকিংয়ের স্টাইলই আলাদা। দক্ষিণী সিনে ইন্ডাস্ট্রির কাহিনীকাররাও ভীষণ পরিশ্রম করতে পারেন। কী সুন্দর কনসেপ্ট ওদের ছবিগুলোর। এমনকী, স্বল্প বাজেটের ছবি তৈরি করলেও দর্শকরা ওদের সিনেমা দেখতে যান।
ভারতীয় সিনেমা বলতে এক সময় ধরে নেয়া হতো বলিউডের কথা। কিন্তু গত কয়েক বছরে এই ধারণা পাল্টে দিয়েছে দক্ষিণ ভারত। বিশেষ করে তামিল, তেলেগু, মালায়ালাম এবং কন্নড় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রি। আঞ্চলিক গণ্ডি পেরিয়ে সারা ভারত সহ বিশ্বের মানুষের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কখনো কখনো বলিউডের চেয়ে বেশি দাপট দেখাচ্ছে দক্ষিণ ভারতের ছবিগুলো। আর এসব সম্ভব হচ্ছে প্রভাস, ধানুশ, দুলকার সালমান, আল্লু অর্জুন, মহেশ বাবু থেকে শুরু করে কন্নড় অভিনেতা যশের পায়ে ভর করে। খোদ বলিউডও এখন এসব অভিনেতাকে তাদের ছবিতে পেতে মরিয়া।
জুমবাংলা নিউজ সবার আগে পেতে Follow করুন জুমবাংলা গুগল নিউজ, জুমবাংলা টুইটার , জুমবাংলা ফেসবুক, জুমবাংলা টেলিগ্রাম এবং সাবস্ক্রাইব করুন জুমবাংলা ইউটিউব চ্যানেলে।